সালমান শাহ নেই ২৮ বছর। তবুও এখনো টিভি পর্দায় তার অভিনীত সিনেমা প্রচার হলে দর্শক দেখেন আগ্রহ নিয়ে। আফসোসের সুরে বলেন, ইশ, আরও কয়েক বছর যদি বেশি বাঁচতেন, কতই না ভালো হতো! সাধারণ মানুষের মতো তার সহশিল্পী-নিকটজনরাও অকাল প্রয়াত এই চিত্রনায়ককে মিস করেন। হয়ে পড়েন স্মৃতিকাতর। ৬ সেপ্টেম্বর নায়কের প্রয়াণ দিবসেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। স্মৃতিচারণা করেছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী।
গণমাধ্যমে তিনি বলেন, সালমান আমার এমন বন্ধু ছিল যাকে কোনোদিনই ভোলা সম্ভব নয়। সে আমার প্রথম সিনেমার নায়ক। এখনো তাকে খুব মিস করি। সালমান বেঁচে থাকলে হয়তো আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটা আরও সুন্দর হতো।
মৌসুমী আরও বলেন, সালমান যেদিন মারা যায়, তার মৃতু্য সংবাদটা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমি, সানী আর গুলজার ভাই একসঙ্গে তাকে শেষ দেখা দেখতে গিয়েছিলাম। এমন একজন নায়ককে হারিয়ে পুরো ইন্ডাস্ট্রি সেদিন থমকে গিয়েছিল। বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম সবাই।
শুটিং সেটে মৌসুমীর মন খারাপ থাকলে অস্বস্তিতে পড়তেন সালমান। তা উলেস্নখ করে মৌসুমী বলেন, 'সালমান আমি যেন সেই আর্বিভাবের দিনেই ফিরে যাই। আমি যত শান্ত-চুপচাপ তার বিপরীতে সে দুরন্ত। আমার মন খারাপে সে অস্বস্তিতে থাকত আবার তার মন খারাপ থাকলে আমার কষ্ট লাগত। এই বিষয়গুলো সব যে প্রকাশের ছিল তা-ও না। এমনিতেই এমন হতো। কিন্তু এই আন্তরিকতা আর ভালোবাসা কোনো কিছুর ঊর্ধ্বে ছিল। এভাবেই চলল প্রায় তিনটা বছর। মাঝখানে কত কিছু হলেও 'দেনমোহর'-এর শুটিংয়ের সময় দুজনের মন খুব ভারী থাকত। একদিন সেটে বসে সফি বিক্রমপুরী তো বলেই ফেললেন, 'আমরা আর মৌসুমী সালমানকে পাচ্ছি না। চলচ্চিত্র শিল্প যে কত সুন্দর একটা ক্লাসিক্যাল জুটিকে হারাচ্ছে তা কল্পনাও করতে পারবে না মানুষ। উত্তম-সুচিত্রা হওয়ার পথে কাঁটা হয়ে থাকবে এই বিচ্ছেদ।' আমি কথাটা সে দিন খেয়াল না করলেও এখন মনে পড়লে অজানা দুঃখে চোখ ভাসে।' সব শেষে চিত্রনায়িকা বলেন, আজও তার ভক্তরা তাকে খুব মিস করে। এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে সালমান শাহ ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন। সেগুলোর প্রায় সবই ছিল ব্যবসাসফল। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত', 'অন্তরে অন্তরে', 'সুজন সখী', 'স্বপ্নের ঠিকানা', 'এই ঘর এই সংসার', 'সত্যের মৃতু্য নেই', 'জীবন সংসার', 'মায়ের অধিকার', 'আনন্দ অশ্রম্ন' উলেস্নখযোগ্য।