পশ্চিমবঙ্গের নায়িকা নুসরাত জাহানের সাম্প্রতিক দিনকাল ভালো যাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠিত একে একে সবাই তাকে এড়িয়ে যেতে চাইছে। শিল্পীসত্তার ভেতরে যে তার দুর্নীতিসত্তাও রয়েছে এটা উন্মোচন হওয়ার পর থেকে বিনোদনের সবাই হয় প্রকাশ্যে না হয় মনে মনে ঘৃণা করা শুরু করে দিয়েছেন। বলা যায়, বিনোদন অঙ্গনে আজ তিনি সুশীল শিল্পীসঙ্গবিহীন একা। কোনো ভদ্রশিল্পীই নুসরাতকে চলচ্চিত্রে আপনজন হিসেবে গ্রহণ করছেন না আর। ফলে নুসরাতের চলচ্চিত্রে কাজের সংখ্যাও কমে গেছে। ডাক আসছেন না কোনো নতুন সিনেমার। কো-আর্টিস্ট হিসেবেও এখন চলচ্চিত্র শিল্পের কেউ তাকে চাইছেন না। ফলে চলচ্চিত্র পরিচালকরাও খুব সাবধানী হয়ে পড়েছেন তাকে তাদের ছবিতে যুক্ত করতে। তার জন্য কোনো শিল্পীকেও হারাতে চাইছেন না। নুসরাত রাজনীতিতেও হয়ে পড়েছেন অপাঙ্ক্তেয় তেমনি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতেও। অর্থাৎ চলচ্চিত্র-রাজনীতি দুই-ই গেল নুসরাতের। যেমন নুসরাত জাহানের সঙ্গে একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন অভিনেতা অঙ্কুশ। একসময় ভালো বন্ধুত্বও ছিল তাদের মধ্যে। সম্প্রতি নুসরাতের নাম একাধিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল, যা একদমই পছন্দ করছেন না অঙ্কুশ। তাই নুসরাতের প্রসঙ্গ উঠলেই এড়িয়ে যাচ্ছেন এ অভিনেতা। তার প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে চাইছেন না। তার প্রসঙ্গে কেউ কোনো কথা বলুক এটাই তিনি চাইছেন না। একাধিক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন নুসরাতকে নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। অথচ, একটা সময়ে দুই তারকার মধ্যে খুবই বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু সম্প্রতি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই নাকি নুসরাতের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন তিনি। যদিও মিমির সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে তার। হোলিতে অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা এবং মিমিকে একসঙ্গে হোলি খেলতেও দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি শেয়ারও করেছিলেন তারা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে নুসরাতের সঙ্গে কোনো ছবিতেও কাজ করেননি অঙ্কুশ। কোনো ছবিতে যদি নুসরাতের নাম থাকে তবে সেই ছবিতে তিনি আর যুক্ত হতে চাইছেন না। সেই সঙ্গে নুসরাতের প্রসঙ্গ উঠলেই এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। কারণ খুব একটা স্পষ্ট করেননি অভিনেতা। তবে নুসরাতের নাম একের পর এক দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাওয়াতেই এই দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নিখিল জৈনের সঙ্গে বিয়ে অস্বীকার করা থেকে শুরু করে কনস্ট্রাকশন কোম্পানির ডিরেক্টর পদে থেকে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে নুসরাতের বিরুদ্ধে। বসুরহাটের সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনের আগেই নিখিল জৈনকে বিয়ে করেন নুসরাত জাহান। তার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই নুসরাতের সঙ্গে বিয়ে অস্বীকার করেন তিনি। তারপরেই প্রকাশ্যে আসে অভিনেতা যশের সন্তানের মা হতে চলেছেন তিনি। তারপর থেকে যশের সঙ্গেই রয়েছেন নুসরাত। একের পর এক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে পড়া নিয়ে মিমির সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয়েছিল নুসরাতের। মিমিও আর তাকে পছন্দ করছেন না। অথচ একই সঙ্গে তারা রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। মিমি যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই বছরের শুরু থেকেই রাজনীতি থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। এবং ভোটে না দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন। অবশ্য নিজের সেই কথাতে অটল না থেকে আবারও নির্বাচনে লড়াই করতে চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন তৃণমূলের আশীর্বাদ পেতে। হতে চেয়েছিলেন বসুরহাটের সংসদ সদস্য পদে আবারও প্রার্থী হতে। কিন্তু মমতা ব্যানার্জী আর ভুল করতে চাননি। তিনিও নুসরাতকে বীতশ্রদ্ধভাবে এড়িয়ে গেছেন। পেলেন না আর মমতার তৃণমূলের নির্বাচনী টিকিট।