জন্মদিনে আয়োজনহীন নিপুণ

প্রকাশ | ০৯ জুন ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
ঢালিউডের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী নাসরিন আক্তার নিপুণের আজ জন্মদিন। ৪০ পেরিয়ে ৪১ বছরে পা দিলেন এই অভিনেত্রী। ১৯৮৪ সালের ৯ জুন নিপুণের জন্ম হয়েছিল কুমিলস্নার জালগাঁওয়ে। দেশ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর তিনি ১৯৯৯ সালে চলে যান রাশিয়ায়। মস্কোতে নিপুণ ২০০৪ পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এরপর পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে ২০০৬ সালে ফিরে আসেন দেশে। ওই বছরই অভিনয়ে নাম লেখান। গুণী এই অভিনেত্রীর ৪১তম জন্মদিনে তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার সহকর্মী তারকারা। নায়িকার সঙ্গে তোলা ছবি পোস্ট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিনোদন সাংবাদিকরাও। ২০০৬ সালে 'রত্নগর্ভা মা' ছবিটির মাধ্যমে নিপুণের চলচ্চিত্র যাত্রা শুরু হয়েছিল। যদিও সে ছবিটি আজও মুক্তি পায়নি। তাই একই বছর মুক্তি পাওয়া এফ আই মানিক পরিচালিত 'পিতার আসন'কে নিপুণের অভিষেক ছবি হিসেবে ধরা হয়। পরের বছরই শাহ আলম কিরণ পরিচালিত 'সাজঘর' ছবিটিতে অভিনয় করে ক্যারিয়ারের প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারটি পেয়ে যান এই নায়িকা। ওই ছবিতে তার সহশিল্পী ছিলেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও প্রয়াত নায়ক মান্না। এরপর ২০০৯ সালে মহম্মদ হান্নানের 'চাঁদের মত বউ' ছবিতে অভিনয়ের জন্য ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় জাতীয় পুরস্কারটি লাভ করেন নিপুণ। সে ছবিতে নিপুণের সহশিল্পী ছিলেন তখনকার সুপারহিট জুটি রিয়াজ ও শাবনূর। যদিও দুটি পুরস্কারই নিপুণ অর্জন করেন পার্শ্বচরিত্র ক্যাটাগরিতে। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে অর্ধশতাধিক চলচ্চিত্রে দেখা গেছে এই অভিনেত্রীকে। তার বেশির ভাগ ছবিই ব্যবসায়িক দিক থেকে সফল। বর্তমানে অভিনয়ের পাশাপাশি পার্লারের ব্যবসা রয়েছে নিপুণের। এছাড়া 'টিউলিপ এন্টারটেইনমেন্ট' নামে তিনি একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন। সেখান থেকে একাধিক ছবি প্রযোজনা করেছেন অভিনেত্রী। এবার ২৪ মে তার ছবি 'সুস্বাগতম' মুক্তি পেয়েছে। যদিও ছবিটি মুক্তির সময়ে দেশে ছিলেন না। একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারে যখন স্টারমার্ক হিসেবে দেখা যাবে তিনি দু'বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন, তখন তার যোগ্যতা নিয়ে যে কারোরই কোনো সংশয় থাকবে না, সেটাই স্বাভাবিক। একাধারে ছোট পর্দা এবং বড় পর্দার অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার ঢাকাই চলচ্চিত্রে আসা তেমনিই একজন মেধাবী অভিনেত্রী, যিনি তার অভিনয়ের জন্য দু'বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার একজন শিল্পীর জন্য কত বড় ওজনের সেটা যিনি এটা অর্জন করেছেন তিনিই বুঝতে পারেন আর যিনি সারা জীবন অভিনয় করেও একটিও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার না পেয়েছেন তিনিই এই না পাওয়ার বেদনা বুঝতে পারেন। সেই বিবেচনায় নিপুণ আক্তারের চলচ্চিত্রের বাইরে থেকে নতুন কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা না থাকারই কথা। তারপরও নিজের কথা না ভেবে তিনি নিজের সহকর্মী তথা ইন্ডাস্ট্রির অভিনয় শিল্পীদের স্বার্থে ২০২১ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়েন। ভোটের ময়দানে তিনি অভিনেতা জায়েদ খানের সঙ্গে পেরে না উঠলেও নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে এই অভিযোগে তিনি জায়েদ খানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে এই মামলার রায় উপর্যুপরি জায়েদ খানের পক্ষে গেলেও নাছোড়বান্দা নিপুণ আক্তার বারবারই আপিল করে শেষ পর্যন্ত তার পক্ষে রায় নিয়ে আসেন। এরপর সেই জয় নিয়ে কোনো মতে তার কার্যকালের মেয়াদ সম্পূর্ণ করে এলেও পরবর্তী মেয়াদের নির্বাচনে আর পারলেন না। গোটা প্যানেলেরই ভূমিধস পরাজয় হলো। দুটো সদস্য জিতেছে মাত্র। নিজে হারলেন মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে। গোটা পরাজয় বিষয়টা যেন শেলের মতো বিঁধল। জায়েদ খানের বিরুদ্ধে হেরেছিলেন ১৩ ভোটের ব্যবধানে। কিন্তু নিজের প্যানেলটা তো সমানতালে লড়াই করেছে। তারপর সেটা আদালতে নিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু এটা? এবারও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু এবার পারলেন না। আদালতে পাল্টা রিট করে ডিপজল নিজের পক্ষে রায় নিয়ে এলেন। তাই স্বভাবতই এবারের জন্মদিনটা তার গেলবারের মতো ধুমধামের সঙ্গে হলো না। কিছুটা অন্যরকম হয়তো কাটল এবারের জন্মদিন। তার ওপর দেশেও নেই। একমাত্র মেয়ে বিদেশে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছে। সে উপলক্ষে যাওয়া। কিন্তু তারপরও তো জন্মদিন। জগতের সেরা উপহার। জন্মদিনের শুভেচ্ছা নিপুণকে।