সবাইকে হতবিহ্বল করে না ফেরার দেশে সীমানা

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
অভিনেত্রী ও মডেল রিশতা লাবনী সীমানা (৩৯) মারা গেছেন। দীর্ঘ ১৪ দিন মৃতু্যর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন অভিনেত্রী। গতকাল সকাল ৬টায় হাসপাতালে মারা যান এই অভিনেত্রী। তার মৃতু্যর খবর নিশ্চিত করেছেন সীমানার ছোট ভাই এজাজ বিন আলী। তার মৃতু্যতে শোকস্তব্ধ তার অভিনেত্রী রুনা খান। তিনি লিখেছেন, '২০১২-১৩তে একটা সিরিজ করতে গিয়ে তোর সঙ্গে প্রথম পরিচয়। একটিমাত্র কাজ হয়েছিল আমাদের একসঙ্গে। এরপর তোর বিয়ে সন্তানদের জন্ম। আমি নিজে সিরিজে কাজ করা বন্ধই করে দেই প্রায়। যোগাযোগ দেখা কিছুই ছিল না তোর সঙ্গে।' এরপর অভিনেত্রী লেখেন, '২১ এর ডিসেম্বরে হঠাৎ তোর টেক্সট-কল। আপু আমার ছোট ভাইয়ের বিয়ে তোমাকে আসতেই হবে। কেনো-কী ভেবে অমন পাগল হয়েছিলি ভাইয়ের বিয়েতে আমাকে নেওয়ার জন্য কে জানে। সব আয়োজনে যেতে না পারলেও, জানুয়ারিতে তোর ভাইয়ের বৌভাতে গিয়েছিলাম।' আরও লেখেন, 'তোর এত ভালোবাসার নিমন্ত্রণ উপেক্ষা করা সম্ভব ছিল না আমার পক্ষে। ২২ সালের ২ জানুয়ারি, তোকে দেখলাম প্রায় ৯-১০ বছর পর। তোর ছেলে দুটোকে দেখলাম। নিজে পাশে দাঁড়িয়ে থেকে দেখলি আমি খাচ্ছি কিনা ঠিকমতোন। মাত্র ২ বছর আগে।' সবশেষে তিনি লিখেছেন, 'আমি কি জানতাম ওটাই তোর সঙ্গে আমার শেষ দেখা। সে জন্যই কি ছোট্ট ছেলেকে কোলে নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থেকে শেষবার খাওয়ালি। আমরা কিছুই জানি না। কোনটা শেষ দেখা, শেষ কথা কিচ্ছু জানি না।' গত ২১ মে রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সীমানা। সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে দ্রম্নত ধানমন্ডির বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে জানতে পারেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরদিন আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য সীমানাকে ধানমন্ডির আরেকটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গেল কয়েকদিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার এই হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। বুধবার বিকাল থেকে সীমানার চিকিৎসা চলছিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সীমানার শারীরিক অবস্থা প্রতিনিয়ত অবনতি হয়েছে। শুরুর দিকে তাকে আইসিইউতে রাখা হলেও বুধবার থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। রোববার সীমানার ভাই এজাজ বিন আলী জানান, 'তার অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। আজ সব চেষ্টা ব্যর্থ করে সীমানা চলে যান না ফেরার দেশে।' ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শোবিজে পা রাখেন সীমানা। এরপর থেকে তিনি নাটক, বিজ্ঞাপনে নিয়মিত কাজ করেন। দেখা গেছে, তৌকীর আহমেদ পরিচালিত বহুল প্রশংসিত ছবি 'দারুচিনি দ্বীপ' এর মতো সিনেমাতেও। কিন্তু হঠাৎ ২০১৬ সাল থেকে অভিনয়ে বিরতি। পরে জানা যায়, মা হওয়ার জন্যই এই বিরতি। দুইবার মা হওয়ার কারণে তার এই দীর্ঘ বিরতি। বিরতি ভেঙে গত বছর আবার নাটকে অভিনয় শুরু করেন। মৃতু্যর সময় তিনি দুই সন্তান রেখে গেছেন। বড় সন্তান শ্রেষ্ঠর বয়স আট বছর, আর ছোট সন্তান স্বর্গ তিন বছর বয়সি। প্রয়াত অভিনেত্রী রিশতা লাবনী সীমানা্থর বাড়ি শেরপুরের নকলায়। সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন এ অভিনেত্রী। তার পিতা সেকান্দার আলী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সীমানা সবার বড় ছিলেন।