সা ক্ষা ৎ কা র
আমার কোনো অপ্রাপ্তি নেই
একজন বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়ে পথচলা তার। সুদক্ষ এই অভিনেতা চারবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। গায়ক হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন এ অভিনেতা। অভিনয় ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তার সঙ্গে কথা বলেছেন মাসুম বিলস্নাহ (রাকিব)
প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
ঈদের নাটক নিয়ে কেমন ব্যস্ততা যাচ্ছে এখন?
নাটক নিয়ে খুব যে ব্যস্ত আছি এমন নয়। সব কিছুতেই ব্যস্ততা আছে আমার। শুধু নাটক না। এখন তো ওটিটিতেও নানারকম কাজ হচ্ছে, ফিল্মে কাজ হচ্ছে, টেলিভিশনেও এখন ভালো কাজ হচ্ছে। টেলিভিশনের সব কাজ এখন করি না। আমার সঙ্গে যে কাজগুলো যায় ওইরকম গল্প হলে কাজ করি। আমি সব সময় চাই দর্শকদের ভালো একটি কাজ উপহার দিতে। কতটুকু দিতে পারি তা জানি না। তবে আমি অনেক চেষ্টা করি ভালো কাজ করার জন্য। চাই ভালো অভিনয় করার জন্য। আমি সবসময় চরিত্রাভিনেতা হওয়ার চেষ্টা করি।
আর সিনেমার ব্যস্ততা?
এখন আসলে আমার সিনেমা নিয়েই বেশি ব্যস্ত সময় যায়। এই তো কিছুদিন আগে 'নীলচক্র' নামের একটি সিনেমার কাজ শেষ করলাম। আরও দুই-তিনটা সিনেমার কাজ শেষ করেছি। আবার নতুন সিনেমা করার জন্য অফার আসছে। সেগুলো করার জন্য কথাবার্তা চলছে। গল্প পছন্দ হলে এগুলোতে চুক্তিবদ্ধ হবো। 'রঙ্গনা' নামের নতুন একটি সিনেমায় কাজ করার কথাবার্তা চলছে। তারপর পরিচালক রায়হান রাফির একটি সিনেমাতে কাজ করব। সব মিলিয়েই সিনেমার কাজেই বেশি ব্যস্ত থাকছি।
আপনার গলাও তো চমৎকার- কিন্তু
এতে নিয়মিত নন কেন?
বয়স প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে আর গানে নিয়মিত হওয়ার বয়স কোথায়? গান শখের বসে গাই। আর আমার গান যেহেতু শ্রোতারা পছন্দ করেন সেই কারণেই মাঝেমধ্যে দুই-একটা গান গাই। গানকে কখনোই আমি পেশা হিসেবে নিতে চাইনি। আর নিজেকে আমি কখনো গায়কও মনে করি না। শৈশব থেকেই আমি প্রচুর গান শুনতাম। গানের প্রতি ভালোলাগা থেকেই গুনগুন করে গান তুলতাম এবং বন্ধুদের শোনাতাম। তবে আমার গান শেখা হয়নি। অভিনয়ে এসে বুঝতে পারলাম অভিনয়ের সঙ্গে গানের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। একজন ভালো ও পূর্ণাঙ্গ অভিনেতা হতে হলে গান, নাচ, পেইন্টিংসহ সবই জানতে হয়।
বর্তমানে কোন মাধ্যমটা এগিয়ে
আছে, নাটক না চলচ্চিত্র?
এটা এক কথায় বলা অনেক কঠিন। চলচ্চিত্র তো সেভাবে হচ্ছে না। কাজের জন্য বা জীবন-জীবিকার জন্য নাটকে কাজ করতে হয়। কিন্তু মনোযোগটা বেশি চলচ্চিত্রের দিকেই থাকে। নাটক একসময় খুব ভালো অবস্থানে ছিল। এখন একটা জায়গায় আছে। চলচ্চিত্রে যে অবক্ষয় দেখা দিয়েছিল সে জায়গাটা থেকে এটা আবার একটু ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে। এটা তো খুবই খুশির খবর। তবে এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে এবং প্রযোজকরাও আবার বিনিয়োগ করা শুরু করলে এই চলচ্চিত্র আবার ঘুরে দাঁড়াবে এটা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
'ভিউ' প্রতিযোগিতা বলে একটা কথা আছে- এটাকে কীভাবে দেখেন?
ভালো একটা নাটক যদি মানুষ বেশি দেখে তাতে তো আমি কোনো সমস্যা দেখি না। তবে যখন মানুষ খারাপ জিনিস বা মানহীন জিনিসই বেশি দেখে তখন তো এ নিয়ে কিছু করার বিষয়ে আমাদের একটা দায়িত্ব থাকা উচিত। সেই দায়িত্বটা হলো ভালো কাজের প্রতি মানুষের রুচি তৈরি করা। আমরা ভালো কাজ দিয়ে মানুষের রুচি তৈরি করতে পারি। সেই রকম কাজে বেশি মনোযোগী হতে হবে। তবে ভিউ নির্ভর করে দর্শকের ওপর। কেমন দর্শক দেখছে সেটার ওপরে। ভালো কাজের ভিউ হলে বুঝবেন সেগুলো ভালো মানুষ দেখছে আর খারাপ কাজের ভিউ হলে তখন বুঝবে সেগুলো ওই ধরনের দর্শকই দেখে। তাছাড়া প্রবীণ দর্শক এক ধরনের কাজ পছন্দ করে আর অপেক্ষাকৃত তরুণ যারা তারা আবার আরেক ধরনের কাজ পছন্দ করে।
নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট আপনি?
নিজের ক্যারিয়ার তো শেষই প্রায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে যদি চিন্তা করি তাহলে তো আমি অনেক কিছুই পেয়েছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, সম্মান পেয়েছি, অভিনেতা হিসেবে মানুষ আমাকে সম্মান করে এটা অনেক বড় পাওয়া আমি মনে করি। সেদিক থেকে আমি বলতে পারি ক্যারিয়ারে আমার কোনো অপ্রাপ্তি নেই।