নায়ক থেকে নেতা হয়েছেন ফেরদৌস আহমেদ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১০ আসন থেকে জয়লাভ করেছেন। এরপর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন সক্রিয়ভাবে। তবে শিল্প-সংস্কৃতির মানুষ হিসেবে এই অঙ্গনের জন্য বিশেষভাবে কাজ করতে চান তিনি। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে এমন কথা জানান অভিনেতা।
অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছিল কিংবদন্তি রবীন্দ্র সঙ্গগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ স্মরণে। যিনি গত ১৩ মার্চ না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তার সঙ্গে ফেরদৌসের পারিবারিক, আত্মীক সম্পর্ক ছিল। তাই প্রিয় মানুষটির স্মরণ সভায় ছুটে এসেছেন ব্যস্ততা ভুলে।
ফেরদৌস আক্ষেপ করে বলেন, 'আমার খুব ইচ্ছা ছিল রবীন্দ্র সরোবরে সাদি ভাইকে নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করব। ভাবতেই পারিনি, এর আগে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে হবে! তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। তিনি যে অতৃপ্তি নিয়ে চলে গেছেন, সেটা যেন আমাদের সকলের মাধ্যমে পূরণ হয়। ওনার ছাত্র-ছাত্রী যারা আছেন, আপনাদের মাধ্যমে তিনি বেঁচে থাকবেন। আপনারা যদি তার শিক্ষাকে ভালোভাবে কাজে লাগান, তবেই তার আত্মা শান্তি পাবে।'
ঢাকাই সিনেমার সফল এই নায়ক মনে করেন, দেশে প্রকৃত শিল্পীদের মূল্যায়ন হয় না। তার ভাষ্য, 'আমাদের দেশে যারা প্রকৃত শিল্পী, তাদেরকে আমরা মূল্যায়ন করি না, বা পারি না। আমরাই ব্যর্থ। আজকে যদি এসব কথা বলার সময় সাদি ভাই পাশে থাকতো, তবেই সেই মূল্যায়নটা হতো। কিন্তু এটা হয় মৃতু্যর পর।'
ফেরদৌস জানান, তিনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর সেরে এসেছেন। সেখানে দেশের অনেক শিল্পীকে দেখেছেন, যারা নানা অভিমান নিয়ে দেশ ছেড়েছেন। এরকমটা যেন ভবিষ্যতে না হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে চান তিনি। ফেরদৌস বলেন, 'আমরা শিল্পীরা যদি একে-অন্যের পাশে না দাঁড়াই, তাহলে এভাবে সাদি ভাইয়ের মতো আরও অনেকে হারিয়ে যাবেন। এই হারিয়ে যাওয়া মানে শুধু মারা যাওয়া না, ছিটকে যাওয়া, দূরে সরে যাওয়া। শিল্পের স্বার্থে আমরা একত্রিত হয়ে কাজ করব। আমি আপনাদের সবার পক্ষ থেকে আমাদের (শিল্পীদের) সমস্যাগুলো সংসদে চিহ্নিত করতে চাই। সেগুলোর সুস্থ-সুন্দর সমাধান করতে চাই। আমাদের মহান শিল্পীরা যেন এভাবে হারিয়ে না যায়। সাদি ভাইয়ের এই চলে যাওয়া আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেছে। এরকম কিছু যেন আর না ঘটে। আমি শিল্প ও শিল্পীদের জন্য কিছু করতে চাই। যদি পারি, তবেই ভাববো আমার জীবন সার্থক।'
সাদি মহম্মদ স্মরণে এই স্মৃতি-কথা-গানের অনুষ্ঠান করেছে তারই গড়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠান 'রবিরাগ'। এতে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি আমিনা আহমেদ, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, সাদির ছোট ভাই শিবলী মহম্মদসহ শিল্প-সংস্কৃতি আঙিনার অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।