বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটারদের টাকা দেওয়ার অভিযোগ এলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে নোটিশ দিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ভোটের একদিন আগে বৃহস্পতিবার মিশা-ডিপজল পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ডিপজলের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন মাহমুদ কলি-নিপুণ আক্তার পরিষদের সদস্য পদপ্রার্থী সাদিয়া মির্জা।
অভিযোগের সঙ্গে দ্বি-বার্ষিক এ নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরুর কাছে প্রমাণ হিসেবে পেনড্রাইভের একটি ভিডিও সরবরাহ করেছেন অভিযোগকারী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার খসরু এ বিষয়ে বলেন, মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বিরুদ্ধে নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের দুই ও তিন নম্বর অভিযোগ এনেছেন সাদিয়া মির্জা।
'আমাদের কাছে অভিযোগকারী পেনড্রাইভের একটা ভিডিও দিয়েছে। আমাদের কাছে ভিডিওটি আছে, যেখানে টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়টি আমরা পেয়েছি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ডিপজলকে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। আমরা চিঠি দিয়েছি, ৬ ঘণ্টার মধ্যে তার কাছে উত্তর েেচয়েছি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য। এ বিষয়ে তার ব্যাখ্যা পেলে নির্বাচন কমিশন বসে একটি সিদ্ধান্ত নেব।'
শিল্পী সমিতির নির্বাচনি নীতিমালার দুই ও তিন নম্বরে বলা আছে, কোনো ভোটারকে ভোট দেওয়া বা প্রচারণা করার জন্য অবৈধভাবে টাকা লেনদেন করা যাবে না বা টাকা-পয়সা দিয়ে ভোটের প্রতিশ্রম্নতি নেওয়া যাবে না।
গতকাল সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। নির্বাচনে দু'টি প্যানেল থেকে ২১টি পদে মোট ৪২ জন প্রার্থী হয়েছেন। এবার ভোটার আছেন ৫৭০ জন।
নির্বাচনকে ঘিরে পুরো এফডিসিই ছেয়ে গেছে পোস্টার আর তারকা প্রার্থীদের বড় বড় ছবিতে। এই নির্বাচন ঘিরে শিল্পী, নির্মাতা, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের আনাগোনায় বিকালটা বিএফডিসি থাকছে মুখরিত। এর মধ্যেই এক প্যানেলে সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এলো।
এক প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনের প্রধান খসরু বলেন, 'যদি অভিযোগের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, ভোট পাওয়ার জন্য টাকা লেনদেন হচ্ছে প্রমাণিত হলে আমাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে তার প্রার্থিতা বাতিল করা।'
তবে ভোটের জন্য টাকা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ডিপজল বলেছেন, বিষয়টি তিনি জানেন না। তার দাবি, এটা 'মিথ্যা ও বানোয়াট' অভিযোগ। তিনি বলেন, 'আমি এই অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে পারি না। আমি এই ব্যাপারে জানিও না। আমি কিছু শুনিনি। আমাকে কারণ দর্শানোর কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি, আমি হাতে পাইনি।'
'এমন কোনো অভিযোগ আমার নামে হয়ে থাকলে সেটা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। নির্বাচনের মাঠে থাকব, ইনশালস্নাহ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।' নোটিশ না পাওয়া এবং অভিযোগের বিষয়ে ডিপজল 'অবগত নন'- এ বিষয়ে জানতে চাইলে খসরু বলেন, 'আমরা ডিপজলকে নোটিশ দিয়েছি কিন্তু উনার সঙ্গে সরাসরি আমাদের কথা হয়নি।'
সবশেষ ২০২২-২৪ মেয়াদে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এ নির্বাচন ব্যাপক আলোচনায় এসেছিল জায়েদ খান ও নিপুণের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে। নির্বাচনের দিন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জায়েদ খানের বিরুদ্ধে 'টাকা দিয়ে ভোট কেনার' অভিযোগ তুলেছিলেন আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ। ভোটের ফল প্রকাশের পরও সেই দ্বন্দ্ব চলতে থাকে, যা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল।