আবারও চাঞ্চল্য ফিরছে শিল্পকলায়
বাংলাদেশের অভিনয়জগতের সবচেয় বড় প্রাণের জায়গাটি হলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। দেশের যত খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পী এখানকার থিয়েটার প্রাঙ্গণ থেকেই বেরিয়েছে
প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
বিনোদন রিপোর্ট
বাংলাদেশের অভিনয়জগতের সবচেয় বড় প্রাণের জায়গাটি হলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। দেশের যত খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পী এখানকার থিয়েটার প্রাঙ্গণ থেকেই বেরিয়েছে। তাই এই প্রাঙ্গণজুড়ে থাকে নাটক, পেইন্টিং, নৃত্য, যাত্রা, শীতকালীন পিঠা উৎসবসহ নানা অনুষ্ঠান উদ্যাপনে সংস্কৃতিকর্মীদের কর্মচাঞ্চল্যে হয়ে ওঠে মুখরিত। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে বেশ অনেকদিন নিষ্প্রাণ ছিল শিল্পকলা একাডেমি। আবার উন্মুক্ত হচ্ছে দেশের প্রধানতম সাংস্কৃতিক চর্চা ও বিকাশকেন্দ্র; বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা ও মহড়াকক্ষ। তবে সেটি সীমিত পরিসরে কড়া নিরাপত্তা ও নজরদারির মধ্যেই থাকছে এখনো। ৭ অক্টোবর এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ৭ অক্টোবর সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জাতীয় নাট্যশালার মূল থিয়েটার হল এবং ১ ও ২ নম্বরকক্ষ নাটক ও মহড়ার জন্য আগামী ১১ অক্টোবর থেকে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। হল ও মহড়াকক্ষ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালার পাশাপাশি বিরাজমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে উক্ত সভায়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানের পর বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার বিভিন্ন কক্ষে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও সেনাসদস্যরা অবস্থান করছেন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে জাতীয় নাট্যশালার ৩টি মিলনায়তন, ৬টি মহড়াকক্ষ, সেমিনারকক্ষ, আর্কাইভকক্ষ সাংস্কৃতিক সংগঠনের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান করা সম্ভব হয়নি। টানা দুই মাস পর ১১ অক্টোবর শিল্পকলা একাডেমির স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু নির্দেশনা অনুসরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সোমবারের যৌথ বৈঠকে।
জাতীয় নাট্যশালার মূল হল, নাটক মঞ্চায়নের জন্য বিবেচ্য নাট্যদলকে ১ শিফটে একটি প্রদর্শনী করার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। মিলনায়তন বরাদ্দ চূড়ান্ত করার সময় বরাদ্দপ্রাপ্ত দলকে অবশ্যই তাদের উপস্থিত সদস্যদের তালিকা সংগঠনের প্যাডে লিখিতভাবে নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের দপ্তরকক্ষে জমা প্রদান করতে হবে। উক্ত তালিকা মিলনায়তন ব্যবহারের নির্ধারিত দিনে সব গেটে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য সরবরাহ করা হবে। জাতীয় নাট্যশালার মূল গেটে দর্শক প্রবেশের জন্য নাটক প্রদর্শনীর ২ ঘণ্টা আগে খুলে দেওয়া হবে। হল বরাদ্দ ব্যতীত জাতীয় নাট্যশালার মূল গেট খোলা হবে না।
জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে যেসব সংগঠন/দল নাটক মঞ্চায়ন করবে ২টি মহড়াকক্ষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে। মিলনায়তন ব্যবহারকারী নাট্যদল মহড়াকক্ষ ব্যবহার করতে না চাইলে অন্যদলকে কেবল নাটকের মহড়ার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে বরাদ্দপ্রাপ্ত দলকে অবশ্যই সদস্যদের তালিকা সংগঠনের নিজস্ব প্যাডে লিখিতভাবে নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের দপ্তরকক্ষে প্রদান করতে হবে।
মূল গেট দিয়ে কেবল বরাদ্দপ্রাপ্ত সংগঠনের সদস্য, মহড়াকক্ষ ব্যবহারকারী সংগঠনের সদস্য, শিল্পকলা একাডেমির স্টাফ, সেনাসদস্য এবং টিকিট/আমন্ত্রণপত্র প্রদর্শনী সাপেক্ষে দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবেন। কোনোক্রমেই টিকিট/আমন্ত্রণপত্র ছাড়া দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবেন না। সাংবাদিকরা অফিস পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে প্রবেশ করতে পারবেন। জাতীয় নাট্যশালার মূল হল ও মহড়াকক্ষ ব্যবহারকারী নাট্যকর্মী, সাংবাদিক ও টিকিট/আমন্ত্রণপত্রধারী দর্শনার্থীদের যানবাহন নির্ধারিত সময়ে নাট্যশালার নিচতলার পার্কিং ব্যতীত অন্য কোথাও পার্কিং করা যাবে না। জাতীয় নাট্যশালার মূল থিয়েটার হল ব্যবহারের জন্য নাট্য-সংগঠনগুলো অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে যুক্ত হয়েছেন সর্বজন প্রশংসিত নাট্যজন ও শিক্ষক সৈয়দ জামিল আহমেদ। এরপর হয়েছে বড় রদবদল। এসেছে রদবদল পরিচালক পদেও।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নামক ভেরিফায়েড ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে এটা জানানো হয়েছে।