নির্বাচনে নিপুণকে জয়ী করতে শেখ সেলিমের ১৭ বার ফোন

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রাথমিক ভোট গণনায় জায়েদ খান জয়ী হন। তবে সেই ফলাফল মেনে নেননি পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তার। দ্বারস্থ হন আদালতের। পরে আদালতের নির্দেশে তিনি বসেন শিল্পী সমিতির চেয়ারে। নির্বাচনে হেরেও নিপুণ কীভাবে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসলেন, তা নিয়ে সে সময় বিস্তর আলাপ-আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি। ছিলেন কুলুপ এঁটে। সরকার পতনের পর এবার সেই নীরবতা ভাঙতে শুরু করেছেন অনেকে। যাদের একজন পীরজাদা হারুন। যিনি ওই নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে নিপুণকে জয়ী দেখাতে অনেক ওপর থেকে এক ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ একের পর এক ফোন করতে থাকেন। তিনি সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ প্রায় সব মন্ত্রণালয়ে সরাসরি প্রভাব খাটাতেন, নিয়ন্ত্রণ করতেন বলা যায়। তিনি নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমি সরাসরি 'না' বলে দিই। এর আগে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার থাকাকালে একবার উপজেলা নির্বাচনে ওই নেতার শ্যালকের জন্য আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছিলেন। সে অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানতেন যে আমাকে কেনা যাবে না। এ জন্য আমি বারবার সরকারি চাকরিতে পদবঞ্চিত হয়েছি। হারুন আরও বলেন, একের পর এক ফোনে আমাকে ভয় দেখানো হয় যে তুলে নিয়ে যাবে। এখন যে আয়নাঘরের কথা শুনছি, তখন সে রকম কোনো আয়নাঘরের কথা শোনা থাকলে হয়তো সৎ থাকা সম্ভব হতো না। সেই রকম ভয় দেখানো হয়েছিল। পরে একটা জায়গায় যেতে বলেন, যেখানে বড় অঙ্কের টাকা রাখা ছিল। যখন রাজি হলাম না, তখন ফলাফল নিয়ে মামলা করা হলো। সেটা চলে গেল কোর্টে। তখন নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমাকে বানিয়ে দেওয়া হলো অন্য একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। নানান কান্ডে আমাকে ছোট করা হলো, এফডিসিতে নিষিদ্ধ করা হলো। শিল্পী সমিতির সেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যুক্ত আরেকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের নির্বাচন কমিশনারদের একের পর এক ভয়ভীতি দেখিয়ে গালিগালাজ করা হয়। বলা হয় যে পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে যাবে। এমন লেভেল থেকে ফোন আসবে, ভাবতেই পারিনি। আমাদের একজনকে সেই সময় নিপুণকে জয়ী করাতে ১৭ বার ফোন করেন শেখ সেলিম সাহেব, তার মতো লোক। এটা আমাদের অবাক করেছিল। এর পর ২০২৪-২৬ সালের নির্বাচন হয় গত ১৯ এপ্রিল, সেই নির্বাচনে হেরে যান নিপুণ। সভাপতি পদে জয়ী হন মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ডিপজল। সেদিন রাতেই বিজয়ীদের ফুলের মালা দেন নিপুণ। কিন্তু ২৫ দিন পরই মত পরিবর্তন করে নির্বাচিত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ পুরো কমিটির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নিপুণ। তবে বেশি সুবিধা করতে পারেননি। নিপুণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ সেলিমের সখ্যতা চোখে পড়েছে একাধিকবার। তিনি নিপুণের পার্লারও উদ্বোধন করেছিলেন।