শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

অভিনয়ে শাকিব খানের ২৫ বছর

বিনোদন রিপোর্ট
  ২৯ মে ২০২৪, ০০:০০
অভিনয়ে শাকিব খানের ২৫ বছর

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগৎ একটা সময় বেশ জমজমাট ছিল। কোটি কোটি টাকা লগ্নি হতো, আবার সেই টাকা লাভ সমেত উঠেও আসতো। যেমন মানসম্পন্ন সিনেমা নির্মিত হতো, তেমনি ইন্ডাস্ট্রিজুড়েও ছিলেন অনেক তারকা। যাদের সিনেমা দেখার জন্য সিনেমা হলে দর্শকদের ভিড় লাগতো।

তবে ২০০৭ সালের পর থেকে এই ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রির দায়িত্ব যেন একাই কাঁধে বয়ে আছেন শাকিব খান। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকা দেশের চলচ্চিত্রকে তিনি একাই বাঁচিয়ে রেখেছেন। মাঝে মধ্যে 'ঝড়ে বক মরা'র মতো হাতেগোনা কিছু সিনেমা সফল হয়েছে। তবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি কেউই। অন্য কোনো নায়ক মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারলেও শাকিব একের পর এক ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়ে চলেছেন। তার সিনেমা দেখার জন্য সিনেমা হলে হাউসফুল শো হয়। প্রযোজকরা পান লগ্নি করার সাহস।

গত এক দশকের বেশি সময় ধরে শাকিব খান একাই রাজত্ব করছেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে। ঢাকাই সিনেমার কিং খান, সুপারস্টার কিংবা ভাইজান; সবই তিনি। শুধু তাই নয়, গেল দু'তিন বছরে তিনি ওপার বাংলায়ও দারুণ অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। সেখানেও তৈরি হয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা।

অভিনয়ে শাকিব খানের ২৫ বছর। গতকাল ক্যারিয়ারের ২৫ বছর পূর্ণ করলেন তিনি। অভিনয়ের দুই যুগ পার করা এই নায়ক পার করছেন দারুণ সময়। যে সময়ের জন্য একদিন তিনি স্বপ্ন দেখতেন, যে স্বপ্ন তাকে ঘুমুতে দিত না। নারায়ণগঞ্জ থেকে এফডিসি, এফডিসি থেকে কাকরাইল, পরিচালকদের দুয়ারে দুয়ারে হানা- সবই করেছেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি রাজ করছেন এ অঙ্গন।

১৯৯৯ সালে সোহানুর রহমান সোহানের 'অনন্ত ভালোবাসা' সিনেমার হ্যাংলা-পাতলা ছেলেটাই একদিন চলচ্চিত্রে রাজ করবেন- এমনটা কেউ ভাবেননি। সাফল্য ও দর্শকপ্রিয়তার বিচারে শাকিব খানের ধারে-কাছেও কোনো নায়ককে পাওয়া যাবে না।

চলচ্চিত্রে শাকিবের পথচলা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে 'সবাইতো সুখী হতে চায়' সিনেমার মাধ্যমে। আফতাব খান টুলু পরিচালিত এই সিনেমার মাধ্যমে তিনি প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এতে তার বিপরীতে ছিল আরেক নবাগতা কারিশমা শেখ। তবে শাকিব খান অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত 'অনন্ত ভালোবাসা' এটি মুক্তি পায় ১৯৯৯ সালের ২৮ মে।

এই সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন সেই সময়কার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমীর ছোট বোন ইরিন জামান। দু'জনেরই এটি ছিল প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। সিনেমা হিসেবে 'অনন্ত ভালোবাসা' খুব একটা সফল না হলেও নায়ক হিসেবে শাকিব খান সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যার সুবাদে পরের বছরেই তিনি সে সময়ের শীর্ষ অভিনেত্রী শাবনূরের বিপরীতে ইস্পাহানী-আরিফ জাহান পরিচালিত 'গোলাম' (২০০০) সিনেমায় সুযোগ পান। এই সিনেমার মাধ্যমেই তিনি আলোচনায় আসেন।

গড়পড়তা নিয়মে শাকিব খান প্রায় ৮ বছর পার করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তার সফল সিনেমার সংখ্যা হাতেগোনা। তার একচেটিয়া সফলতা শুরু হয় ২০০৬ সালে 'কোটি টাকার কাবিন' সিনেমার মাধ্যমে। এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথম অভিনয়ে আসেন অপু বিশ্বাস। এরপর শাকিব খান-অপু বিশ্বাস জুটি একটানা প্রায় ৯ বছর সফলতার সঙ্গে কাজ করেন। তাদের জুটির প্রায় সবগুলো সিনেমাই হয়েছে ব্যবসা সফল। অপু বিশ্বাস ছাড়াও শাকিব খান অন্য নায়িকাদের নিয়ে কাজ করেছেন। সেসব সিনেমাও হয়েছে দর্শকনন্দিত।

শাকিব খানকে বলা হয়ে থাকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পাওয়া নায়ক। এমনকি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে একটানা শীর্ষ স্থান ধরে রাখা নায়ক তিনি। শুধু তাই-ই নয়, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাও তিনি।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শাকিব খান কোটি কোটি দর্শকের ভালোবাসা ছাড়াও পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। এর মধ্যে ৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ৮টি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার, ১টি লাক্স চ্যানেল আই পারফরম্যান্স পুরস্কার, তিনটি বাচসাস ও চারটি সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে