বিশ্বজয়ের পথে ইন্দোনেশিয়ার নারী মেটাল ব্যান্ড

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন ডেস্ক
হিজাবে মোড়া হ্যাভি-মেটাল গিটার-ড্রামস বাজানো ইন্দোনেশিয়ার তিন নারীর ব্যান্ড 'ভয়েস অব বেসপ্রট'। দলটি এবার বিশ্বজয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে আরও এক ধাপ। পারফর্ম করতে যাচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম বড় সঙ্গীত মঞ্চে। গারুতের এই তিন তরুণী ২৮ জুন ইংল্যান্ডের গস্নাস্টনবারি উৎসবে পারফর্ম করতে যাচ্ছেন। যে মঞ্চে আরও পারফর্ম করবে বিশ্বখ্যাত ব্যান্ড কোল্ডপেস্ন এবং শানিয়া টোয়েনের মতো মহারথীরা। এটাই তাদের জন্য এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় মঞ্চ, তাই বিষয়টি নিয়ে দলের তিন সদস্য উত্তেজিত ও কিছুটা নার্ভাস। বিদি রাহমাওয়াতি (২৩), ফিরদা মারসিয়া কুর্নিয়া (২৪) ও ইইউএস সিতি আইশাহ (২৪)- এই ত্রয়ী জানিয়েছেন, 'শুধু ভয়েস অব বেসপ্রট নয়, আমরা এই কনসার্টে নিজ দেশের প্রতিনিধিত্বও করছি।' এই ত্রয়ী মেটাল সঙ্গীত দিয়ে শুধু গানই করেন না, বরং প্রচলিত ধ্যান-ধারণার চ্যালেঞ্জও জানান। তারা প্রমাণ করতে চায়, মুসলিম নারীরাও শক্তিশালী, সঙ্গীতপ্রেমী হতে পারে, এমনকি হিজাব পরে মেটালও বাজাতে পারে। ইন্দোনেশিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুসলিমপ্রধান দেশ, যেখানে ৯০% মানুষ মুসলিম, সেই দেশটিতেও এবার বিপস্নব ঘটিয়েছে নারীদের এই মেটাল ব্যান্ড। দলের অন্যতম সদস্য ফিরদা বলেন, 'আমরা নারীরা হিজাব পরি, আর আমাদের গান নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে। আমরা চাই, সবাই আমাদের কাজ দিয়ে চিনুক, চেহারার জন্য নয়।' ২০১৪ সালে একটি ইসলামি স্কুলে বিদি, ফিরদা ও সিতির সাক্ষাৎ হয়। সেখান থেকেই শুরু, সিস্টেম অব আ ডাউনের 'টক্সিসিটি' অ্যালবামের মাধ্যমে মেটালের প্রেমে পড়া। স্কুলের গাইডেন্স কাউন্সিলর তাদের মেটালের সঙ্গে প্রথম পরিচয় করান। 'এটা আমাদের জন্য বড় ধাক্কা ছিল'- বলেন ফিরদা। কিন্তু মেটাল নিয়ে চ্যালেঞ্জ কম ছিল না, 'আমাদের গ্রামে মেটাল মানেই শয়তানের কাজ, মেয়েদের জন্য নয়, বিশেষ করে হিজাবে', বিদি বললেন। এমনকি ফিরদার পরিবার চেয়েছিল ইসলামি চিকিৎসা করিয়ে তার মেটাল সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা দূর করতে। বিদি বলেন, 'শুরুতে মনে হতো আমাদের কোনো ঠিকানা নেই, যেন আমরা অপরাধী।' তবে এসব চ্যালেঞ্জকে পাশ কাটিয়ে তারা ছুটছে তাদের স্বপ্নের দিকে। গস্নাস্টনবারির পর ব্যান্ডটি কাজ করবে নতুন অ্যালবাম নিয়ে, যার নাম 'মাইটি আইল্যান্ড'। এটি ইন্দোনেশিয়ার দুর্নীতি নিয়ে কথা বলবে। নিজেদের গ্রামের উঠতি মিউজিশিয়ানদের জন্য একটি কমিউনিটি গড়তে চান তারা। ফিরদার কথায়, 'আমরা আমাদের কমিউনিটিকে ক্ষমতায়িত করতে চাই। আমাদের গান শুধু বিনোদন নয়, বরং পরিবর্তনের হাতিয়ার।'