যার গায়কিতে মুগ্ধ হয় আট থেকে আশি, তিনি নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি। সিডি ক্যাসেটের যুগে দাপটের সঙ্গে নিজস্ব গায়কি দিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। সেই পুরস্কার পাওয়ার তেরো বছর পর এবার ওই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রিয় এই গায়িকা।
প্রতিক্রিয়ায় ভীষণ সম্মানিত বোধ করছেন জানিয়ে ন্যান্ি্স গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমি কখনো ভাবিনি যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডে থাকব। শুধু এটা কেন, আমি কখনোই এ রকম করে কিছু ভাবি না। আমি যা পেয়েছি তা নিয়েই বেশ সন্তুষ্ট। তবে ভালো লাগছে, অনেক আনন্দ লাগছে আমাকে এভাবে সম্মানিত করায়। আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করব।' দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'মাত্রই ঘোষণা এলো। যেহেতু আমি এখানে নতুন, এখানে জানা-বোঝারও বিষয় আছে। এটার কার্যক্রম কী বা কীভাবে কী করতে হয় সে বিষয়ে তো আমি এখনো কিছুই জানি না। এখনো আমাদের নিয়ে কোনো সভা হয়নি। মিটিং হওয়ার পর হয়তো বুঝতে পারব এটার সিস্টেম কী, কীভাবে পরিচালনা হয় কিংবা এখানে নিজের কতটা বলার সুযোগ
আছে। এখানে তো শুধু আমি একা নই আরও অনেকজনই আছেন।
সবার মতামতের ভিত্তিতেই হয়তো একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হব আমরা। যেটা আমার কাছে সঠিক মনে হবে সেটাই করব।'
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে প্রতিবছরই নানা বিতর্ক তৈরি হতে দেখা যায়। এই বিতর্ক এড়াতে আপনার কোনো পদক্ষেপ থাকবে কি না এমন প্রশ্নে এই গায়িকার ভাষ্য, 'বিগত বছরে যেসব পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর কোনোটাই তো সঠিক হয়নি। এটা তো সত্য। এসব নিয়ে আমি আগেও কথা বলেছি। তখন হয়তো কেউ গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি কিন্তু এখন হয়তো গুরুত্বের সঙ্গে নেবে। আর আমাকে দেওয়া কী, আমাকে তো সিনেমায় গানই করতে দেওয়া হয়নি। তারপর বলা হতো আমার গান জুরি বোর্ডে দেওয়া যাবে না। আমাকে দেওয়া হয়নি সেটা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই কিন্তু যাদেরই দিচ্ছে সঠিকভাবে দিক। আমি যেহেতু গানের মানুষ, গান নিয়ে হয়তো ভালো বলতে পারব, অভিনয় নিয়ে বলতে পারব না। এমন এমন গানের জন্য পুরস্কার দেওয়া হতো যেসব গান শুনিইনি কখনো। গানই তো আমার নেশা এবং পেশা। সারাক্ষণ গান নিয়েই থাকি। আমার সমসাময়িক কিংবা সহকর্মীদের কার কবে কি গান বের হলো, কেমন হলো সবকিছুই তো দেখি, খেয়াল রাখি। তার মধ্যে যে গানটা পুরস্কার পাচ্ছে, সেটা সম্পর্কে আমি জানি না। কোন গানটা আমার চোখ এড়িয়ে গেল, যেটা আসলে চোখ এড়ানোর মতো। চোখ এড়ানোর মতো একটা গান কীভাবে পুরস্কার পায়? আমার কাছে মনে হয়, এই সিস্টেমটা পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন।'
তিনি আরও বলেন, 'বিগত ১০ বারো বছরে এই জায়গাটার অবস্থা একদম যা-তা ছিল। আমাকে রেখে হোক কিংবা অন্য কাউকে দিয়ে হোক এবং যে মানুষটা ঠিক করতে চায় এ রকম মনমানসিকতার কাউকেই রাখা উচিত এবং এই জায়গাটা ঠিক হওয়া উচিত। আমাকে এই জায়গাতে রাখায় অনেক সম্মানিত বোধ করছি। এক বছরের জন্য হলেও এটা আমার কাছে অনেক।'
সবশেষে তিনি মনে করিয়ে দিলেন এই মূল্যায়নটা করা হবে ২০২৩ সালের জন্য। সেই সঙ্গে এও বললেন, যে কোনো বিষয়ে যেন জবাবদিহি চাওয়া হয়। ন্যান্সি বললেন, 'কবে নাগাদ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের প্রজ্ঞাপন দেওয়া হবে সেটা তো আমি এখনো জানি না। তবে এটুকু বলে রাখি, প্রজ্ঞাপন দেওয়ার পর সেসব নিয়ে আপনারা অবশ্যই প্রশ্ন করবেন, জবাবদিহি চাইবেন। সেটা আমার কাছেই হোক বা এখানের অন্য কারও কাছে। সেসব তালিকা দেখার পর যদি কোনো প্রশ্ন আসে, অবশ্যই আপনারা প্রশ্ন ছুড়বেন। সেটা যে কোনো বিভাগেই হোক না কেন।'