ভিন্ন মতাবলম্বী হওয়ায় ভারতের ভিসা পাননি বাঁধন। তার ওপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকেই সরব ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ছাত্রদের হয়ে কথা বলতে রাস্তায় নেমেছিলেন তিনি। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ হাসিনার কুখ্যাত ভয়ংকরতম 'আয়না ঘর' ও 'পিলখানা হত্যাকান্ড'র প্রতি নীরব সমর্থকদের দ্বারা ট্রলের শিকার হতে হয়েছিল তাকে।
ভারত বাঁধনকে ভিসা না দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করল দেশটি বাংলাদেশে যারা আওয়ামী লীগপন্থি তাদেরই ভিসা দেয়। এর বাইরে কোনোভাবে প্রমাণিত ভিন্ন মতাবলম্বীদের ভিসা দেয় না। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে তার পুরনো ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছিল, এই আন্দোলনে রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছেন বাঁধন। সম্প্রতি এ বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ছাত্র আন্দোলনের আগে থেকেই হেনস্তার শিকার হয়েছেন, এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সঙ্গে ছবি থাকার কারণে চারবার তাকে ভারতের ভিসা দেওয়া হয়নি।
বাঁধন বলেন, 'ছাত্রদের সঙ্গে সংহতি জানানোর পর থেকে আমাকে যে ধরনের সাইবার বুলিং করা হয়েছে, সেটা অনেক ভয়ানক ছিল। রুমিন ফারহানার সঙ্গে একটা ছবি দিয়ে আমাকে টার্গেট করা হচ্ছিল। রুমিন আমার ফ্রেন্ড। সে কি আমার বন্ধু হতে পারবে না? বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিসহ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও আমার ছবি আছে। তাদের সবাইকে যে আমি পছন্দ করি, ব্যাপারটা সে রকম নয়। আমার সঙ্গে ছবি নেই এমন মানুষের সংখ্যাই কম। কারণ আমি ছবি তুলতে অনেক পছন্দ করি।'
গত ফেব্রম্নয়ারিতে আয়োজিত ১৫তম বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল জুরি হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বাঁধন। তবে ভিসা না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ওই উৎসবে যোগ দিতে পারেননি তিনি। সে সময় কিছু না বললেও বাঁধন জানালেন, মূলত ভিপি নুরের সঙ্গে ছবি থাকায় তাকে ভিসা দেওয়া হয়নি।
বাঁধন বলেন, 'আমি কলকাতায় কাজ করেছি, বলিউডে কাজ করেছি। তারপরও নুরের সঙ্গে ছবি থাকায় আমার আবেদন রিফিউজ করা হয়েছে। ভিপি নুরের সঙ্গে ছবিটি তুলেছিলাম আমেরিকান অ্যাম্বাসির ফাউন্ডেশন ডেতে। এই ছবিটা অনেকেই আমাকে ডিলিট করতে বলেছে। আমি সেটা করিনি। কিন্তু এই কারণে আমাকে চারবার ইন্ডিয়ান ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে রিফিউজ করা হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে, ছবিটা ডিলিট করে দিয়ে সরি বলতে। ভুলে দিয়ে ফেলছি এটা বলতে হবে। কিন্তু আমি সেটা করিনি। কারণ আমি তো ছবিটা ভুলে দিইনি। আমাকে এটা বলতে বাধ্য করতে পারবে না কেউ। এটা কোনো ক্রাইম না। এটার জন্য কেউ আমাকে কোনো কিছু থেকে বঞ্চিত করলে এটা তাদের সমস্যা, আমার নয়।'