গান গাওয়ার সক্ষমতা হারাচ্ছেন তাহসান

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
জটিল রোগে আক্রান্ত তাহসান খান। কণ্ঠনালির সমস্যায় ভুগছেন সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান। হেটেরোটোপিয়া নামক এক রোগ বাসা বেঁধেছে তার কণ্ঠনালিতে। ছয় বছর আগে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই তিনি আর অনায়াসে গাইতেও পারছেন না। এমনকি ভবিষ্যতে গান গাওয়া নিয়েও শঙ্কায় পড়তে হতে পারে জনপ্রিয় এই শিল্পীকে। কিছুদিন আগে গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাহসান জানান, দীর্ঘদিন ধরে কণ্ঠনালির সমস্যায় ভুগছেন তিনি। হেটেরোটোপিয়া নামের একটি রোগ বাসা বেঁধেছে তার কণ্ঠনালীতে। এই সমস্যায় গলার কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায়। কমে যায় গান গাওয়ার মনোবল। ২০১৮ সাল থেকে এই সমস্যার শুরু। সে কারণে আগের মতো এখন আর আগের মতো গান গাইছেন না তিনি। তাহসান জানান, ভবিষ্যতে গান গাওয়া নিয়েও শঙ্কিত তিনি। তাহসান বলেন, 'আমি আগে কখনো এই কথাগুলো বলিনি, আজকে সবার সঙ্গে শেয়ার করি। ছোটবেলায় গান শিখেছি বাবা মায়ের অনুপ্রেরণায়। শুরুর দিকে গান শেখাটা উপভোগ করতাম না, তারপর আস্তে আস্তে উপভোগ করতে শুরু করলাম। ফ্রেন্ডের সঙ্গে গান গাইছি, ব্যান্ডে গান গাইছি, কনসার্ট করছি। গান গাইতে পারাটা যে একটা আশীর্বাদ, এটা খুব বেশি অনুভব করতাম না। কিন্তু একটা সময়ে হেটেরোটোপিয়া নামক এক রোগ ধরা পড়ে আমার কণ্ঠনালিতে, ২০১৮ সালের দিকে শুরু।' অথচ সঙ্গীতে মুগ্ধতা ছড়ানো এক নাম তাহসান খান। অভিনয়েও ছড়িয়েছেন দু্যতি। সম্প্রতি ওটিটি পস্ন্যাটফর্মেও অভিষেক হয়েছে তার। স্ক্রিমিং হয়েছে তার প্রথম ওয়েব সিরিজ 'বাজি'র। অভিনয় করলেও গানের প্রতি সবসময় ভালোবাসা তার। একাধিক সাক্ষাৎকারে গানের প্রতি তার ভালোবাসার কথা বলেছেন তিনি। গান ও অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত তাহসান আর কিনা এরই মাঝে ভক্তদের এক দুঃসংবাদ দিলেন! তাহসান বলেন, একটা সময় খুব ভয় পেয়েছিলাম, হয়তো আর গাইতে পারব না। গত ছয় বছরে বুঝেছি, কখন আমার গলা গাওয়ার অবস্থায় রয়েছে, আর কখন নেই। এ জন্য এখন গান গাওয়াও কমে গেছে। এই সমস্যার চিকিৎসাও চলছে। এ জন্য জীবনযাত্রাতেও পরিবর্তন এসেছে। বদলেছে খাদ্যাভ্যাসও। মাঝে কিছুটা কমে গেলেও এখন আবার সমস্যাটি বেড়েছে বলে জানান তাহসান। তিনি বলেন, দেখা গেল আজ একটা বড় কনসার্ট আছে, সেখানে তো আমাকে গাইতেই হবে। এমনটাও হয়েছে যে আমার গলার অবস্থা বেশ খারাপ। গলা ব্যথায় ঠিকভাবে কথাও বলতে পারছি না। আর সেই দিনেও এক ঘণ্টা গান গাইতে হবে। এ রকমও হয়েছে, যেমন ভাবে পারফর্ম করার কথা, সেভাবে করতে পারিনি। তবে আমি সৌভাগ্যবান যে শ্রোতাদের ভালোবাসা কখনো কমেনি। আগামী দিনে গান গাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তাহসান খান। আগের মতো এখন আর চাইলেই গান গাইতে পারেন না বলে জানান তিনি। ভবিষ্যতে গান গাওয়ার প্রসঙ্গে তাহসান খান বলেন, যত দিন যাচ্ছে, আমার গান গাওয়ার সক্ষমতাও কমছে। ভক্তদের এ জন্য জানালাম, ধীরে ধীরে যদি কনসার্ট কমে যায় এবং লাইভে গান গাওয়াও কমে যায়, তাহলে আপনারা বুঝে নেবেন, আমার সমস্যা প্রকট হয়েছে। আর আমার জন্য আপনারা দোয়া করবেন, যেন সমস্যা যতটুকু হয়েছে, তা আর বেশি না হয়। তাহসান বলেন, 'আজকে এই কথাগুলো প্রকাশ করার কারণ হলো যতদিন যাচ্ছে আমার গান গাওয়ার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। আর মেডিকেল টার্মে এটা ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই।' ভক্তদের উদ্দেশে তাহসান বলেন, 'আস্তে আস্তে যদি কনসার্ট কমে যায় এবং লাইভে গান গাওয়া কমে যায়, তাহলে বুঝে নেবেন আমার এই সমস্যা প্রকট হয়েছে। আর দোয়া করবেন যেন এই সমস্যা যতটুকু হয়েছে, এর বেশি যেন না হয়।' পরিবার থেকেই গানের সঙ্গে যুক্ত আছেন তাহসান খান। ছায়ানট থেকে ছয় বছর রবীন্দ্রসঙ্গীত শিখে ১৯৯৮ সালে বন্ধুদের নিয়ে তিনি গঠন করেন ব্যান্ডদল 'বস্ন্যাক'। পরে 'বস্ন্যাক' থেকে বের হয়ে নিজের মতো করে গানের সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহসান খান। প্রায় দুই যুগের ক্যারিয়ারে ব্যান্ড ও একক মিলিয়ে ১১টি অ্যালবাম করেছেন তাহসান। দীর্ঘ ১৯ বছর পর সম্প্রতি পুরনো লাইনআপে ফিরে বস্ন্যাকের কনসার্ট করেছেন তাহসান। তা ছাড়াও নিজের লেখা গানে একটি অ্যালবাম নিয়ে শ্রোতাদের সামনে হাজির হবেন এই শিল্পী। অ্যালবামটির কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। ২০০৪ সালে প্রকাশ পায় তাহসানের প্রথম একক অ্যালবাম 'কথোপকথন'। এর 'ঈর্ষা', 'চতুর্থ মাত্রা', 'বৃত্তাল্পনা', 'কথোপকথন' গানগুলো বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরপর প্রকাশ পায় তার আরও একটি অ্যালবাম- 'কৃতদাসের নির্বাণ'। এতে ছিল 'প্রেমমাতাল', 'কাদা' প্রভৃতি গানগুলো। এই অ্যালবাম প্রকাশের পর তাহসানকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশজুড়ে মুখে মুখে ফিরতে শুরু করে গানগুলো।