ঢালিউডের অন্যতম সফল চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। একসময় তার নতুন সিনেমা মুক্তির সময় দর্শকে পূর্ণ থাকত প্রেক্ষাগৃহ। ১৯৭৭ সালে 'বসুন্ধরা' চলচ্চিত্র দিয়ে নায়ক হিসেবে আগমন ঘটে এই নন্দিত অভিনেতার। ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন তখনকার মোস্ট গস্ন্যামারাস নায়িকা ববিতা। দীর্ঘদিনের গোপন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফাঁস করলেন নব্বইয়ের দশকের ঢালিউডের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ভক্তদের সঙ্গে নিজের বেশ কটি গোপন তথ্য শেয়ার করেন অভিনেতা। প্রথমেই ইলিয়াস কাঞ্চন ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ব্যস্ততার কারণে অনেক দিন ধরে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি না, ভালো লাগছিল না। আগামীকাল যেহেতু ছুটির দিন, তাই বৃহস্পতিবার দেরি করে ঘুমালেও ক্ষতি নেই। তাই ফেসবুক লাইভে চলে আসলাম।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, 'আমি আমার জীবনের কিছু মজার ঘটনা ও দুর্বলতা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব, যার মধ্যে অন্যতম একটি আমার আঙুল। ছোটবেলায় আমার দুটো আঙুল পুড়ে গিয়েছিল। কিন্তু শুধু পুড়ে যাওয়ার কারণে আমার আঙুল দুটোর এত ক্ষতি হয়নি। এর পেছনে রয়েছে আরেকটি কারণ।'
ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, 'আমার বাবা-চাচারা সাত ভাই ছিলেন। আমার বাবা ছিলেন চার নম্বর। আমি তখন হামাগুড়ি দিয়ে চলি। তখন বাবার ৫ নম্বর ভাই বিয়ে করেন। আমার মা, বাবা-চাচাদের কাছে শুনি, সে সময় গরম চুলায় আমি হাত দিয়ে দুটি আঙুল পুড়িয়ে ফেলেছিলাম। তখন ঘরে এসেছে বাবার ভাইয়ের নতুন বউ। তিনি বড় ঘোমটা পরে বাড়িতে হাঁটতেন। একদিন আমি পোড়া আঙুল দিয়ে হামাগুড়ি দিচ্ছিলাম আর উনিও বড় ঘোমটা দিয়ে হাঁটছিলেন। তারপর যা হলো তার পা আমার পোড়া আঙুলের মধ্যে পড়ল। এতে আমার আঙুল দুটো আরও থেঁতলে গেল। বড়রা বলেছিল, ওই সময় চাচির পায়ের চাপা খাওয়ায় আমার পোড়া নরম আঙুল চাচির পায়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ লেগেছিল। এরপর থেকেই এ খুঁত সিঙ্গে নিয়েই আমি বড় হয়েছি।' অভিনেতা হিসেবে সিনেমার ক্যারিয়ার প্রসঙ্গে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, 'অল্প বয়সে যখন নায়ক ছিলাম, তখন অনেক সতর্ক হয়ে কাজ করেছি। যেন পর্দায় আমার এ দুর্বলতা কখনো দেখা না যায়। তবে এখন আমি সে গোপন কথাটা বলছি। কারণ এখন তো আর আমি
নায়ক নই।'
এরপর একটু হেসেই ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, 'শুনেছি বলিউডের জনপ্রিয় হৃতিক রোশনেরও আঙুলের সমস্যা রয়েছে। তার এক হাতে ৫ আঙুলের জায়গায় ৬ আঙুল। তিনিও পর্দায় এ সমস্যা ভক্তদের কাছে আড়াল করেন সতর্কভাবেই। কারণ ভক্তরা নায়কদের পারফেক্ট দেখতেই অভ্যস্ত। নায়কের দুর্বলতা তাদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে এতদিন পরে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নিজের এ দুর্বলতা আমি শেয়ার করলাম, কারণ এখন না বললে হয়তো কখনোই আর এ মজার ঘটনা কিংবা নিজের দুর্বলতা বলা হবে না।'
ফেসবুক লাইভে গ্রাম্যজীবনে বেড়ে ওঠা আরও অনেক অভিজ্ঞতার কথাও ইলিয়াস কাঞ্চন ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেন। জীবনে অনেকবারই মৃতু্যর মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরম করুণাময় আলস্নাহর কৃপায় বেঁচে গেছেন এমন রোমাঞ্চকর ঘটনাও ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেন গুণী এ শিল্পী।