সা ক্ষা ৎ কা র

২০০ বছর আগেই লালন ধর্মনিরপেক্ষ দেশ চেয়েছেন

দেশের প্রখ্যাত বাউল সঙ্গীতশিল্পী শফি মন্ডল। বাংলা লোকসঙ্গীতের জনপ্রিয় শিল্পী। বিশেষ করে লালন সঙ্গীত সাধনায় তার নাম শুরুর দিকেই উচ্চারিত হয়। চলচ্চিত্রেও তার গানের লোকঘরানা দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধ করে। স্টেজ শোতে তার গেরুয়া বসন আর গায়কী ঢং আকৃষ্ট করে। এ শিল্পীর বর্তমান ব্যস্ততাসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা হয়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসুম বিলস্নাহ্‌ রাকিব।

প্রকাশ | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বর্তমান ব্যস্ততা কি নিয়ে? বর্তমান ব্যস্ততা তো গান নিয়ে। গান করছি, গানের সুর করছি। কারণ গান-বাজনাই তো করি আর তো কিছু করি না। এখন বয়সও বেড়েছে তাই আগের মতো চাইলেও গান করতে পারি না। তবুও গানের মাঝেই থাকতে চাই এবং গানের মাঝেই আছি। আপনার কণ্ঠে নতুন গানের খবর কী? আমার তো নতুন গান প্রতি সাপ্তহেই বাজারে আসছে। আগে তো পাঁচ-সাতটা গান মিলিয়ে অ্যালবাম হতো এখন তো আর সেটা নেই। এখন একটা গানেই অ্যালবাম হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ছে- বিষয়টি কেমন লাগছে? খুবই ভালো লাগার বিষয়। মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে এটাই তো স্বাভাবিক। বন্যার্তদের পাশে আমরাও দাঁড়িয়েছি। বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য টেলিভিশনে গান করেছি। যার পুরো পারিশ্রমিক বন্যার্তদের জন্য দিয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় বন্যার্তদের জন্য কনসার্ট হচ্ছে সেখান থেকে ডাক আসছে খুশি মনে সেখানে যাচ্ছি। আমরা অর্থনৈতিকভাবে সরাসরি সহযোগিতা করতে না পারলেও এভাবে সহযোগিতা করছি। অনেক শিল্পী তো কাজহীন হয়ে পড়েছে? এখন তো দেশে অস্থিতিশীল অবস্থায় আছে। পরিত্রাণ বলতে ভালো কিছু আশা করছি আমরা। সঙ্গীতে আগামী দিনগুলো কেমন যাবে তা বুঝা খুব কষ্ট। তবে আমার মনে হয় পূর্বের চাইতে বর্তমানে যারা আসছে তারা সঙ্গীতকে ভালো চোখেই দেখবে। কারণ সঙ্গীত হলো জাতীর মেরুদন্ড। একটা দেশের মেরুদন্ড মিউজিক। তারা এটুকু মাথায় রেখেই সঙ্গীতের উন্নয়নে কাজ করবে বলে আশা করি। আর যদি না করে তাহলে এ সেক্টর ভেঙে পড়বে। সঙ্গীত ভেঙে পড়লে দেশও ভেঙে পড়বে। সঙ্গীতকে কীভাবে আরও এগিয়ে নেয়া যায়? সঙ্গীত শুধু বিনোদন নয়। সঙ্গীত সমাজ, জাতি, দেশ পরিবর্তনের একটা হাতিয়ারও বটে। তা যুগে যুগে সেটা প্রমাণ হয়েছে। যুগে যুগে যত মনীষীরা জন্ম নিয়েছেন তারা সবাই সঙ্গীতের দিকেই ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে লালন ফকির, কাজী নজরুল ইসলাম সবাই চেতনামূলক গান করেছেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন সঙ্গীত দিয়েই হয়েছে। তাই সঙ্গীত একটা বড় হাতিয়ার দেশ পরিবর্তনের। কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান? সেই দুইশ বছর আগেই লালন ফকির চেয়েছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হবে। যেদিন হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ভেদাভেদ নাহি রবে। এমন সমাজ কবে রচিত হবে। এমনি একটা সমাজ আমরা চাই। ২০০ বছর আগে সেই মহাজনের লেখা এ সমাজে আমাদের পরিচয় হবে আমরা বাঙালি। আর আমরা মানুষ হিসেবে ভালো থাকতে চাই। আগামী প্রজন্ম যারা আসবে তারা দেশটাকে আরও ভালো করবে। তারা সুন্দর করে সাজিয়ে নিবে দেশটাকে এটাই আশা করি।