বর্ষীয়ান সুরকার জাভেদ আখতার বনাম কঙ্গনা রানাউত! বলিউডের এই দ্বৈরথ বহু পুরনো। গত তিন বছর ধরে জাভেদ আখতারের দায়ের করা মামলার জেরে আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন কঙ্গনা।
নিম্ন আদালতের গন্ডি পেরিয়ে বম্বে হাইকোর্টে জাভেদ আখতারের দায়ের করা ফৌজদারি মানহানির মামলা স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন 'কুইন' খ্যাত অভিনেত্রী কঙ্গনা। তবে তার আবেদন গ্রাহ্য করল না বোম্বে হাইকোর্ট। ২০২০ সালে কঙ্গনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন জাভেদ আখতার।
আদালতের কাছে কঙ্গনার আরেক আর্জি ছিল, তিনিও জাভেদ আখতারের বিরুদ্ধে যে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন, সেই মামলাটির সঙ্গে যাতে এই মামলাটিকে মিশিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই আবেদনও গ্রহণ করেনি আদালত।
বিচারপতি প্রকাশ নায়েক অর্ডার জারি করে স্পষ্ট জানান, এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে কোনোভাবেই বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাপ্রাপ্ত করা যাবে না। আবেদনকারী এর আগে কখনো বলেননি দুটো পৃথক মামলাকে মিলিয়ে দেওয়ার কথা। এই পর্যায়ে এমন দাবি গ্রাহ্য হবে না। জাভেদ আখতার প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মনে করান বিচারপতি।
২০২০ সালে এক টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন বলিউডের বর্ষীয়ান গীতিকার জাভেদ আখতার। এই মামলায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দিও দেন জাভেদ আখতার।
অভিযোগে বলা হয়েছে, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃতু্য মামালায় কোনো কারণ ছাড়াই জাভেদ আখতারের নাম জড়িয়েছেন কঙ্গনা। জাভেদ আখতার বলেন সোস্যাল মিডিয়াতেও কয়েক লাখ মানুষ ওই ভিডিও দেখেছেন এবং অনান্য সংবাদ মাধ্যমও ওই ভিডিও'র বক্তব্য নিয়ে সংবাদ করেছে। যা তার জন্য অপমানজনক এবং ভারতীয় দন্ডবিধি অনুসারে তা মানহানিকর। কঙ্গনার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৯৯ নম্বর (মানহানি) ও ৫০০ নম্বর (মানহানির শাস্তি) ধারায় মামলা দায়ের করেন জাভেদ আখতার।
রিপাবলিক টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনা দাবি করেন, হৃতিক-কঙ্গনা বিবাদের সময় দীর্ঘদিনের পারিবারিক বন্ধু রোশনদের পাশে দাঁড়িয়ে কঙ্গনাকে 'শাসিয়েছিলেন' জাভেদ আখতার। তিনি পরিষ্কার ভাষায় কঙ্গনাকে বলেছিলেন হৃতিকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে, না হলে কঙ্গনার কাছে আত্মহত্যা করা ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা খোলা থাকবে না।
পরে জাভেদের বিরুদ্ধে পালটা মামলা করেছেন কঙ্গনা। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, চাঁদাবাজি এবং তার ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকে হেনস্তার অভিযোগ আনেন অভিনেত্রী। ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই আন্ধেরির একটি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট চাঁদাবাজির অভিযোগ বাদ দেয়। কিন্তু বাকি ধারাগুলোর ওপর ভিত্তি করে বর্ষীয়ান শিল্পীর বিরুদ্ধে সমন জারি করে। পালটা রিভিশন আপিল দাখিল করেন জাভেদ আখতার। অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে আদালত জানিয়েছে জাভেদের রিভিশন আপিলের শুনানি শেষ না হলে, তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।