সা ক্ষা ৎ কা র
সবাই ছোট পরিসরে সিনেমা বানাচ্ছে
আমিনুল ইসলাম খান- চলচ্চিত্রে আমিন খান নামেই খ্যাত। এক সময়ে ঢাকাই সিনেমার ব্যস্ত অভিনেতা এখন ওয়ালটনের মার্কেটিং বিভাগ চালান। বর্তমান সিনেমা, গল্প, নায়ক-নায়িকাদের মাঝবয়সেই প্রস্থানসহ নানা বিষয়ে এ অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছেন...
প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
চলচ্চিত্রে কি শিগগিরই দেখা দেওয়ার ইচ্ছে আছে?
এখন কর্মব্যস্ততা বলতে ওয়ালটন আমার জীবনসঙ্গী। তার মানে এই নয় আমি অভিনয়কে বিদায় জানিয়েছি। সিনেমাই তো আমার সমস্ত ধ্যান-জ্ঞানের অংশ হয়ে আছে। এখনো সিনেমার সেই কর্মব্যস্ততার দিনগুলো নিয়ে ভাবি। যদিও বর্তমান কর্মব্যস্ততার কারণে আর আগের সেই কর্মব্যস্ততায় ফিরে যাওয়া হবে না।
একটা বয়সে অনেক নায়ক-নায়িকাই অভিনয়ে
থাকেন না- কারণ কী?
আসলে কি, আমাদের রাইটাররা সে রকম গল্পই লেখেন না। আগে যেমন মাল্টি ট্র্যাকের গল্প লেখা হতো, সিনেমা হতো- এখন সেটা না হওয়াতে অন্য চরিত্রে অভিনয় করবে কী করে। তাছাড়া এখনকার রাইটারদের মাথায় মাল্টি ট্র্যাকের গল্প লেখার ঘিলুই নাই। নির্মাতারাও মাল্টি ট্র্যাকের গল্পে ছবি বানাতে পারেন না। কারণ, এটা অনেক শ্রমের ও কঠিন কাজ। সমস্যাটি আগে না থাকায় রাজ্জাক, আলমগীর, ফারুক, জসিম, ইলিয়াস কাঞ্চন সবাই হিরোর বাইরেও অভিনয় করতে পেরেছেন। তেমন গল্প না হলে অভিনয় করবে কোথায়?
ধরেন নায়ক হিসেবে যে সম্মানি পেতেন অন্য
চরিত্রে সেটা না পেলে কাজ করবেন?
না, না, না- আমি এটা মনে করি না অন্য চরিত্রে পারিশ্রমিক কম হওয়াতে তারা অভিনয় করেন না। অভিনয়ের সঙ্গে ওভাররেটেড বা আন্ডাররেটেড এসবের সম্পর্ক নেই। আগে যারা হিরো ছিলেন তারা কম রেটে অন্য চরিত্রে অভিনয় করেননি? বাস্তবতা হলো, অনেক সময় গল্পই হয় না। আমাদের ওভারঅল মেধা কমে গেছে। সে রকম মাল্টি ট্র্র্যাকের প্যারালাল বা ফিচার সিনেমা বানানোর মতো রাইটার ও নির্মাতা নেই।
অনেকে বাজেটের ওপরও দায় চাপান-
এটা বলতে গেলে অনেকে 'মাইন্ড' করতে পারেন। আসলে যারা সিনেমা বানান বড় পরিসরে নামতে ভয় পান। পাছে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। বাজেট তেমন ফ্যাক্টর নয়। কোনো না কোনো সোর্সে টাকাটা এসেই যায়। বিষয়টা হচ্ছে, যারা ছোট ছোট টিমের সঙ্গে খেলেন নিজের দুর্বলতার কারণে বড় টিমের সঙ্গে খেলতে ভয় পান। তাই ছোট টিমের সঙ্গেই খেলেন। সিনেমাও তাই। সবাই ছোট পরিসরে সিনেমা বানাচ্ছে। ছোট টিমের কোচ হয়েই থাকতে চাইছেন।
অনেকগুলো সিনেমায় অভিনয় করলেন কিন্তু
একটাও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার...
এটা ঠিক এতগুলো সিনেমায় অভিনয় করলাম, কোনো জাতীয় পুরস্কার জুটল না আমার। তবে পুরস্কার পাওয়ার মতো আমার অভিনীত কোনো সিনেমাও হয়তো সেখানে জমা পড়েনি। তারপরও আমি বলব, এই জাতীয় পুরস্কার না পাওয়া নিয়ে আমার কোনোই আক্ষেপ নেই। দর্শকদের ভালোবাসাই আমার কাছে বড় পাওয়া। এই যে দেখেন, এমন অনেক সিনেমাও আছে, যেগুলো জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে, কিন্তু দর্শক হয়তো সেই সিনেমার নামই জানে না। কোনোটি হয়তো মাত্র দু'চারটি সিনেমা হলে প্রদর্শিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। কারণ হল মালিকেরা তো আর সিট খালি রেখে সিনেমা দেখাতে চাইবে না। আমার বহু সিনেমাই আছে, হলগুলোতে দর্শকে ঠাসা থাকত। অনেক দর্শক টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছে। এটাই তো একজন চলচ্চিত্র শিল্পীর কাছে বড় পাওয়া, তাই না! এমন অনুভূতি কার না ভালো লাগে। তাই এখনো মাঝে মাঝে মনে হয়, আবার আগের মতো সিনেমার ব্যস্ত জীবন কাটাই। কিন্তু সে তো আর সম্ভব না।
নিজের অভিনয় নিয়ে কোনো অতৃপ্তি আছে?
অতৃপ্তি তো মানুষের থাকেই। এই যে এতগুলো সিনেমায় অভিনয় করলাম, দর্শকের ভালোবাসাও অনেক পেলাম, এটাও বা কম কীসে। তারপরও আরও কী যেন হতে পারত, কী যেন করতে পারতাম, এমন একটা অসম্পূর্ণতা তো আছেই। এমন একটা তাগিদ থেকে এই অতৃপ্তিবোধ তো আছেই।