শুভ জন্মদিন

নগর বাউল জেমস

গানপাগল জেমস বন্ধুদের নিয়ে ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 'ফিলিংস' নামে একটি ব্যান্ড। শুরু থেকেই গিটার বাজানোয় দারুণ পটু ছিলেন জেমস। আর তার কণ্ঠের মোহ সে তো অদ্বিতীয়। শুধু গানই গাওয়াই নয়, গান লেখার পাশাপাশি সুরও করেন এই মহান শিল্পী

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
জেমস, নাম শুনলেই একটি ছবি ভেসে ওঠে সবার মনে, ভেসে ওঠে এক রকস্টারের অবয়ব। যার গানে বহু রাত নির্ঘুম কেটে যায় হাজারো তরুণের, যে না থাকলে জমে না কোনো উৎসবের আসর, আজ সেই জেমসের জন্মদিন। যার কথা বলছি তিনি দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল নগর বাউলের কর্ণধার এবং ভোকালিস্ট মাহফুজ আনাম। যিনি জেমস নামেই উপমহাদেশে পরিচিত। কিংবদন্তি এই রকস্টার শুধুই জেমস নামে নন, ভক্তদের কাছে তিনি আবার শুধুই গুরু। ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন জেমস। তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। জেমসের বাবা একজন সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় সব সময়ই চাইতেন ছেলে লেখাপড়ায় মনোযোগী হোক। কিন্তু ছেলের ইচ্ছা গায়ক হবেন। অনেকটা পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েই শুরু করলেন সংগীত চর্চা। বাবার সঙ্গে গান নিয়ে অভিমান করে বাড়ি ছাড়েন ছোট কিশোর জেমস। সংগীতের নেশায় ঘর ছেড়ে এক অনিশ্চিত জগতে পাড়ি দেন। চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিংয়ে থাকা শুরু করেন। সেখানে থেকেই তার সংগীতের ক্যারিয়ার শুরু। গানপাগল জেমস বন্ধুদের নিয়ে ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 'ফিলিংস' নামে একটি ব্যান্ড। শুরু থেকেই গিটার বাজানোয় দারুণ পটু ছিলেন জেমস। আর তার কণ্ঠের মোহ সে তো অদ্বিতীয়। শুধু গানই গাওয়াই নয়, গান লেখার পাশাপাশি সুরও করেন এই মহান শিল্পী। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিজের লেখা গানের পাশাপাশি কবি শামসুর রাহমান, প্রিন্স মাহমুদ, সিবলির লেখা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন জেমস। দেশ: দ্য লিডার, সত্তা সিনেমার জন্য গান করে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। প্রথম অ্যালবাম 'স্টেশন রোড' দর্শকের কাছে পৌঁছাতে না পারলেও ১৯৮৮ সালে 'অনন্যা' নামের অ্যালবাম দিয়ে সুপারহিট হয়ে যান ঝাঁকড়া চুলের সেই স্বপ্নচারী ছেলেটা। পরবর্তীতে 'ফিলিংস' ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে রাখেন নগর বাউল। নব্বইয়ের বিখ্যাত সব গান। সুপারহিট সেই গানগুলো আজও মুগ্ধতা ছড়ায় চারপাশে। জেমসের গানের জনপ্রিয়তা শুধু দেশে নয়, পৌঁছেছে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও। ক্যারিয়ারের সেরা সময় শুরু হয় বলিউডে আত্মপ্রকাশ করার পর। জেমসের গাওয়া একক অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে- অনন্যা (১৯৮৮), পালাবি কোথায় (১৯৯৫), দুঃখিনী দুঃখ করো না (১৯৯৭), ঠিক আছে বন্ধু (১৯৯৯), আমি তোমাদেরই লোক (২০০৩), জনতা এক্সপ্রেস (২০০৫), তুফান (২০০৬), কাল যমুনা (২০০৯)। ২০০৪ সালে কলকাতার সংগীত পরিচালক প্রিতমের সঙ্গে গান নিয়ে কাজ করেন জেমস। ২০০৫ সালে বলিউডে গ্যাংস্টার চলচ্চিত্রে পেস্নব্যাক করেন। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া ভিগি ভিগি গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় এবং এক মাসেরও বেশি সময় গানটি বলিউড টপচার্টের শীর্ষে ছিল। গায়ক জেমসের জনপ্রিয়তা দেখে যেতে পারেনি তার বাবা-মা। ব্যথিত হৃদয়ে শতবার তাই গানের মধ্য দিয়েই শিল্পী খুঁজেছেন তার প্রিয়জনদের। গায়কের গাওয়া 'মা' ও 'বাবা' শিরোনামের গান দুটি তারই প্রমাণ। অপূর্ণতার চাদরে মোড়ানো জেমস নিজেকে আড়ালে রাখতেই ভালোবাসেন। জেমসের গাওয়া সেরা ১০ গান এর মধ্যে বাংলাদেশ, জেল থেকে আমি বলছি, মা, দুখিনী দুঃখ করো না, লেইস ফিতা লেইস, বাবা কত দিন, বিজলী, দুষ্টু ছেলের দল, মিরাবাঈ, পাগলা হাওয়া, গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া উলেস্নখযোগ্য।