মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সা ক্ষা ৎ কা র

১৪ বছরে শত শত গান করেছি নিজের কথা ও সুরে

পথিক নবী- তার গানে এক ধরনের মরমী ভাবধারার আঁচ থাকে। তার এই ঘরানার গানে একটা আলাদা শ্রোতা আছে। 'আমার একটি নদী ছিল', 'পাখি উড়িয়া উড়িয়া যায়'- তার সারা জাগানো শ্রোতাপ্রিয় গান। মাঝখানে প্রায় ১৪ বছর গানের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন এই শিল্পী। হালে আবার ফিরে এসেছেন তার প্রিয় গানের ভুবনে। এ শিল্পীর বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন...
  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
১৪ বছরে শত শত গান করেছি নিজের কথা ও সুরে

গানের ব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে এখন?

খুবই ভালো। এরমধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় স্টেজ শো করেছি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নতুন গানও প্রকাশ হয়েছে আমার। যেমন- বিটিভি'র আয়োজনে গাওয়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান, তারপরে 'ফুলগুলো সব ঝরে যাবে, ডালে ডালে রবে না' প্রভৃতি। সামনে আরও বেশ কয়েক জায়গায় গানের প্রোগ্রাম আছে আমার।

তাহলে ভালোই মাতাচ্ছেন?

স্টেজ শো'র মধ্যেই তো আমার জীবনযাপন। এটা তো আমাকে করতেই হবে। গান-বাজনা আমার স্নায়ুজুড়ে সবসময়েই বিরাজমান ছিল এবং এখনো আছে। এই গানের জন্য যেখান থেকেই ডাক আসে সেখানেই ছুটে যাই।

কিন্তু একটা সময়ে হঠাৎই গানের আঙিনা ছেড়ে গেলেন কেন?

আসলে একটা সময়ে ভেবে দেখলাম শুধু শুধু গান করে কোনো লাভ নেই। যে গান মানুষের আত্মার খোরাক হতে পারে না, মানুষের মনকে তৃপ্তি দেয় না, সে গান আর করব না। তবে এর মানে এই নয় যে, আমি গান থেকে দূরে ছিলাম। আমি গত ১৪ বছরে শত শত গান তৈরি করেছি নিজের কথা ও সুরে।

কিন্তু গান তৈরি করে প্রকাশ না করলে কার কী লাভ?

আমি অনেকবারই আমার এসব গান প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে সেভাবে কিছু হয়নি। আমাদের এখানে সত্যিকারের শিল্পীদের মূল্যায়ন কম। আমি তো এমন না যে, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিখে আসা শিল্পী। আমার সে রকম প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান নেই গানের। যে সময় নতুন গান প্রকাশ বন্ধ করলাম, তখন চাইলে অনেক গান করতে পারতাম। অনেক অর্থ হয়তো আসত। কিন্তু তাতে কি মনে শান্তি পেতাম। তা তো নয়।

কিন্তু শ্রোতারা তো আপনার গান শুনতে চান?

সেটা আমি জানি। সেটা জানি বলেই তো আমার এত গান তৈরি করা। এগুলো আমি সময় মতো শ্রোতাদের জন্য প্রকাশ করব। তখন মানুষ বুঝতে পারবে গানের বাইরে থেকে এতদিন আমি কী করেছি।

সাম্প্রতিক গান শুনে কেমন মনে হয় আপনার?

একটা সময় পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয়েছে সব গানই কাছাকাছি সুর ও গায়কির। শুনলে বোঝা যায় না কোনটা কার গান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর একটা পরিবর্তন পাওয়া যাচ্ছে। এই সময়ে বেশকিছু ভালো মানের কম্পোজার এসেছেন, যাদের কাজ আমার ভালো লাগে।

কেমন ভালো লাগে?

সেভাবে বলতে গেলে এখন যারা গান করছে সেটা তাদের নিজের থেকেই এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আমি তাদের গানের বিষয়ে কী আর বলব। সুর, কম্পোজিশন সবই ভালো। তবে তাদের গানের কথাগুলো খুবই দুর্বল। কথাগুলোর কোনো আগা-মাথা থাকে না। গানের কথা আরও সুন্দর হওয়া দরকার। কথার প্রতি আরও যত্নশীল হওয়া দরকার। নান্দনিকতা, আধ্যাত্মিকতা, যুক্তি- সবই থাকতে হবে।

কথা ভালো হলেও বাদ্যের উচ্চন্ডতায়

সেটা কি শ্রম্নতিকর হয়?

কী বলব, এই যে ডিজে কালচার- এটা যদি পারিবারিক, উৎসব- সবখানেই নৈমিত্তিক হয়ে ওঠে- এর সাউন্ড ফরমেটই মানুষের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠে- তখন এই কালচার থেকে সৃষ্টিশীল কী আশা করা যাবে। এই ডিজে তো এখন আধুনিক সাউন্ড ফরমেটে ফেলে ওয়াজও হচ্ছে। আমি মনে করি, গানের কথায় কোনো বস্তু বা শক্তি না থাকাতেই এই ডিজে হচ্ছে। তখন এর কথা কীভাবে শ্রম্নতিকর হবে? এভাবে নতুন গানের জন্ম কীভাবে হবে? একই গানই তো কতজনে গাইছে।

এই হাহাকার কি ভালো গীতিকার,

সুরকারের অভাবেও চলছে?

এখন তো সবাই গীতিকার, সুরকার, কম্পোজার- সবই। তখন কোয়ালিটি গীতিকার-সুরকার হবে কী করে। কোয়ালিটি গানই বা হবে কী করে। এখন 'নয়া দামান' হোক আর 'কাঁচা বাদাম' হোক। একটা সাউন্ড সিস্টেমে ফেলে এসবই চলতে থাকবে। শিল্পীদের তো পড়াশুনাই তো কমে গেছে।

আপনাকে কি পেস্ন-ব্যাকে কম ব্যবহার করা হয়?

আমি দু-একটি পেস্ন-ব্যাক করেছি। আসলে আমাকে পেস্ন-ব্যাকের জন্য সেভাবে ডাকা হয় না। জানি না, তারা কেন আমাকে পেস্ন-ব্যাকের জন্য ডাকেন না। হয়তো আমার প্রেজেন্টেশন পেস্ন-ব্যাকের জন্য উপযোগী নয়। তবে নির্মাতারা চাইলে আমিও সব ধরনের পেস্ন-ব্যাক করতে পারব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে