গুঞ্জন শেষ পর্যন্ত সত্য হয়েই ধরা দিল। ভেঙে গেল অনেক দিন ধরে টানাপড়েনের মধ্যে থাকা এষা দেওল-ভরত তখভানির বিয়ে। গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন খবরেই সয়লাব ছিল ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। যদিও শুরুতে এষা কিংবা তার স্বামী ভরত কেউই এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি।
তবে শেষমেশ মঙ্গলবার এই দম্পতির তরফে একটি অফিসিয়াল বিবৃতি এসেছে সামনে। যেখানে লেখা ছিল 'সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে' দুজনে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কিন্তু কী কারণে ভেঙে গেল এষা-ভরতের দীর্ঘ এক যুগের সংসার? শোনা যাচ্ছে, এষার স্বামী ভরত নাকি পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে গেছেন। বেঙ্গালুরুতে প্রেমিকার সঙ্গে একই বাসায় থাকছেন। সেই কারণে নাকি বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এষা।
বলিউডের অন্যতম তারকা দম্পতি হেমা মালিনী-ধর্মেন্দ্র কন্যা অভিনেত্রী এষা দেওল ২০১২ সালে হিরের ব্যবসায়ী ভরত তখতানির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। ২০১৭ সালে প্রথম সন্তান রাধ্যার জন্ম দেন এষা। তার দু'বছর পর দ্বিতীয় সন্তান মীরার জন্ম। বিয়ের ১১ বছর পর এবার সেই সংসার ভাঙল এষার।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী অনেকদিন ধরেই খবর ছিল, দুই মেয়েকে নিয়ে মা হেমার সঙ্গে থাকছেন। অন্যদিকে ভরত নাকি রয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। তবে একা নন, কোনো এক 'প্রেমিকার' সঙ্গে।
তারই জেরে গুঞ্জন ওঠে এ তারকা দম্পতির বিচ্ছেদ ঘটতে যাচ্ছে। আর সেই গুঞ্জনের এক মাস না যেতেই তাদের সম্পর্কে সিলমোহর দিলেন এষা। তবে এশা ও ভরতের সংসার কেন ভাঙল সেই বিষয়ে তাদের কেউ মন্তব্য না করলেও ভরতের প্রেমের জেরেই এই বিচ্ছেদ বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। এষার স্বামী নাকি বেঙ্গালুরুতে তার প্রেমিকার সঙ্গে থাকেন।
তবে এষার কথায় 'আমরা পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতেই আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জীবনের এই চরম মুহূর্তে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই সন্তান। আশা করব, আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখা হবে।'
২০১৭ সালে প্রথম সন্তান রাধ্যার জন্ম হয়। এর ঠিক দুবছর পর দ্বিতীয় সন্তান মীরার জন্ম হয়।
এর আগে ২০২০ সালে একটি বই লিখেছিলেন এষা দেওল। যার নাম ছিল 'অসসধ গরধ: ঝঃড়ৎরবং, অফারপব ধহফ জবপরঢ়বং'। যেখানে তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন নিজেদের অভিভাবকত্বের সফর। আর সেই বইতেই অভিনেত্রী লিখেছিলে কীভাবে ২০১৯ সালে তাদের দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর 'অবহেলিত' বোধ করেছিলেন তার স্বামী ভরত।
বইয়ে লেখা হয়, 'আমার দ্বিতীয় সন্তানের পর, অল্প সময়ের মধ্যে আমি লক্ষ্য করি, ভরত আমার সঙ্গে খামখেয়ালি আচরণ করছে, যেন সে বিরক্ত। আসলে ও অনুভব করেছিল যে, আমি তাকে যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছি না। একজন স্বামীর পক্ষে এরকম অনুভব করাটা খুবই স্বাভাবিক কারণ সেই সময় আমি রাধ্যার পেস্ন স্কুলের এবং মীরাকে খাওয়ানো নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম। সঙ্গে চলছিল আমার বই লেখা ও আমার প্রযোজনা সংস্থার একাধিক মিটিং। আমি ধীরে ধীরে নিজের ত্রম্নটি বুঝতে পারি। আমার কাছে ভরত একটা নতুন ব্রাশ চেয়েছিল, আর সেটা আমার মাথা থেকেই বেরিয়ে যায়, কখনো আবার ওর জামা আয়রন করা হয়নি তো কখনো খাবার ছাড়াই অফিসে চলে গেছে, আমি খেয়ালও করিনি। যদিও এগুলোকে খুব জলদিই শুধরে নিয়েছিলাম।' তবে কি দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হতেই তাদের বৈবাহিক জীবনে সুখের ভাটা পড়েছিল।
এর আগে মা হেমা মালিনীর জন্মদিন থেকে শুরু করে বলিউডের যে কোনো অনুষ্ঠানে এষা একা উপস্থিত হয়েছেন। অবশ্য দেওল পরিবারের অনুষ্ঠানে আবার এষার সঙ্গে স্বামী ভরতকে দেখা যেত। জানা গেছে, দুই মেয়েকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে থাকেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি ইরা খানের বিয়ের অনুষ্ঠানে মায়ের সঙ্গে দেখা যায় এষাকে। এমনকি অভিনেত্রীর জন্মদিনেও দেখা মেলেনি তার স্বামীর। তারপরই মূলত এই বিচ্ছেদের গুঞ্জন চাউর হয়।