দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনির খান। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ শিল্পী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিটিভি, শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন স্থানে কালোতালিকাভুক্ত ছিলেন। এবার পটপরিবর্তন ও নিজের বঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন মনির খান। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট পটপরিবর্তন হলো। অসংখ্য ছাত্র এ আন্দোলন করতে গিয়ে মৃতু্যবরণ করেছেন। প্রাণ ঝরেছে অনেক শিশুর। রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে রক্তে। আমরা সংস্কৃতিকর্মী, সাধারণ মানুষ, সন্তান হারানো পিতা-মাতা-পরিবার সবাই রাস্তায় নেমেছি। যার ফলে পতন হয়েছে সরকারের। স্বস্তির বিষয় স্বৈরশাসক নির্মমভাবে বিদায় নিয়েছে।
অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ব্যক্তি। বাংলাদেশের গর্ব। নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সঠিক মানুষকে আমরা পেলাম। মনির খান বলেন, নিজেদের অধিকার ব্যক্ত করতে গিয়ে গত ১৬ বছরের শাসন আমলে অনেকের প্রাণ গেছে, অনেকে জেলবন্দি হয়েছেন, গুম হয়েছেন, দেশ ছাড়া হয়েছেন। আমি একজন সঙ্গীতকর্মী। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। তারপরও দীর্ঘ ১৬ বছরে বিটিভি, রেডিও ও শিল্পকলায় গান গাওয়ার সুযোগ পাইনি। এমনকি মেরিল প্রথম আলো অনুষ্ঠানেও আমাকে ডাকা হয় না। তিনি যোগ করে বলেন, এ রকম অনেক কষ্ট বুকে জমা আছে। কখনো বলিনি। গণতন্ত্র ফিরেছে, তাই এখন বলছি। আরও কষ্টের বিষয় হলো, যাদের সঙ্গে গান করেছি, সঙ্গীত পরিবারের অনেকেও আমাদের মধ্যে দেয়াল তুলে দিয়েছিলেন। যেন সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে যেতে না পারি। এমন অসভ্যপনা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আশা করা যায় না। আমি ভুক্তভোগী। মনির খান বলেন, আলস্নাহ্র হুকুমে, অসংখ্য ছাত্রের জীবনদানের মধ্য দিয়ে, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে এই স্বৈরশাসকের বিদায়ের মধ্য দিয়ে মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। মনির খান বলেন, আমি একজন সংস্কৃতিকর্মী। এ অঙ্গনে সুস্থ সংস্কৃতির পক্ষে আমার ভূমিকা রাখার ইচ্ছা। সুস্থ সংস্কৃতিবিহীন কোনো দেশের সার্বিক সুস্থতা থাকে না। সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গেলে, সে দেশের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। স্বৈরশাসকের আমলে অপসংস্কৃতির যে লীলাখেলা আমরা দেখেছি, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। বলতে গেলে ধাক্কা খেয়েছি, বারবার অসম্মানিত হয়েছি। সরকারি প্রতিষ্ঠানে সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে দাঁড়াবার সুযোগ পাইনি। সামনে সুস্থ সংস্কৃতির পক্ষে নিজের অবদান আমি রাখতে চাই।