ছোট পর্দার আলোচিত অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। নাম লেখিয়েছেন বড় পর্দায়ও। ব?্যক্তিগত জীবনে বেশ স্বাধীনচেতা এ অভিনেত্রী। অভিনয়ের পাশাপাশি কবি ও লেখক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, ভালো ছবিও আঁকেন এই অভিনেত্রী। ভাবনা একজন প্রাণিপ্রেমী হিসেবে পরিচিত। নিজে যেমন বাসায় পোষ্য লালন-পালন করেন, আবার পথেঘাটে পড়ে থাকা প্রাণীর প্রতিও তার মায়া-মমতার ছাপ পাওয়া যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ সরব আশনা হাবিব ভাবনা। কাজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত নানা অনুভূতির কথা প্রকাশ করতে এ মাধ্যমকে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু সোশ্যালে সব নেটিজেনদের চিন্তাভাবনা এক দেখা যায় না। কেউ সাধারণ কোনো বিষয়কে সহজভাবে গ্রহণ করে, আবার কেউ নেতিবাচকভাবে মন্তব্য করে থাকেন।
দিন কয়েক আগে নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে একটি ছবি পোস্ট করেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। যেখানে দেখা যায়, একটি পিকআপ ভ্যানে কয়েকটি গরু। ছবিটির ক্যাপশনে ভাবনা লেখেন, 'আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে!'
এটি পোস্ট দেওয়ার পর রীতিমতো তোপের মুখে পড়েছেন ভাবনা। যদিও তিনি পোস্টের কমেন্টবক্স বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু নিস্তার মেলেনি। হাজারো নেটিজেন শেয়ার করে তাকে নানা মন্তব্যে তুলোধোনা করছে। বিষয়টি নিয়ে ক'দিন চুপ থাকার পর অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভাবনা।
তিনি বলেছেন, "আমি মাঝে মাঝেই ছবি তুলতে পছন্দ করি। যখন কোনো দৃশ্য আমাকে ভাবতে বাধ্য করে, সেটা মাঝে মাঝে ফেসবুকেও শেয়ার করি। আমার একটি ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি পিকআপ ভ্যানে রোদে দাঁড়িয়ে একটি গরু, তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। সে দিন ছিল তীব্র দাবদাহ, গরমে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে অবলা প্রাণীটি ভীষণভাবে কাঁদছিল। বোবা প্রাণের কান্না আমাকে ছুঁয়ে যাচ্ছিল। ছবি তুলে আমার অনুভূতি প্রকাশ করি আমি। ছবিটির ক্যাপশন দিয়েছি 'আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে!' ব্যাস এতটুকুই! তারপর কিছু মানুষ শুরু করলেন আমাকে হেয় করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখতে শুরু করলেন আমি চামড়ার ব্যবসায়ী! আমি নিজে একটা গাভী! আমাকে লাথি মারতে মারতে ইন্ডিয়া পাঠানো উচিত! আরও কত নোংরা নোংরা কথা!"
ভাবনার মতে, তিনি কেবল অবলা প্রাণীর প্রতি মায়া থেকে কথাটি বলেছেন। এখানে কোনো বিদ্বেষ কিংবা গরুর মাংস খাওয়ার বিরোধিতা করেননি। তার ভাষ্য, 'আমি কোথাও লিখিনী গরুর মাংস খাই না, বা বলিনি আপনারা গরুর মাংস খাবেন না। একটা প্রাণীর কান্না দেখে যে কেউ কেঁদে উঠতে পারেন এটাই স্বাভাবিক। আর আমি প্রকৃতিপ্রেমী বা প্রাণিপ্রেমী কিনা সেটার প্রমাণ আমি কোথাও দেব না। আমার ফেসবুকের একটি পোস্টেই তো আর প্রমাণ হবে না আমি কে?'
সবশেষে শিল্পীসুলভ অভিমান প্রকাশ করলেন ভাবনা। বললেন, 'অবশ্যই এই ছবিটি নিয়ে আমি আরও লিখব, হয়তো কোনো কবিতায় বা গল্পে বা অন্য কোথাও অথবা আমার পরবর্তী ক্যানভাসে। শিল্পীর বেদনা গুরুত্বপূর্ণ, ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমার দিকে ছুড়ে দেওয়া সব তীর আমি সাদরে গ্রহণ করলাম।'
ভাবনার এই ব্যাখ্যায় কারও কারও বোধোদয় হয়েছে বটে। কিন্তু অনেকেই এখনো তার সমালোচনায় মেতে আছে। তবে তারাও বিষয়টিকে উপলব্ধি করে সহজভাবে নেবেন বলে প্রত্যাশা এই অভিনেত্রীর।