সা ক্ষা ৎ কা র
জেনারেল আতাউল গণি ওসমানির চরিত্রে অভিনয় করছি
অমিত হাসান- প্রকৃত নাম সাইফুর রহমান। আশির দশকের মাঝামাঝিতে এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রম দিয়ে ঢালিউডে পা রাখেন অমিত হাসান। ১৯৯০ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম চলচ্চিত্র 'চেতনা'। সালমান শাহ, মান্নাদের সময়ে অভিনয় করতেন নায়ক হিসেবে। খ্যাতিও পান নায়ক হিসেবেই। তবে একপর্যায় থেকে তিনি নেতিবাচক ছবিতে অভিনয় করতে শুরু করেন। তবে তিনি সরাসরি খলনায়ক হিসেবে নয় বরং নায়কের অ্যান্টি হিসেবেই পারফর্ম করেন। এ অভিনেতার অভিনয়ের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন.....
প্রকাশ | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
কাজকর্ম কেমন করছেন এখন?
নতুন কোনো কাজ বলতে সম্প্রতি 'অপারেশন জ্যাকপট' নামে একটি সিনেমায় শুটিং শুরু করেছি। এটার শুটিং অবশ্য আপাতত স্থগিত রয়েছে। ছবিতে আমি জেনারেল মো. আতউল গণি ওসমানীর চরিত্রে অভিনয় করছি। এ ছাড়া আরও কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এর মধ্যে 'বিট্রে' ও 'যন্ত্রণা' নামে দু'টি ছবির শুটিং শেষ করেছি। বাকি আছে ডাবিংয়ের কাজ। শিগগিরই এসব কাজ করবেন। এ ছাড়া মুক্তির অপেক্ষায় আছে, রাকিবুল আলম রাকিবের 'সীমানা', সৈকত নাসিরের 'মাসুদ রানা'।
অপারেশন জ্যাকপট নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন?
দীর্ঘ অভিনয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের পেক্ষাপটে তৈরি এটি আমার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র হতে যাচ্ছে। তবে এটি সত্যিকারের ঘটনা নিয়ে তৈরি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম চলচ্চিত্র। এ কারণে এই ছবিটিকে ঘিরে আমার উচ্ছ্বাসটা একটু বেশি তো হবেই। আমার আত্মবিশ্বাস রয়েছে, আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চটা দেওয়ার। ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর থেকেই আমি এম এ জি ওসমানীর জীবন সম্পর্কে নানাভাবে জানার চেষ্টা করেছি। আগে হয়তো তার নাম শুনেছি, এর বেশি কিছু ধারণা ছিল না। কিন্তু যখন নিজেই সেই চরিত্র পর্দায় উপস্থাপন করতে যাচ্ছি, তাকে তো ভালোভাবে জানতেই হবে। তার কিছু ভিডিও পেয়েছি, সেসব দেখেছি। তিনি কীভাবে হাঁটাচলা করতেন, কথা বলতেন, এসব বোঝার চেষ্টা করেছি। একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে এ রকম একটি চরিত্রে অভিনয় করতে পারাটা ভাগ্যের ব্যাপার মনে করছি।
বলা হচ্ছে, স্বল্প বাজেটের সিনেমাগুলোই ভালো করছে- আপনার কী মত?
কোথায় ভালো করছে? এর মধ্যেই খবরে বিভিন্ন ছবি সম্পর্কে জানছি ছবিগুলোতে দর্শক নেই। প্রেক্ষাগৃহে দর্শক যাচ্ছেন না। বরং মাঝারি বাজেট থেকে শুরু করে বিগ বাজেটের সিনেমাগুলোতেই দর্শক হচ্ছে বেশি। 'প্রিয়তমা' বা 'সুড়ঙ্গ' ছবি দু'টিই দেখেন না। এগুলো কীরকম ব্যবসা করেছে। এছাড়া বাকি ছবিগুলোর অনেকগুলো তো প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনীর দু'দিন পরই নামিয়ে ফেলেছে। এগুলো আমার কথা নয়। খবরেই দেখেছি। জানি না, সত্য নাকি মিথ্যা।
চলচ্চিত্রে আর কি হিরো হিসেবে প্রত্যাবর্তন করবেন?
আমি নেগেটিভ পজিটিভ দুটোতেই অভিনয় করি। প্রডিউসার-দর্শক যখন যেটা ডিমান্ড করেন তাতেই অভিনয় করি। নির্মাতার ইচ্ছা অনুযায়ী ইতিবাচক বা নেতিবাচক যেখানে যেটায় আমাকে মানিয়ে যাবে বলে তারা মনে করেন- সেভাবেই অভিনয় করি। তবে একটা সময়ে রেগুলার হিরো হিসেবে অভিনয় করলেও আগামীতে সেভাবে হয়ত হবে না। প্রডিউসার চাইলে মাঝে মাঝে ইতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করব। এই যেমন শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত শাপলা মিডিয়ার 'বিক্ষোভ' ছবিতে আমি ইতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছি।
ভিলেন ও হিরো- এই দু'টির ক্ষেত্রে দর্শক কোন চরিত্রে বেশি পছন্দ করে আপনাকে?
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি যখন কোথাও যাই তখন দর্শকের অনেকে আমার মুখ থেকে কমন কিছু 'ডায়ালগ' শুনতে চান। কিছু ডায়ালগ তো আছে মানুষের মুখে মুখে ফেরে- সেটা ইতিবাচক হোক আর নেতিবাচকই হোক। তখন আমি মজা করে বলি, 'আমার তো হিরো হিসেবে যেমন কমন ডায়ালগ আছে ভিলেন হিসেবেও আছে- তোমরা কোন ডায়ালগ শুনতে চাও?' কারণ, ভিলেন চরিত্রের ডায়ালগে যেমন জোশ থাকে নায়কের রোমান্টিক চরিত্রে তেমন থাকে না। তখন তারা বলে, 'আমি আপনার ভিলেন ডায়ালগ শুনতে চাই'।
এখন কি ঢাকাই ফিল্মে ভিলেন সংকট আছে বলে মনে করেন?
সংকট তো আছেই। সত্যি কথা বলতে কি, আমাদের এখানে আর্টিস্টই কম। মিশা সওদাগর একচেটিয়া ছিলেন এখন আছি আমি। এ ছাড়া নেতৃত্ব দেওয়ার মতো আর কেউ নেই। টিভি অভিনেতাদের কেউ ভালো করছে। তাসকিন রহমানও ভালো করছে। আসলে ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করা অনেক কঠিন। এ জন্য অনেক জ্ঞান ও অবজার্ভেশন থাকতে হবে। নায়ক তো সুন্দর চেহারা আর ভালো ডায়ালগ ছুঁড়তে পারলেই হয়ে যায়। কিন্তু ভালো ভিলেন হতে হলে অভিনয়ে অনেক বৈচিত্র্য থাকতে হবে। তবে আগামীতে বছরে ১০০ সিনেমা হলে ভিলেন চরিত্রে অবশ্যই বড় একটা সংকটের মধ্যে থাকবে।