ফের একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় তিন কন্যার

প্রকাশ | ১২ মে ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন প্রতিবেদক
কোহিনূর আক্তার সুচন্দা, ফরিদা আক্তার ববিতা ও গুলশান আরা চম্পা। এই ত্রিরত্ন বাংলাদেশের সিনেমার গর্ব। সুচন্দা ও ববিতা দীর্ঘদিন নতুন কোনো সিনেমায় অভিনয় করছেন না। চম্পা মাঝেমধ্যে অভিনয় করেন সিনেমা ও নাটকে। তিনিও খুব বেশি নিয়মিত নন। তবে কোনো বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে তিন বোনকে একসঙ্গে দেখা যায়। সর্বশেষ শিল্পী সমিতির নির্বাচনে তাদের তিন বোনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। তারা ভোট দিতে বিএফডিসিতে গিয়েছিলেন। সুচন্দা, ববিতা ও চম্পাকে একসঙ্গে প্রথম শিবলী সাদিক পরিচালিত 'তিন কন্যা' সিনেমাতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। সুচন্দা বলেন, 'মূলত আমার আব্বার স্বপ্ন ছিল যেন আমরা তিন বোন একসঙ্গে সিনেমাতে অভিনয় করি। এ কারণেই শিবলী ভাইয়ের নির্দেশনায় তিন কন্যা সিনেমাতে অভিনয় করা।' তবে 'তিন কন্যা'র পর তাদের তিন বোনের একসঙ্গে একই সিনেমায় আর অভিনয় করা হয়ে ওঠেনি। সুচন্দার প্রযোজনা সংস্থা থেকে নির্মিত সিনেমা 'বাসনা'তে ববিতা ও চম্পা একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। বাংলাদেশের সিনেমার গর্ব এই তিন বোনকে নিয়ে মাঝে দু-একজন নির্মাতা একসঙ্গে সিনেমা নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এই তিন বোন প্রত্যাশা করছেন সিনেমা না হোক অন্তত তাদের নিয়ে কোনো তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হোক। এ বিষয়ে ববিতা বলেন, 'আমরা তিন বোনের আগ্রহ আছে, অবশ্যই ভালো গল্প পেলে সিনেমাতে অভিনয় করব। কিন্তু এখন কেন যেন মনে হয়, এটা আর সম্ভব নয়। তবে তথ্যচিত্র বা ডকুমেন্টারির কথা যদি বলি, সেটাও অনেক গবেষণা করে একদম শতভাগ মনোযোগ দিয়ে কাজটি করতে হবে। তিনজনের একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যচিত্র যদি থেকে যায়, তবে আগামী প্রজন্মের জন্য তা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। জানি না, এ তথ্যচিত্রটিও করা হবে কি না।' সম্প্রতি ববিতা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আবারও তিনি অভিনয়ে ফিরতে চান। দর্শকরা তাকে আবারও পর্দায় দেখতে পাবে এমন আশার কথাই শোনালেন তিনি। ববিতা বলেন, 'আমাকে কেন্দ্র করে গল্প তৈরি করা হলে অবশ্যই অভিনয় করব। অভিনয়কে আমি কখনোই বিদায় বলতে পারি না।' ববিতা আরও বলেন, 'এখন যেসব চরিত্রের জন্য আমাকে বলা হয়, এগুলো করতে আমি অভ্যস্ত নই। মাঝে শাকিব খানের একটি সিনেমার জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সিনেমার শুটিং আমেরিকা, কানাডায় নাকি হওয়ার কথা ছিল। আমি নিষেধ করে দিয়েছি। শুধু মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে চাই না। কেউ যদি আমাকে কেন্দ্র করে গল্প তৈরি করে, তাহলে অবশ্যই অভিনয় করব। কারণ পাশের দেশগুলোতে দেখেন, অমিতাভ বচ্চন এ বয়সেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন। শ্রীদেবী মৃতু্যর আগেও প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু আমাদের দেশে এ চর্চাটা নেই। সবাই মনে করে বয়স হয়ে গেলেই নায়কের বাবা-মার চরিত্র ছাড়া আমাদের আর কোনো চরিত্র নেই। তাই আমি সিনেমায় নেই। ভালো এবং মনের মতো গল্প হলে অবশ্যই সিনেমায় আমাকে দেখবে দর্শক।' ববিতা দেশে ফিরে পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটান। নিজের ভাইয়েরা ও তাদের ছেলেমেয়ে, বোনের ছেলেমেয়ে সবাইকে নিয়ে সুন্দর সময় কাটছে তার। তিনি বলেন, 'অনেক বছর পর দাদাবাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা একটি মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি ভাইবোনরা মিলে। এছাড়া বাপ-দাদার মাটিতে পা দিলে যে শান্তি, সেই শান্তি পৃথিবীর কোথাও নেই। কারণ এখনো বাড়িতে গেলে আশপাশের লোকজন, আত্মীয়স্বজনের কাছে যেভাবে ভালোবাসা পাই, তাতেই হৃদয় জুড়ে যায়। এখন দেশে এভাবেই সময় কাটছে।' উলেস্নখ্য, ববিতাকে শেষবার দেখা গেছে নারগিস আক্তারের 'পুত্র এখন পয়সাওয়ালা' সিনেমায়। চম্পা বলেন, 'আমার কাছে মনে হয় যে এখনই সময় আমাদের তিন বোনকে নিয়ে যথাযথভাবে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের। আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আমার দুই বোন সুচন্দা আপা ও ববিতা আপার যে অবদান আছে তা আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই অনেক গবেষণার পর একটি পারফেক্ট তথ্যচিত্র নির্মাণ এখন সময়েরই দাবি। আমার বিশ্বাস, যদি স্ক্রিপ্ট পছন্দ হয় এবং যথাযথ গবেষণাও আমার দুই বোনের পছন্দ হয়, তাহলে তারা তাতে সম্মতি দেবেন। কিন্তু কে নেবে এই উদ্যোগ। জানা নেই আমারও।'