গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি ব্যাপক খারাপ হয়ে গেছে। দেশের প্রায় ১৫টি জেলায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ছে। বলা হচ্ছে বাংলাদেশের বন্যা নিয়ে বেশ খুশি ভারত। একদিকে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ ধুঁকছে আরেকদিকে, তা নিয়েই তামাশা করছে ভারতীয় জনগণের একাংশ। ভারতীয়দের এমন আচরণে তীব্র প্রতিবাদমুখর হয়েছেন সে দেশেরই জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শ্রীলেখা মিত্র।
এর আগেও বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বেশ সরব ছিলেন টালিউড অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। ফেসবুকে সেটা নিয়ে দিয়েছেন পোস্ট। দিয়েছেন বিবৃতি। আবার গণভবনের হরিলুট নিয়েও হয়েছেন হতাশ। এবার বন্যার জন্যও এ দেশের পাশে দাঁড়িয়ে গেলেন অন্য ভারতীয়দের বিপক্ষে! এ দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে দেখা গেল এই অভিনেত্রীকে। তবে অভিনেত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাদা করে কথা না বললেও বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন।
'অনির্বাণ স্পিকস' নামক এক আইডি থেকে বন্যাসংক্রান্ত ওই পোস্টে লেখা ছিল- ' বন্ধুরা, বাংলাদেশকে বার্তা দিন। সব বয়সের মানুষ পানিতে ডুবে যাচ্ছে, ঘরবাড়ি ভেসে গেছে, জনপদ পানিতে ডুবে গেছে। আবার কবে ডাঙা দেখা যাবে, সেই অপেক্ষায় অস্বাস্থ্যকর ঘিঞ্জি জায়গায় রয়েছেন সবাই। নবজাতকের কান্না ও প্রবীণের হা-হুতাশকে একটু জড়িয়ে ধরুন, পিস্নজ। নদীমাতৃক বাংলায় স্থলভূমি দেখা যাচ্ছে না, পর্যাপ্ত রসদ নেই। জল বাড়ছে আরও। আমি জানি বাংলাদেশ এই সমস্ত দুরূহ প্রতিকূলতা অতিক্রম করে হৈহৈ আনন্দে উঠে দাঁড়াবে। কিন্তু এখন প্রকৃতির সঙ্গে অসম যুদ্ধে ওদের লড়াকু মনোভাবে আলো জ্বেলে দিন। আমাদের মেয়ের জন্য সুবিচার চেয়েছে ওরা, ওদের প্রতি আমাদেরও তো দায় আছে। সে কথা ভুলে যাব আমরা?'
এরপর শুক্রবার নিজের ফেসবুকে পোস্টটি শেয়ার করে শ্রীলেখা লেখেন- 'বাংলাদেশ'। পাশে একটি লাভ ইমোজি দেন অভিনেত্রী। তবে শ্রীলেখার পোস্ট ঘিরে নেটিজেনরা যেমন ব্যথিত হয়েছেন, তেমনই বড় একটি অংশ 'হাহা' প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। জবাবে লেখেন, 'বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি দেখে এদের হাসি পেয়েছে। কর্ম ভাই মনে রেখ, তোমার প্রয়োজনেও কাউকে পাশে পাবে না।'
উলেস্নখ্য, টালিউড ইন্ডাস্ট্রির অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র বরাবরই আলোচনায় থাকেন। তার ঠোঁটকাটা স্বভাবের কারণে ক্যারিয়ার, ব্যক্তিজীবন এবং সমসাময়িক বিভিন্ন ইসু্য নিয়ে কথা বলেই মূলত চর্চায় থাকেন তিনি।
এছাড়া বাংলাদেশে বহুবার এসেছেন তিনি। মাদারীপুরের ঘটমাঝি গ্রামে তার পূর্বপুরুষদের বসতভিটা ছিল। সে জন্য বাংলাদেশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব থাকেন তিনি। এবার ঘটে যাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অত্যন্ত সজাগ ছিলেন তিনি। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অত্যন্ত অমানবিক হত্যালীলায় প্রতিবাদমুখর ছিলেন। 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'-এর ব্যানারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে বরাবরই সরব ছিলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করে নিজের অবস্থানও নিশ্চিত করেছেন। তবে বাংলাদেশে হাসিনার পতনের পর মুখ খুলেছেন তিনি। ৬ আগস্ট ফেসবুকে একটি ছবি শেয়ার করে শ্রীলেখা লিখেছেন, 'ছাত্ররা আগামীর স্বপ্ন দেখে, ধ্বংস করে না।'
তবে দুষ্কৃতকারীরা এহেন পরিস্থিতিতে ছাত্রদের এই সুনাম যেন ধ্বংস করে না দেয়, সে জন্যও ছাত্রদের সজাগ থাকতে বলেছেন। যাতে একটি অংশ দুষ্কর্ম করে সেটা ছাত্র আন্দোলনের ওপর চালিয়ে দিতে না পারে। সেজন্য তিনি তার শেয়ার করা ছবিতে লিখেছিলেন, 'আপনারা আশপাশের মন্দির-গির্জার খেয়াল রাখুন। কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ছাত্ররা বুলেটের সামনে বুক পেতে দেয়নি।'