সব সময় ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিই :ফারিণ
প্রকাশ | ০৪ মে ২০২৪, ০০:০০
বিনোদন রিপোর্ট
অভিনয় প্রতিভা দিয়ে অল্প সময়েই আলোচনায় আসেন তরুণ অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। শুরু থেকেই তিনি চেষ্টা করেছেন গল্প ও চরিত্র বাছবিচার করে অভিনয়ে নাম লেখাতে। সব সময় চরিত্র ও গল্পে নতুনত্ব খুঁজতেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায়ই হাঁটছেন এই অভিনেত্রী।
তবে ক্যারিয়ারের এই সুসময়ে মাঝেমধ্যে বাধারও সম্মুখীন হতে হয় তাকে। কারণ ভালো গল্প বাছাই করতে গিয়ে পরিচিত অনেককেই 'না' বলতে হয়। আর এই 'না' বলার কারণে নাকি মিডিয়ায় তার শক্র দিন দিন বাড়ছে।
২০২০ সালের দিকে টেলিভিশনে নাটক দিয়ে আলোচনায় আসেন ফারিণ। সেবার ঈদুল ফিতরের পর এই অভিনেত্রীকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। শিহাব শাহীন, মিজানুর রহমান আরিয়ানসহ জনপ্রিয় নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। টেলিভিশনে দারুণ সূচনার পর তিনি নাম লেখান ওটিটি ও সিনেমায়। সেখানেও ছিল চমক। শুরুতেই মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ওয়েব সিরিজ 'লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলমেন' দিয়ে ওটিটি দুনিয়ায় পা রাখেন। সেখানেও এই অভিনেত্রী সফল।
ফারিণ কলকাতার সিনেমা 'আরও এক পৃথিবী'তে নাম লিখিয়ে দুই বাংলার দর্শকের আলোচনায় আসেন। সিনেমাটিতে তিনি পরিচালক হিসেবে পেয়েছিলেন নন্দিত নির্মাতা অতনু ঘোষকে। ছবিতে তার সহশিল্পী ছিলেন কৌশিক গাঙ্গুলি, অনিন্দিতা বোসরা। সিনেমায় অভিনয় তাকে এ বছর এনে দিয়েছে ভারতের ফিল্মফেয়ারের পুরস্কার। সেখানে সেরা নবাগত অভিনেত্রীর পুরস্কার জয় করেন ফারিণ।
এ ছাড়া ওটিটি দুনিয়ায় 'সিন্ডিকেট', 'নিঃশ্বাস', 'কারাগার', 'পুনর্মিলনে', 'অসময়', 'কাছের মানুষ দূরে থুইয়া'তে নাম লিখিয়েছেন। প্রতিবারই দর্শকের কাছে নতুন করে হাজির হয়েছেন এই অভিনেত্রী।
এ জন্য ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে ফারিণকে। দর্শকের ভালোবাসা পাওয়ার পর থেকেই শিখতে হয়েছে 'না' বলা। তিনি চাননি গড়পড়তা কোনো কাজ করতে বা নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাধ্য হয়ে কোনো কাজে নাম লেখাতে।
যে কারণে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই বুঝেশুনে নিতে হয়েছে। এমনকি এ জন্য দিনের পর দিন ধৈর্য ধরতে হয়েছে। ফারিণ বলেন, 'আমি অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিই। চরিত্র ও গল্পে এমন কী নতুনত্ব আছে, যা আমার জন্য নতুন, আমার ক্যারিয়ারে কী প্রভাব ফেলবে, এসব লক্ষ করতে হয়।'
অনেক সময় কোনো চিত্রনাট্য পছন্দ না হলে কাজটি করতে রাজি হন না ফারিণ। ঠিক তখন অনেকেই তাকে ভুল বোঝেন। এই 'না' নিয়ে কারও কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হয়।
এ প্রসঙ্গে ফারিণ প্রথম আলোকে বলেন, ''না তো করতেই হবে। 'হঁ্যা' বলার চেয়ে 'না' বেশি বলতে হয়। আমার কোনো প্রজেক্ট পছন্দ না হলে সেটা তাদের বলি। শিল্পী হিসেবে বলতে হয়। এটা নিয়ে আমি স্ট্রেইটকাট। সরাসরি কথা বলার কারণে আমার শত্রম্ন বেশি। কারণ অনেকেই মন খারাপ করেন। কেউ কেউ মাঝেমধ্যে অন্যভাবে নেন। এগুলো তো আমার ক্যারিয়ারের জন্য বলতে হয়। কিছু করার নেই।''
ফারিণ আরও বলেন, 'আজ যদি আমার ক্যারিয়ার না থাকে, তখন তারা কেউ তো আমাকে ডাকবেন না। সে জন্য নিজেরটা নিজেকেই বুঝতে হবে। এখানে আমার কোনো ব্যাকআপ নেই। পুরোটাই আমি নিজের চেষ্টায়, একা এসেছি। এ জন্য আমার ভালোটা আমাকেই বুঝতে হয়।
তাসনিয়া ফারিণ অভিনয়ের পাশাপাশি গানেও বেশ পারদর্শী। সম্প্রতি তারই প্রমাণ মিলল গেল ঈদে ইত্যাদিতে তার গাওয়া 'রঙে রঙে রঙিন হব'। প্রথম গানেই বাজিমাত করেছেন ফারিণ। অন্যদিকে গানে অভিনেত্রীর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও গায়ক তাহসান খান। গানের জগতে জনপ্রিয়তার কোনো জুড়ি নেই তার। তবে নায়িকা থেকে গায়িকা ফারিণ যেন প্রথম গানেই নজর কাড়লেন শ্রোতা-দর্শকদের। শুধু তাই নয়, বর্তমানে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে রয়েছে তাহসান-ফারিণের 'রঙে রঙে রঙিন হব'। ইত্যাদিতে গানটি প্রচারের পর গত ১৬ এপ্রিল ইউটিউবে মুক্তি পায়। এরপরই যেন গানটি লুফে নেন শ্রোতারা।
এ প্রসঙ্গে ফারিণ বলেন, আমি কিন্তু নায়িকার আগে গায়িকা। যশোর থেকে ঢাকায় এসেও গানের চর্চা করেছি। দিনের পর দিন গান শিখেছি। জাতীয়, বিভাগীয় পর্যায়ে গান করেছি। গান গেয়ে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু অভিনয়ের কারণে গানের প্রতিভা এতদিন কেউ জানতে পারেনি।
মূলত দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মায়ের ইচ্ছাতেই অনেকটা জোর করেই গান শেখানো হয় ফারিণকে। মায়ের আগ্রহেই শিক্ষকের কাছে গান শিখতে শিখতে গানের প্রেমে পড়ে যান তিনি।