নিরব হোসেন ঢাকাই ফিল্মের একজন ব্যস্ততম অভিনেতা এবং মডেল। চলচ্চিত্রে তিনি নিরব নামে খ্যাতি অর্জন করেন। মডেলিং নিয়ে নিরব তার কর্মজীবন শুরু করেন। আজ থেকে দেড় যুগ আগে মডেল হিসেবে চিত্রনায়ক নিরবের ক্যারিয়ার শুরু হয়। এরপর বিলবোর্ড, টিভিসির কাজ দিয়ে তিনি দেশের শীর্ষ মডেলদের একজন হয়ে ওঠেন। ২০০৭-০৮ সালের দিকে শাকিব খানের সঙ্গে 'মন যেখানে হৃদয় সেখানে' ও 'মনে পড়ে কষ্ট' ছবি দুটিতে অভিনয়ের মাধ্যমে সিনেমায় কাজ করেন। পরে অসংখ্য নাটকে কাজ করেন। তবে নিরব এখন সিনেমায় মনোযোগী। তার সাম্প্রতিক মুক্তি পাওয়া ছবির মধ্যে 'ক্যাসিনো', 'ফিরে দেখা', 'ছায়াবৃক্ষ', 'অমানুষ' অন্যতম। প্রথমদিকে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করার পরে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ২০০৯ সালে পরিচালক শাহীন-সুমনের 'মন যেখানে হৃদয় সেখানে' চলচ্চিত্র দিয়ে নিজের চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। ২০১৭ সালে তিনি সমীর খান পরিচালিত 'শয়তান' ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন।
আজ ২ জুলাই চিত্রনায়ক নিরবের জন্মদিন। জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা বার্তায় ভাসছেন নিরব। জন্মদিন প্রসঙ্গে নিরব বলেন, সারাদিনই ঘরে আছি। অনলাইনে বিভিন্ন মানুষ শুভেচ্ছা জানালেন। তাদের সঙ্গে কথা বলছি, ভার্চুয়াল আড্ডা দিচ্ছি। গত রাত থেকেই শুভেচ্ছা জানানো শুরু হয়েছে। এগুলো রিপস্নাই দেওয়া শুরু করছি। সন্ধ্যা নেমে আবারও রাত হয়ে গেল এখনো শেষ হচ্ছে না। এ এক মধুর যন্ত্রণা! আমি সত্যিই বেস্নসড এত এত মানুষ আমাকে ভালোবাসে, পছন্দ করে। জন্মদিন না এলে টের পাই না।
আসলে জন্মদিন এলে কেমন লাগে এমন কথায় নিরব জানান, '২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে আমার জন্মদিনটা আর আগের মতো ভালোলাগা নিয়ে আসে না। কারণ প্রতিবারই জন্মদিনে মা আমার জন্য নিজে ক্যান্টনমেন্ট মার্কেট (কচুক্ষেত) থেকে একজোড়া রজনীগন্ধা ও গোলাপ ফুল কিনে আনতেন। আমার পছন্দের বিভিন্ন পদের রান্না হতো। রাতে নিজ হাতে খাইয়ে দিতেন মা। মায়ের কাছ থেকে পাওয়া রজনীগন্ধা ও গোলাপের মূল্য ছিল আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান। অন্যদের কাছে পাওয়া উপহারগুলো মায়ের দেওয়া উপহারের কাছে মলিন মনে হতো।'
নিরব বলেন, প্রতিদিনই মা হারানোর ব্যথা অনুভব করি। আজ আরও বেশি করছি। বিশেষ এ দিনে আমার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। এখনো অনেক কিছুই করা হয়নি।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় অনেকটা ঘরোয়াভাবে ভালোবাসার মানুষ তাশফিয়া তাহের ঋদ্ধিকে বিয়ে করেন মডেল ও চিত্রনায়ক নিরব। তাদের দুইটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
আজ এই অভিনেতার জন্মদিনে যায়যায়দিন'র পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল- শুভ জন্মদিন।
তমালিকা কর্মকার:তমালিকা কর্মকার একজন মডেল এবং নাট্য অভিনেত্রী। আজ এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। ১৯৭২ সালের ২ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ৫২ পেরিয়ে আজ ৫৩ বছরে পা রাখলেন।
তমালিকার অভিনয় শুরুটা মঞ্চ থেকেই, যখন তার বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। ১৯৯২ সালে আরণ্যক নাট্যদল প্রযোজিত মামুনুর রশীদের লেখা ও আজিজুল হাকিম নির্দেশিত নাটক পাথর'র মাধ্যমে তার মঞ্চাভিনয় শুরু। এরপর আরণ্যক দলের অন্যতম নাটক ইবলিস, জয়জয়ন্তী, খেলা খেলা, ওরা কদম আলী, প্রাকৃতজন কথা, রাঢ়াঙ, বিদ্যাসাগর এবং ময়ূর সিংহাসনে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে থিয়েটার অঙ্গনে বেশ জনপ্রিয়তা পান।
তমালিকার প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় 'অন্য জীবন'র মাধ্যমে। তবে সফলভাবে চলচ্চিত্রাঙ্গনে যাত্রা করে ১৯৯৬ সালে 'এই ঘর এই সংসার' ছবিতে চিত্রনায়ক আলী রাজের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে। তার বিশেষ কিছু কাজের মধ্যে ২০০০ সালে 'কিত্তনখোলা' চলচ্চিত্রে বেদের মেয়ে ডালিমন চরিত্র এবং ২০১২ সালের 'ঘেটুপুত্র কমলা'য় কমলার মা চরিত্র অন্যতম। ১৯৯৬ সালে তিনি লেখক হুমায়ূন আহমেদের অত্যন্ত জনপ্রিয় নাটক 'কোথাও কেউ নেই'তে অভিনয় করেছেন এবং এর মাধ্যমেই তিনি সবচেয়ে আলোচিত হন। এ ছাড়া 'নাট্যযুদ্ধ' নামের একটি রিয়েলিটি শোয়ের বিচারক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সিওল, দক্ষিণ কোরিয়াতে আন্তর্জাতিক 'থিয়েটার ফেস্টিভাল' অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ সরকারের 'শিল্পকলা একাডেমী'র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যান। ২০১৩ সালে, তিনি 'এনওয়াইএস এসেম্বলি' স্বীকৃতি লাভ করেন। ২০০২ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
বেলাল খান:বেলাল খান একজন সুরকার, গায়ক ও সংগীতায়োজক। আজ ২ জুলাই বেলাল খানের জন্মদিন। বেলাল খানের জন্ম টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার নলুয়া গ্রামে। তার পিতার নাম লুৎফর রহমান খান ও মাতার নাম বেদেনা রহমান। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে বেলাল সবার বড়। ২০০১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি হন। তবে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন। বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে নজরুল সংগীতের ওপর চার বছর মেয়াদি কোর্স শেষ করেন।
বেলাল ব্যাংকে চাকরির মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে সংগীত শুরু করেন। শুরুতে 'প্রাচীর' নামের একটি ব্যান্ড দলও গঠন করেন। এসময় স্টেজ পারফরমেন্স করতেন। ২০০৯ সালে তিনি মনির খান ও বেবী নাজনীনের একক অ্যালবামের দুটি করে গান সুর করেন। শিল্পী কিরণের 'পাগল তোর জন্য রে' গানটি ২০১১ সালে চলচ্চিত্রে ন্যান্সির সঙ্গে দ্বৈত সংগীতে ব্যাপক পরিচিতি পান। 'নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ' চলচ্চিত্রে 'নিশিপক্ষী' গানের জন্য সুরকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
২০১২ সালে বেলাল খানের প্রথম একক আলাপন প্রকাশিত হয়। তিনি চলচ্চিত্রের প্রায় ২৫টি গানে সুর করেছেন। তার সুরে কণ্ঠ দিয়েছেন বেবী নাজনীন, মমতাজ, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, আলম আরা মিনু, মনির খান, কণা, ন্যান্সি, রূপরেখা ব্যানার্জি, ইমরান, লিজা, পড়শীসহ অনেকে। তার সুরে প্রকাশিত হয়েছে 'জাগো বাংলাদেশ' শিরোনামের একটি গান। এছাড়া তিনি অনন্ত জলিলের সিনেমা দিন : দ্য ডে-তে মোহাম্মদ রেজা হেদায়েতির সঙ্গে ফারসি ভাষায় 'চে কোনাম' শিরোনামে
একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
তিনি ২০১৪ সালে নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ চলচ্চিত্রের 'নিশিপক্ষী' গানের জন্য সুরকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো ২০২০-এর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য 'হৃদয় জুড়ে' সিনেমার 'বিশ্বাস যদি যায়রে' গানের জন্য বেলাল খান 'শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক' পুরস্কার অর্জন করেন। 'পাগল তোর জন্য রে' গানটি দিয়ে পরিচিতি পান। তিনি নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্র, মিক্সড অ্যালবাম এবং নাটকের টাইটেল গান তৈরি ও সেগুলোতে কণ্ঠ দিতে থাকেন।