বসে থাকলে অভিনয়ে মরচে পড়ে যায় রোশনি

প্রকাশ | ২১ জুন ২০২৪, ০০:০০

মাতিয়ার রাফায়েল
রোশনি তন্বী ভট্টাচার্য
এক সময়ের বিমান সেবিকা থেকে অভিনেত্রী রোশনি তন্বী ভট্টাচার্য। তমুল জনপ্রিয় ছিলেন ছোটপর্দায়। অভিনয় করতেন নায়িকা চরিত্রে। আর এখন যে কোনো চরিত্রই অভিনয় করতে রাজি আছেন। কারণ হিসেবে জানালেন, কেননা, বসে থাকলে অভিনয়ে মরচে পড়ে যায়। তাই তিনি পেশা বদলে ছিলেন আগেই। বিমান সেবিকা থেকে হয়েছেন অভিনেত্রী। লোকমুখে শোনা যায়, তিনি নাকি একঘেয়েমি এড়াতে প্রেমিকও বদল করেছেন। এক সময় দেখা যেত দিব্যজ্যোতি দত্তের সঙ্গে তার নাম জুড়েছিল, এখন দেখা যায় নাকি রণজয় বিষ্ণুকে? সূত্রে জানা যায়, টালিপাড়ায় কান পাতলেই শোনা যায় প্রেমিক বদলের হিড়িক। তবুও যেটুকু আসে কানে সেটাই বড় খবর হয়ে যায়। আর তাতে যদি আবার 'পরকীয়া'র মশলা থাকে তাহলে তো কোনো কথাই নেই। বদলে ফেলেছেন রোশনিও। এর আগে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা দিব্যজ্যোতি দত্তের সঙ্গে তার নাম উচ্চারিত হতো। কিন্তু পরে জানা যায়, রণজয় বিষ্ণুর সাবেক প্রেমিকা রোশনি! চলতি বছরের শুরুতেই শোনা যায়, টেলিভিশনের জুটি সুমন দে আর সুরভি সান্যালের বিয়ে নাকি ভেঙে গিয়েছে। ঘটা করে দিদি নম্বর ১-এ এসে প্রেমে শিলমোহর দিয়ে গিয়েছিলেন। আর তারপরই সুমনকে অন্য মেয়ের সঙ্গে ধরে ফেলেন হাতেনাতে। ফলে আর কী, ভেঙে যায় বিয়েটা। আর এখন সেই সুমনের সঙ্গে প্রেমের খবর মিলছে আরও এক টিভি সুন্দরী রোশনি তন্বী ভট্টাচার্যের। আপাতত সুমন আর রোশনির প্রেমর খবর মিলছে। দু'জনে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন 'তুমি যে আমার মা' ধারাবাহিকে। সুমন কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকলেও, রোশনি ছিলেন এই ধারাবাহিকের ভিলেন। কতটা সত্যতা রয়েছে এই জল্পনায়। সূত্রকে অভিনেত্রী জানানলেন, 'পুরোটাই রটনা। আমরা মোটেও প্রেম করছি না। জানি না কারা এসব ছড়াচ্ছে। সুমনকে আমি আগে থেকে চিনি। ও একটা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। তাই বন্ধু হিসেবে ওর পাশে ছিলাম। এর থেকে বেশি কিছু নয়।' সত্যিই এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা তা জানালেন এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী রোশনি, 'কোন গোপনে মন ভেসেছে' ধারাবাহিকে তিনি নতুন সদস্য। টুইস্ট আসতে চলেছে নতুন পর্বে। পর্দায় তিনি ধারাবাহিকের নায়ক রণজয় ওরফে 'অনিকেত'-এর সাবেক প্রেমিকা। সে খবর ছড়াতেই টেলিপাড়ায় চর্চা শুরু। তাকে নায়কের বাস্তবের প্রেমিকা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে! বাস্তবে না হোক, পর্দায় তিনি নায়ক-নায়িকা অনিকেত-শ্যামলীর মাঝখানে? এবারেও তার হাসিমাখা জবাব দিলেন রোশনি। বললেন, 'মাঝখানে আর এলাম কোথায়! চ্যানেল তো দু'জনের এক পাশে আমার ছবি দিয়েছে।' এই ছবি দেখে কিন্তু রোশনির অনুরাগীদের মুখে হাসি ফুটেছে। ধারাবাহিকে 'অহনা' হিসেবে দেখা যাবে তাকে। ধারাবাহিকের নায়িকা 'শ্যামলী' ওরফে শ্বেতা ভট্টাচার্যের জীবন দুর্বিষহ করতে চলে এলেন তো? যদিও রোশনি নিজেও জানেন না কতটা দুষ্টুমি তার জন্য বরাদ্দ করেছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। সেই জায়গা থেকে তার অনুমান, চরিত্রটি সম্ভবত ধূসর। রাজ চক্রবর্তীর 'ফেলনা' ধারাবাহিকে নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রোশনি। তারপর থেকে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। ইদানীং খলনায়িকার চরিত্রেও অভিনয় করছেন রোশনি। আর নায়িকা নন কেন? হাসি থেমে গলা গম্ভীর। সাফ জবাব দিলেন তিনি, 'নেপথ্যে কয়েকটি কারণ রয়েছে। এক. আমি বসে থাকতে রাজি নই। বহুদিন চর্চায় না থাকলে অভিনয়ে মরচে পড়ে যায়। দুই. অভিনয়ে মরচে পড়া মানে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরা। তখন নায়িকার চরিত্র দিলেও অভিনয় করতে পারব না। তিন. উপার্জনের কথাও মাথায় রাখতে হয়। ছোটপর্দায় উপার্জন মোটামুটি নিয়মিত।' রোশনি আরও বলেন, অভিনীত চরিত্রগুলোই তার জীবনের পুঁজি, যা দেখে যে কোনো পরিচালক বুঝতে পারবেন, সব ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করতে পারেন তিনি। একইভাবে ধূসর বা খলচরিত্রে অভিনয় করতে ভালোবাসেন রোশনি! কেন? ফের হাসিমুখে বললেন, 'সামাজিকমাধ্যমে কি মজার মজার মন্তব্য পড়া যায়! এর আগে একটি ধারাবাহিকে আমার চরিত্রের নাম ছিল 'কমলিনী'। লোকে রেগেমেগে তাকে লিখে দিলেন 'কালনাগিনী'! ওটা দেখে বুঝলাম, আমি ঠিক দিকে এগোচ্ছি। অভিনয় ঠিক হচ্ছে।' সহ-অভিনেতারা ছোটপর্দা ছাপিয়ে যায় সিরিজে নয়তো বড়পর্দায়...! এমন প্রশ্ন শেষ করার আগেই রোশনি জানালেন, ওদের দেখে সত্যিই গর্ব হয়। একটু থেমে বললেন, 'সব কিছু সময়ের হাতে ছাড়তে হয়। তবেই নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ফল মিলবে।' কিন্তু অভিনয়ের জায়গাটিও কি ঠিক প্রেমিক বা প্রেমিকা বদলের মতো নয়? তাই তো এই প্রেমিক বদলের ঘটনায় বলেন, 'আমি বহুবার ঠকেছি... এখন রিলেশনশিপের ভ্যালু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।' সম্পর্ক নিয়ে এমন মতামত রাখনে 'এক্কাদোক্কা'র কমলিনি। অভিনেত্রী কি বাস্তবে সিঙ্গেল? অভিনেত্রী জানান, আমি একদম সিঙ্গেল। আমার খুব বেশি বন্ধু নেই। তবে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে যে ক'জন বন্ধু রয়েছে একজন বাদ দিয়ে প্রত্যেকেই সিঙ্গেল। যে সিঙ্গেল নয় আমি তো তাকে এ রকম বলি যে, একটা ছেলে খুঁজে দিতে। আমি ভীষণই ট্রান্সপারেন্ট। আর এভাবেই থাকতে চাই। অভিনেত্রী বলেন, আমি ভীষণ প্রাণবন্ত। খুব খোলামেলা আমার মুখে যা মনেও তাই। আর আমি প্রেম করলে বা আমার যে ক'জন ভালোবাসার মানুষ আছে তাদের স্পেশাল ফিল করানোর সমস্ত দায়িত্ব আমি নিয়ে নেই। তাই কখনো কখনো তারা বোর হয়ে যায়। তাই তো প্রেমিকা হিসেবে যখন নতুন কেউ এসে যায় তখন নায়িকা হিসেবে তাকেও বদলে ফেলা হয়! বাস্তবের প্রেমিকা বা প্রেমিকের মতো প্রফেশনের প্রেমিক বা প্রেমিকারাও হয়ে গেলে সেই অভিনেতা বা অভিনেত্রীদের একপর্যায়ে বহুদিন চর্চায় না থাকলে অভিনয়ে মরচে পড়ে যায়। তাই তো গৌণ চরিত্র হলেও এ পেশাকে নিবিড়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকতে হয়।