নতুন নির্বাচন দাবি করে নিপুণের রিট

প্রকাশ | ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
আবারও রিট করলেন নিপুণ। গত মেয়াদে মিশা-জায়েদ প্যানেলের বিরুদ্ধে রিট করে গোটা দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছেন। হাল ছাড়েননি নিপুণ। একবার তো বিজয়ের দাবি করে জায়েদ খান তালা ভেঙে অফিসের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন। কিন্তু নিপুণ সেই আইনি মামলায় জয়লাভ করে অতঃপর সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন। সেবারের নির্বাচনের তবু একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। আসরের জমজমাট পরিস্থিতি আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। তাতে বোঝা গিয়েছিল সে নির্বাচনে ভোটের উৎসব ঘটেছিল। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তার কোনো ছিটেফোঁটাও হয়নি। রীতিমতো ভূমিধস বিজয় সাধিত হয়েছে মিশা-ডিপজলের প্যানেলের। সভাপতি পদে মাহমুদ কলি তো বিশাল ব্যবধানের হেরেছেন। কিন্তু তাতেও একটা প্রশ্ন রেখে যায় প্রায় সব নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় সাধিত হলো কিন্তু সাধারণ সম্পাদক পদটিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলো কেন? তার ওপর সেখানে নিপুণের হাতে গোনা ক'টি ভোট বাতিল না হলে সেখানে তারই হয়তো নির্বাচিত হওয়ার কথা। তবে কি এটা সাজানো ছকে নির্বাচন! নিপুণ কি এতগুলো ভোট পেয়েছেন তার প্রকৃত ভোটাদের তরফেই নাকি তাতে রয়েছে অন্য কিছু! প্রকৃত ভোটারদের যদি হয় তাহলে কয়েকটি ভোট বাতিল হলো কেন? বরং সেদিন নিপুণ আক্তার সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছিলেন, 'ডিপজল ভাইয়ের মতো জনপ্রিয় কারও কাছে এত কম ব্যবধানে হেরে যাওয়া এবং এ ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তার জন্য সম্মানজনক।' অথচ যেখানে জায়েদ খানের সঙ্গে ১৩ ভোটে হেরে যাওয়াটা মেনে নিতে পারলেন না আর ডিপজলের ১৬ ভোটে হেরে যাওয়াটা সম্মানের হয়ে গেলো! অতঃপর নিপুণ আর কালবিলম্ব করলেন না। বিলম্বে হলেও সহসাই তার বোধোদয় ঘটল। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির (২০২৪-২৬) মেয়াদি নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে নতুন নির্বাচন দাবি করে রিট করেছেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তার। বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে নিপুণের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায় এ রিট আবেদন করেন। রিটে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। আইনজীবী পলাশ চন্দ্র রায় জানান, কিছু অনিয়ম ও জালজালিয়াতির অভিযোগ এনে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের কাছে আবেদন করেছিলেন নিপুণ আক্তার। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই তিনি ১৪ মে হাইকোর্টে রিট করেছেন। আবেদনে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল, নতুন নির্বাচন, অনিয়মের অনুসন্ধান এবং নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। এতে সমাজ কল্যাণ সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, সংস্কৃতি সচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ভলান্টারি সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এজেন্সি, ঢাকার কর্তৃপক্ষ, শিল্পী সমিতি নির্বাচনের আপিল বোর্ড, শিল্পী সমিতির নির্বাচন কমিশন, মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে বিবাদী করা হয়েছে। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফল ঘোষণা হয় শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে। ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু। এতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন জনপ্রিয় অভিনেতা এবং বিগত দুই মেয়াদের সফল সভাপতি মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন চলচ্চিত্রের মুভি লর্ড ও দানবীর খ্যাত অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। নির্বাচনে সভাপতি মিশা সওদাগর মোট ভোট পান ২৬৫টি। অন্যদিকে মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত ডিপজল পান ২২৫ ভোট। ১৬ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হন নিপুণ আক্তার (২০৯)। সহসভাপতি পদে ২৩১ ও ২৩৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয় মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডিএ তায়েব। এ ছাড়া সহসাধারণ সম্পাদক আরমান ২৩৭, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী ২৫৫, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো ২৯৬, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর ২৪৫, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ২৩৫ এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল ২৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। কার্যনির্বাহী সদস্যপদে মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয় ৯ জন। তারা হলেন সুচরিতা (২২৮), রোজিনা (২৪৩), আলীরাজ (২৩৯), সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন (২১৮), শাহনূর (২৪৫), নানা শাহ (২১০), রত্না কবির (২৬৩) ও চুন্নু (২৪৮)। কলি-নিপুণ পরিষদ থেকে রিয়ানা পারভিন পলি (২২০) ও সনি রহমান (২৩০) জয়ী হন। উৎসবমুখর পরিবেশে ৪৭৫ জন শিল্পী ভোট দেন। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫৭০ জন। ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে ৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।