না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ভারতের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী ওস্তাদ রাশিদ খান। মঙ্গলবার বিকাল ৩.৪৫ মিনিটে দক্ষিণ কলকাতার ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে (পিয়ারলেস) তার মৃতু্য হয়। মৃতু্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহীকে তিনি রেখে গেছেন।
ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেই সঙ্গে প্রোস্টেট ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। হঠাৎ করে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় এদিন সকালেই তাকে ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়।
তার মৃতু্যর খবরে শোকের ছায়া নেমে আসে বাংলার সঙ্গীত জগতে। মৃতু্যর খবর শুনেই হাসপাতালে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল প্রমুখ।
হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে পিস হেভেনে। গতকাল বুধবার সকালে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তার মরদেহ শায়িত রাখা হয় রবীন্দ্র সদনে। এরপর বিকালে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গান স্যালুট এর মধ্যে দিয়ে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ুতে জন্মগ্রহণ করেন রাশিদ খান। রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার প্রতিষ্ঠাতা এনায়েত হোসেন খানের প্রপৌত্র ছিলেন রাশিদ খান।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি ওস্তাদ নিশার হোসেন খানের কাছে। খুব অল্প সময়ে সঙ্গীতকে আপন করে নিয়েছিলেন তিনি। মাত্র ১১ বছর বয়সে কনসার্ট করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন রাশিদ খান। ১৪ বছর বয়সে তিনি উত্তর প্রদেশ থেকে কলকাতায় চলে আসেন। দক্ষিণ কলকাতা টালিগঞ্জ আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমিতে শুরু হয় সংগীতের পাঠ।
জব উই মেট, হাম দিল দে চুকে সানাম, মাই নেম ইজ খান, রাজ-৩ এর মত বলিউড ছবির পাশাপাশি নীতিন মাসি, বাপি বাড়ি যা, কাদম্বরীর মতো একাধিক বাংলা ছবিতেও গান গেয়েছেন রাশিদ খান। সঙ্গীত জগতে বিশেষ অবদানের জন্য পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, সঙ্গীত নাটক একাডেমিসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।