বলিউডের মিস্টারপারফেকশনিস্ট আমির খান। পারিবারিক নাম মোহাম্মদ আমির হোসেন খান। তার বাবা তাহির হোসেন ২০১০ সালে মারা যান। তিনি একাধারে প্রযোজক, অভিনেতা ও চিত্রনাট্যকার ছিলেন। মা জিনাত হোসেন এখনো জীবিত। আমির খান একটি ফিল্মি পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। বাবার পথ অনুসরণ করে রুপালি জগতে পা রাখেন তিনি। সময়ের সঙ্গে আমির যশ-খ্যাতির পাশাপাশি অনেক অর্থের মালিকও হয়েছেন। কী না করেছেন নিজের ক্যারিয়ারে। শুধু অভিনেতা হিসেবে নয়, প্রযোজনা ও পরিচালনাতেও সফল ভারতীয় এই তারকা। অভিনেতা হিসেবে ক্যারিয়ারে 'লগান', 'দঙ্গল', 'থ্রি ইডিয়টস', 'গজনি'র মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন আমির খান।
অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনায় সফল। তার প্রযোজনা সংস্থা আমির খান প্রোডাকশনের অধীনে, 'লগান' এর মতো ব্যবসায়ীকভাবে সফল সিনেমা তৈরি করেছেন।
প্রতিটি সিনেমায় আমির খান ৮৫ কোটি থেকে ১০০ কোটি রুপি নিয়ে থাকেন। কিছু কিছু সিনেমায় লভ্যাংশের শেয়ারও নেন তিনি। কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্য ১০ থেকে ১৫ কোটি রুপি চার্জ করেন আমির।
বর্তমানে আমির খানের যে ঝকঝকে জীবন দেখতে পাই, তার আড়ালে সংগ্রামী জীবন লুকিয়ে আছে। আর সেসব কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।
সম্প্র্রতি ব্রম্নট ইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আমির খান। এ আলাপচারিতায় বাবা-মায়ের প্রসঙ্গ উঠে আসে। স্মৃতি হাতড়ে আমির চলে যান শৈশবে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ অভিনেতা বলেন, 'আমার মনে আছে, আমাদের স্কুল ইউনিফর্ম যখন বানিয়ে দেওয়া হতো, তখন আম্মি এটি ভাঁজ করে ফোল্ড করে দিতেন, যাতে আমাদের নতুন প্যান্ট বানাতে না হয়। আর এই ইউনিফর্মে ২-৩ বছর পার হয়ে যেত।'
ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন স্কুলের বেতন ছিল ৬ রুপি। সপ্তম শ্রেণিতে ছিল ৭ রুপি। দশম শ্রেণিতে ১০ রুপি ছিল। কিন্তু পুরো স্কুল জীবনে এমন কোনো বছর নেই, যে বছর আমিরের স্কুলের বেতন সঠিক সময়ে দিতে পেরেছেন তার বাবা। অর্থ সংকটসহ নানা প্রতিকূলতার মধ্যে বাবা-মায়ের দেওয়া সময়টাই সেরা বলে মনে করেন আমির।
এ বিষয়ে আমির খান বলেন, 'আব্বাজান এবং আম্মি যে জীবন দিয়েছেন এটাই সবচেয়ে ভালো জীবন। সব সমস্যা এবং সবকিছুর সঙ্গে তারা আমাদের যত্ন নিয়েছেন।'
পুরনো সেই দিনের এসব কথা বলতে গিয়ে আমির খানের চোখের পাতা ভিজে উঠে। শুধু তাই নয়, একপর্যায়ে ক্যামেরা থেকে উঠে যান আমির।