শিল্পী সমিতির নির্বাচন আজ

আলোচনা, সমালোচনা, তর্কবিতর্ক- সব কিছুর মধ্য দিয়েই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন কামনা করছেন প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে সাজসাজ অবস্থা বিরাজ করছে এফডিসিতে। নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে চারদিক। নির্বাচন উপলক্ষে এফডিসিতে আসছেন শিল্পীরা

প্রকাশ | ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

মাসুম বিলস্নাহ্‌ রাকিব
অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বিরাজ করছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন আজ। নির্বাচন ঘিরে রেখে জমে উঠেছে ভোটের প্রচার, প্রার্থী ও সমর্থকদের পদচারণায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। এ নিয়ে এফডিসিতে উৎসবের আমেজ বইছে। আলোচনা, সমালোচনা, তর্কবিতর্ক- সব কিছুর মধ্য দিয়েই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন কামনা করছেন প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে সাজসাজ অবস্থা বিরাজ করছে এফডিসিতে। নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে চারদিক। নির্বাচন উপলক্ষে এফডিসিতে আসছেন শিল্পীরা। বিএফডিসির প্রধান ফটকের সামনেই চোখ পড়ে দুই পরিষদের শিল্পীদের নির্বাচনী প্রচারের বড় বড় ব্যানার। পুরো এফডিসিই ছেয়ে গেছে পোস্টার আর তারকা প্রার্থীদের বড় বড় ছবিতে। শিল্পী সমিতির নির্বাচন আর এফডিসিতে উৎসবের আমেজ। এফডিসি ফিরে পেয়েছে যেন সেই সোনালি দিন। যদিও এই আনন্দঘন চিত্র নির্বাচন শেষেও অবশিষ্ট থাকে কি না, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন! গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পী সমিতির সামনের বাগানে দেখা গেল মাহমুদ কলি-নিপুণ আক্তার পরিষদের বড় পর্দায় বাজছে 'কই গেলা নিঠুর বন্ধুরে' গানটি। সেখান চেয়ারে বসে গান উপভোগ করছেন অভিনেত্রী সুজাতা আজিম ও অঞ্জনা রহমান। তারা দুজনেই মাহমুদ কলি-নিপুণ প্যানেল থেকে কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। সুজাতা আজিম ও অঞ্জনার উদ্দেশে মিশা সওদাগর বললেন, 'তোমরা শুধু এই প্যানেলেই বসে থেকো না। ওইদিকেও যেয়ো।' এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একটি কলি-নিপুণ পরিষদ, অন্যটি মিশা-ডিপজল পরিষদ। এর মধ্যে সভাপতি পদে লড়ছেন একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক মাহমুদ কলি ও দাপটে খল অভিনেতা মিশা সওদাগর। আর সাধারণ সম্পাদক পদে গেল আসরের মতো এবারও প্রার্থী হয়েছেন নায়িকা নিপুণ আক্তার। তার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন খলনায়ক ডিপজল। নিজের নির্বাচনী লক্ষ্যের বিষয়ে মিশা সওদাগর বলেছেন, আমি এর আগেও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। শিল্পীদের কার কী সমস্যা তা আমার নখদর্পণে। আমার সঙ্গে নির্বাচন করছেন ডিপজল। তিনি সব সময় অসহায় শিল্পীদের পাশে থাকেন। সবার সুখ-দুঃখের ভাগী হন। আমরা মনে-প্রাণে চলচ্চিত্রকে ধারণ করি, ভালোবাসি। শিল্পীরাও আমাদের ভালোবাসেন। 'শিল্পীরা বেশি কিছু চায় না, তারা সম্মান চায়। ইফতার, পিকনিক, উৎসব এসবে সম্মান চায়। কোনো শিল্পী অসুস্থ হলে যথাসম্ভব তার পাশে থাকা। এ সবই আমাদের মূল লক্ষ্য। আশা করি সবাই ভোট দিয়ে আমাদের প্যানেলকে জয়ী করবেন। অন্যদিকে আরেক সভাপতি পদের প্রার্থী মাহমুদ কলির লক্ষ্য 'মানুষের কাছে চলচ্চিত্রের সুনাম কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমার চেষ্টা থাকবে সেটি পুনরুদ্ধার করা।' আমি এর আগেও শিল্পী সমিতির দায়িত্ব পালন করেছি। শিল্পীদের বিপদে-আপদে পাশে থেকেছি। এবারও নির্বাচনে জয়ী হলে শিল্পীদের পাশে থাকব। শিল্পীদের উন্নয়নের জন্য কাজ করব। অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার আবারও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। তিনিও জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। নিপুণ বলেন, 'গতবার শিল্পীরা আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছিলেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না। আমি গত দুই বছর শিল্পীদের পাশে ছিলাম। তাদের নানা সমস্যা দূর করার চেষ্টা করেছি। এবার আমি জয়ী হলে আমার কাজকে আরও বেগবান করতে পারব।' দুই বছরে যে কাজগুলো করতে পারি নাই এবার নির্বাচনে জয়ী হলে বাকি কাজগুলো করব। আমি শিল্পীদের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে লড়ছেন যারা- মিশা-ডিপজল পরিষদে সহ-সভাপতির পদে লড়বেন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক ডন এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল। এ ছাড়া কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন অভিনেত্রী সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন, শাহনূর, নানা শাহ, রত্না কবির, চুন্নু, সাঞ্জু জন, ফিরোজ মিয়া। অন্যদিকে মাহমুদ কলি-নিপুণ প্যানেলে সহ-সভাপতি পদে লড়বেন ড্যানি সিডাক ও অমিত হাসান, সহ-সাধারণ সম্পাদক বাপ্পি সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জনা রহমান, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মারুফ আকিব, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক কাবিলা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ও কোষাধ্যক্ষ পদে অভিনেতা আজাদ খান। এ ছাড়া কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে সুজাতা আজিম, নাদের চৌধুরী, পীরজাদা হারুন, পলি, জেসমিন আক্তার, তানভীর তনু, মো. সাইফুল, সাদিয়া মির্জা, সনি রহমান, হেলেনা জাহাঙ্গীর ও সাইফ খান নির্বাচন করছেন। এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। সকাল ৯টায় শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি থাকবে মধ্যাহ্নভোজের জন্য। এবারের মোট ভোটার ৫৭০ জন। তারাই বেছে নেবেন আগামী দুই বছরের চলচ্চিত্র শিল্পীদের নেতা-অভিভাবক।