আজকের যায়যায়দিন

'চাঁদনী'খ্যাত ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা নাঈম। এখন আর সিনেমায় দেখা যায় না। ৯০ দশকের শুরুতেই খ্যাতিমান নির্মাতা এহতেশামের হাত ধরে চলচ্চিত্রে এসে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিলেন। নবাব বংশের সন্তান তিনি। পুরো নাম খাজা নাঈম মুরাদ। 'চাঁদনী' দিয়ে যাত্রা শুরু করে সহ-অভিনেত্রী শাবনাজকে সঙ্গে নিয়ে চলচ্চিত্রজগৎ জয় করেছিলেন তিনি। প্রথম ছবির সাফল্যের পর একাধারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেন নাঈম। একসময় প্রেম করে বিয়ে করেন শাবনাজকে। পিতা হন দুই কন্যাসন্তানের। তারপর ধীরে ধীরে সরে যান অভিনয় থেকে। সিনেমায় না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ঢাকার নবাব সলিমুলস্নাহ খানের বংশধর চিত্রনায়ক নাঈম মুরাদ।

সম্প্রতি পাকিস্তানের জাতির পিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ৭৬তম মৃতু্যবার্ষিকী পালন করা হয়েছে ঢাকায়। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন ঢালিউড অভিনেতা নাঈম। ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন এ অভিনেতা।

গত বুধবার নবাব সলিমুলস্নাহ একাডেমির ব্যানারে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে পাকিস্তানের জাতির জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃতু্যবার্ষিকী পালন করা হয়। আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলোচনা সভার পাশাপাশি উর্দু গান-কবিতা পরিবেশন করা হয়। নবাব সলিমুলস্নাহ একাডেমি আয়োজিত সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। এতে তিনি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর জন্ম থেকে মৃতু্য পর্যন্ত জীবনের নানা ঘটনা বর্ণনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের ডেপুটি হাইকমিশনার কামরান ধাঙ্গাল উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এ অনুষ্ঠানের খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ভক্তদের স্পষ্ট ধারণা দিতে ফেসবুকে পোস্ট দেন অভিনেতা নাঈম।

নায়ক নাঈম ঢাকার নবাব পরিবার খাজা সলিমুলস্নাহর বংশধর। ফেসবুকে জিন্নাহর মৃতু্যবার্ষিকী পালনের একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। ছবির ক্যাপশনে নাঈম লিখেছেন, ঢাকার নবাব পরিবার এটি সাপোর্ট করে না।

অভিনেতা রাজীববিহীন দুই দশক

নাঈম বলেন, 'আমি খাজা নাঈম মুরাদ নবাব সলিমুলস্নাহর প্রৌপুত্র এবং গর্বিত বাংলাদেশি নাগরিক। আমি এমন কোনো গোষ্ঠী বা কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত নই, যা আমাদের জাতীয় পরিচয় বা ইতিহাসকে ক্ষুণ্ন করে।' তিনি আরও বলেন, 'নবাব সলিমুলস্নাহ একাডেমির সঙ্গে আমাদের ঢাকা নবাব পরিবারের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এদের প্রচারিত মূল্যবোধের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান করি।' মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ অভিনেতা বলেন, '১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানের প্রতি যেকোনো কর্মকান্ড, যা জনসাধারণের আশা এবং মূল্যবোধের বিরোধিতা করে আমি তা সমর্থন করি না। আমি বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার এবং তাদের স্বার্থের প্রতি দৃঢভাবে অবস্থান করি।'

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'নবাব সলিমুলস্নাহ বড় একটা ফ্যাক্ট। এই নাম দিয়ে অনেকে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের পরিবার এই সংগঠন সম্পর্কে স্পষ্ট জানেই না।'

ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিনেতা বলেন, 'নবাব সলিমুলস্নাহ একাডেমির ব্যানারে যারা এটা করেছেন, তারা কেবল তাদের স্বার্থ রক্ষায় করেছেন। আমাদের নবাব পরিবারের সঙ্গে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা এটা প্রত্যাশা করি না। যারা করেছেন, তারা অন্যায় করেছেন। আমি অনুরোধ করব, আমাদের নাম নিয়ে এ ধরনের কর্মকান্ড করলে তা আমরা কঠোরভাবে প্রতিহত করব।'