কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এমন অবস্থানে পৌঁছেছে যে, এই প্রযুক্তির ব্যবহারে রীতিমতো তারকাদের চেহারা ও চালচলন থেকে শুরু করে কণ্ঠ ও সুর পর্যন্ত নকল করা যায়। এ ছাড়াও এআইয়ের মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে ডিপফেক বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন তা আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এ কারণে ব্যক্তিত্বের অধিকার রক্ষায় আইনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন, অনিল কাপুর ও জ্যাকি শ্রফের মতো বলিউডের দাপুটে অভিনেতারা। এবার তাদের মতো করেই একই পথে পা বাড়াতে চান ভারতের খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পী কুমার শানু। সম্প্র্রতি এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তিনি।
কুমার শানুর মতো জনপ্রিয় একজন গায়কের গলা বহু বছর ধরেই নকল করার চেষ্টা করেছেন অনেকেই। সেই চাওয়াকে পূর্ণতা দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে সামাজিকমাধ্যমে কুমার শানুর গানের ফেক সংস্করণ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গানের নতুন কথায়, নতুন সুরে শোনা যাচ্ছে এই গায়কের গান; যা কখনোই গাননি কুমার শানু।
এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ভারতীয় গণমাধ্যমকে গায়ক বলেন, প্রযুক্তির দুনিয়ায় এখন রাজ করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি। যেকোনো গায়কের গলা এটির মাধ্যমে হুবহু নকল করা যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় না এই কাজটা ঠিক হচ্ছে। কারণ এ ধরনের পদ্ধতির মাধ্যমে শিল্পীদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করা সংকটজনক হয়ে উঠবে। এআই অত্যন্ত বিপজ্জনক। আমার উচিত এ নিয়ে সবার আগে আদালতে যাওয়া।
এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে পুরনো জনপ্রিয় শিল্পীদের কণ্ঠ নতুন গানে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে নতুন গানগুলোর নানা সংস্করণ তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে নির্মাতারা এখনো পুরনো জনপ্রিয় গানের রিমেক তৈরি করছেন।
এ প্রসঙ্গে কুমার শানু বলেন, আমি জানি না কেন প্রযোজক এবং পরিচালকরা সুরকে উপেক্ষা করে, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে গান বানাচ্ছেন। তারপর সেই সব গান শ্রোতাদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছেন। এটা ঠিক হচ্ছে না। গানের সুরের একটা মান ছিল, কিন্তু এখন সেটাকে নষ্ট করতেই সবাই ব্যস্ত। আর পুরনো গানের রিমেক যদি বলেন, তাহলে যে সব পুরনো শিল্পী এখনো কাজ করছেন, তাদের গান তাদের দিয়েই গাওয়ানো হচ্ছে না কেন?
সম্প্র্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন কুমার শানু। সেখানে অনেকগুলো কনসার্ট ছিল এই গায়কের। কিছুদিন হলো আমেরিকা থেকে ফিরেছেন তিনি। এসেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকালে এআই নিয়ে মুখ খুললেন তিনি।
তবে শুধু কুমার শানুই নন, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এআর রহমান, সনু নিগম, আতিফ আসলাম, অরিজিত সিংয়ের গলাও নকল করে সামাজিকমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে গান।