আজ তানিয়ার জন্মদিন

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
দেশের জনপ্রিয় মডেল, অভিনেত্রী ও নির্মাতা তানিয়া আহমেদ। মডেলিং দিয়ে শোবিজ অঙ্গনে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা লাভ করেন এই অভিনেত্রী। 'সেকু সিকান্দার' নাটকে মৈরন' ও 'রঙের মানুষ' নাটকে মাঞ্জেলা চরিত্র দুটি তাকে জনপ্রিয়তা পাইয়ে দেয়। পরবর্তীতে তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি গানের ভিডিও পরিচালনায় মনোনিবেশ করেন। আজ এই গুণী অভিনেত্রীর জন্মদিন। ২০০৪ সালে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত 'শ্যামল ছায়া' চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি প্রশংসিত হন এবং শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি হাস্যরসাত্মক 'মেড ইন বাংলাদেশ' ও 'নয় নম্বর বিপদ সংকেত' চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৬ সালে 'কৃষ্ণপক্ষ' চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৭ সালে তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র 'ভালোবাসা এমনই হয়' মুক্তি পায়। তানিয়ার কর্মজীবন শুরু হয় মডেলিং দিয়ে। শুরুতে তিনি মডেলিং করতে চাননি। কিন্তু তার এক বন্ধু তার পুরনো ছবি দেখে তাকে মডেলিং শুরু করতে বলেন এবং তার ছবি আফজাল হোসেনকে দেখান। আফজাল হোসেন তাকে অডিশনের জন্য ডাকেন এবং তিনি অডিশনে নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে তিনি প্রথম আফজাল নির্দেশিত ডায়মন্ড হেয়ার অয়েলের বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করেন। তারপর 'সম্পর্ক' নাটক দিয়ে তার টেলিভিশন পর্দায় অভিষেক হয়। নাটকটি পরিচালনা করেন ফারিয়া হোসেন। নন্দিত নাট্য নির্দেশক সাইদুল আনাম টুটুল পরিচালিত 'সেকু সিকান্দার' নাটকে মৈরন চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তার সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের একটা জায়গা করে নিয়েছেন মিডিয়াতে। এখনো নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন এ অভিনেত্রী। অভিনয়ের পাশাপাশি মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ রিয়েলিটি শোর বিচারক হিসেবেও কাজ করছেন তিনি। সিনেমায় অভিনয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে নাটকে তেমনভাবে কাজ করেতে পারছেন না এ অভিনেত্রী। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে সেখানেই মনোযোগ বেড়ে যায়। গল্প ও চরিত্রের ঘোরের মধ্যেই থাকা হয় আমার। তাই নাটকে সেভাবে মন দেওয়ার সুযোগ হয় না। এছাড়া এখনকার নাটকের গল্প ভালো হয় না। ভিউ নিয়ে চলে মাতামাতি। এসব নাটকে কাজ করা বেমানান। খুব কম শিল্পী নিয়ে কাজ করা হয় এখনকার নাটকে। বয়সেরও একটা ব্যাপার থাকে। তবে ভালো গল্প, চরিত্র হলে আবারও নাটকে দেখা যাবে। ব্যক্তিগত জীবনে তানিয়া আহমেদ সঙ্গীতশিল্পী এস আই টুটুলকে বিয়ে করেন। কিন্তু দীর্ঘ ২৩ বছরের দাম্পত্য জীবনের পথচলার ইতি ঘটেছে তাদের। তবে এ বিষয়ে বেশ চুপচাপ ছিলেন অভিনেত্রী তানিয়া। দীর্ঘদিন পর বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে একটি গণমাধ্যমে কথা বলেছিলেন এ অভিনেত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সেই কথা বলার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছিল। ভিডিও সাক্ষাৎকারে তানিয়া আহমেদ বলেন, 'বাস্তব জীবনে আবেগটা অন্যরকম। প্র্যাকটিক্যাল লাইফে এটা কঠিন। এটা যখন জীবনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে তখন মনে হয়েছে একটু একটু করে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো একটা জায়গায় গিয়ে মেলেনি। মানুষ বলবে তানিয়া আপা এমনিতেই আপনার একটা পাস্ট লাইফ ছিল। এখন আবার কেন। সাধারণত মেয়েরা এই সাহসই করে না। কিন্তু লাভ হয়নি।' অভিনেত্রী বলেন, 'সত্য কথা বললেই একজনের চলাচলটা সহজ হয়ে যাবে। তখন অনেক কিছুই করা যায় না। সত্য কথা বললে চুরি করতে পারবে না, উল্টাপাল্টা কিছু করতে পারবে না, করলেও ঝামেলা হয়ে যাবে। প্রতিনিয়ত যে মানুষটার সঙ্গে আমার সমস্যা চলছে, একসময় মনে হয়েছে দুজনের মধ্যে মনের মিল না থাকার চেয়ে মনে হয় সত্য ভাষণটাই জরুরি দরকার।' সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি ফাটল ধরে টুটুল ও শারমিন সিরাজের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ানোর পর। এবারের দূরত্বটা কঠিনভাবে বুঝতে পারেন তানিয়া। সেই সময় তানিয়া চেষ্টা করেও টুটুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। বুঝতে পারেন, টুটুল তাকে বস্নক করে রেখেছেন। তারপরও একের পর এক তিনি এসএমএস দিয়েছেন। পরে তার কাছে মনে হয়েছে টুটুল তাকে ছাড়া থাকতে চায়। তার মতোই তাকে থাকতে দেয়া দরকার। সেই সময়ই তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেন, তাদের সম্পর্ক হয়তো আর থাকছে না। তানিয়া বলেন, 'যেদিন মনে হয়েছে টুটুল আমার সঙ্গে থাকতেই চায় না, সেদিনই আমি টুটুলকে সবকিছু থেকে বস্নক করে দিই। আমাদের সন্তানরা সেখানে আছে। এখন আমার বাচ্চারাই ফোন দেয়। তাদের সঙ্গে কথা হয়। আমি চাই না বাচ্চারা অসম্মান করা শিখুক। তাদের বাবাকে অসম্মান করুক চাই না। তবে এই বস্নক আর কোনো দিন খুলব না। আমি যে টুটুলকে বিয়ে করেছিলাম সেই টুটুলকেই চেয়েছি, এস আই টুটুলকে চাইনি।' তানিয়ার কথায় উঠে আসে, টুটুলের জনপ্রিয়তার পর থেকেই তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে মান-অভিমান চলত। সেই আগের এস আই টুটুলকে চাইতেন তানিয়া। এ প্রসঙ্গে তানিয়া বলেন, 'টুটুল আমার ওপর খেপে গিয়েছিল। ও আমাকে বলত, 'আমার সাকসেস তোমার সহ্য হচ্ছে না।' তার সাকসেস নাকি আমার সহ্য হচ্ছে না। ও আমার ভালোবাসার জায়গাটা বুঝতেই পারল না। আমি জীবনে একটা উইশ পাইলে বলতাম, তুমি সেই আগের এস আই টুটুল হয়ে যাও।' তানিয়া কথা প্রসঙ্গে আরও জানান, এমন একটা সময় তাদের বিয়ে হয়, যখন এস আই টুটুল তেমন কিছুই করতেন না। ক্যারিয়ার শুরু হচ্ছে। তখন টুটুল একটু একটু করে টাকা জমিয়ে তানিয়ার জন্মদিনে বা প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে উপহার দিতেন। কখনো ছোট্ট একটা কানের দুল। তানিয়া আফসোস করে বলেন, 'আমার কাছে ওই গিফটটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরে যখন এস আই টুটুল হয়ে গিয়েছে, তখন হয়তো ডায়মন্ডের কিছু দিয়েছে কিন্তু সেই উপহার দেওয়ার প্রক্রিয়াটা আলাদা হয়েছে। কথার টোন আলাদা হয়েছে। আস্তে আস্তে টুটুল বদলে গিয়েছে।'