অনৈতিক প্রস্তাব প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ঋতাভরী
প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিনোদন ডেস্ক
মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মরত নারীদের সুরক্ষায় 'হেমা কমিটি' রিপোর্ট নাড়িয়ে দিয়েছে টালিউড ইন্ডাস্ট্রিকে। এর পরই যৌন হেনস্তা ইসু্যতে একের পর এক অভিনেত্রী তুলছেন বিস্ফোরক অভিযোগ। কলকাতার অনেক অভিনেত্রী এখন পর্যন্ত নিজ নিজ তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে কেরালা সরকার। সেই সঙ্গে হেমা কমিটির মতো টালিউডেও এমন একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন এই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। বলেছেন অতীতের এক তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাও।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যৌন হেনস্তা, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও অভিযুক্তদের বিচারে কমিটি গঠনের বিষয়ে কথা বলেন ঋতাভরী। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন ঋতাভরী। উদ্দেশ্য ছিল নারী হেনস্তার তদন্তের স্বার্থে একটা কমিটি গঠন।
সাক্ষাৎকারে সেই প্রশ্ন উঠতেই অভিনেত্রী বলেন, 'প্রথমে আরজি করের ঘটনা নিয়ে রোজই পোস্ট করছিলাম। মানুষও এত রেগে ছিল যে প্রায় সব পুরুষের ওপরই ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছিল। যারা মোমবাতি জ্বালিয়েছে, মিছিলে হাঁটছে, তাদের মধ্যে এমন অনেক মুখ রয়েছে, যাদের ব্যক্তিগতভাবে জানি, যে তারা টলিউডে মেয়েদের কোন চোখে দেখে, কী ব্যবহার করে! তখনই কাকতালীয়ভাবে হেমা কমিটির রিপোর্টটা বের হয়। আমার সঙ্গে ওখানে তখন মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পুরো ইউনিট কাজ করছিল। ওরা কাছ থেকে সবটা দেখেছে। আমি আমার সহ-অভিনেতার থেকে বিষয়টা বুঝি। আই ওয়াজ ভেরি ইমপ্রেসড উইথ দ্য হেমা কমিটি রিপোর্ট। বড় বড় অভিনেতাকে রিজাইন করতে বাধ্য করা হয়েছে, তারা কিন্তু বেশ সরকার ঘনিষ্ঠ। সেটা বড় পদক্ষেপ। এই ঘটনাটা আর শহরের এই আন্দোলন আমাকে আত্মবিশ্বাস-সাহস জোগায়। যেটা আমি শেষ আট-দশ বছরে পাইনি। এরা যদি এক হয়ে প্রতিবাদ করতে পারে, আমরা কেন পারব না! হেমা কমিটির রিপোর্ট যখন বেরিয়েছে এই সময়ে, তখনই আমার মনে হয়, আমাদের এটা নিয়ে এগোতে হবে। নাউ অউর নেভার। তাই আমি সিএমকে ট্যাগ করেছিলাম। ওদের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে এই ধরনের যৌন হেনস্তার তদন্ত হয়েছিল। আমরা যতই দল বেঁধে প্রতিবাদ করি, সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখি, এগুলো অপরাধ। তাই এগুলোর বিরুদ্ধে ফরমাল ইনভেস্টিগেশন হওয়া দরকার।'
এর আগে নিজের এক পোস্টে টালিউডকে 'সুগার কোটেড ব্রথেল' বলেও উলেস্নখ করেন ঋতাভরী। সেই প্রসঙ্গ উঠতেই অভিনেত্রী বলেন, 'ঠিকই মারাত্মক কথা, কিন্তু সত্যি। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলেছি। নিজেও অনেক বছর এটা বিশ্বাস করতে চাইনি। ভালোটাই দেখতে চেয়েছি। সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই হয়েছিল, 'ওগো বধূ সুন্দরী'র পর। যখন আমার কুড়ি-একুশ বছর বয়স। যখন আমি প্রতিষ্ঠিত নই, শুধুই পরিচিত মুখ। এমন পরিচিত মুখের বিপদ সবচেয়ে বেশি। সবাই টার্গেট করতে শুরু করে তাকে। এটা যেন নর্ম ধরে নিয়েছে, যে কাজ পেতে গেলে আপস করতে হবে। সবাই যে সরাসরি বিছানায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয়, তা নয়। একজন বড় অভিনেতা এক ব্যক্তির মাধ্যমে আমাকে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রস্তাব দেন এবং আমি তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। সেই বিষয়ে একজন সিনিয়র জার্নালিস্টের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলাম। সেই জার্নালিস্ট আমাকে বলেছিলেন যে, 'এত বড় সুযোগ হাতছাড়া করলে! ইন্ডাস্ট্রিতে থাকতে গেলে এটুকু তো মেনে নিতেই হবে। ওই রকম একটা মানুষ তোমাকে কাছে পেতে চাইছে!' এমন শিক্ষিত মানুষের কাছে এটা আমি আশা করিনি। বলেই দিয়েছিলাম, এসব আমি পারব না। উনি বলেছিলেন, 'তাহলে তুমি কবিতা লেখো, অভিনয় করে কাজ নেই।' এটা আমার কাছে খুব হতাশাজনক ছিল।' ঋতাভরীকে সামনে দেখা যাবে 'বহুরুপী' সিনেমায়। এতে তার সঙ্গে অভিনয় করেছেন আবির চ্যাটার্জি। সিনেমাটি দুর্গা পূজায় মুক্তি পাবে। এর মাধ্যমে আবিরের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো জুটি বাঁধছেন
ঋতাভরী। এর আগে দুজনকে 'ফাটাফাটি' চলচ্চিত্রে দেখা
গেছে।