১৯৪৩ সাল থেকে আরম্ভ করে ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে গান গেয়ে চলেছেন আশা ভোঁসলে। তিনি তার সঙ্গীত জীবনে প্রায় এক হাজার সিনেমায় গান গেয়েছেন। ১২০০০ এরও বেশি গান গেয়েছেন। ২০১১ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাকে সর্বাধিক সংখ্যক গান রেকর্ডকারী হিসেবে ঘোষণা করে। ভারত সরকার তাকে ২০০৮ সালে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে।
ভারতের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী আশা ভোঁসলে। বর্তমান সময়ে বাড়তে থাকা বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা বিস্মিত করে তোলে তাকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকার অতীত-বর্তমানের বিচ্ছেদ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কথা বলেন কিংবদন্তি এই সঙ্গীতশিল্পী। জানান, বিবাহিত জীবনে একাধিক সমস্যা থাকলেও তিনি কখনই সেই বিয়ে ভাঙার কথা ভাবেননি।
স্পিরিচু্যয়াল গুরু শ্রী শ্রী রবি শঙ্করকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশা ভোঁসলে জানান, 'আমি এখন ৯০ বছর বয়সি প্রবীণ মহিলা। আমি বিবাহিত, আমার তিন সন্তানও আছে। আমার বৈবাহিক সম্পর্ক যখন খারাপ হতে শুরু করে তখন আমি সন্তানদের নিয়ে আমার মায়ের কাছে চলে যাই। তবুও কখনোই ডিভোর্স ফাইল করিনি। কিন্তু আজকাল শুনি বিয়ে এক মাসের মাথাতেও ভেঙে যায়। কিন্তু কেন হচ্ছে এটা? এটা আমাকে খুব ভাবিয়ে তোলে।
এভাবেই সমাজে চলমান 'বিবাহ বিচ্ছেদ' নিয়ে নিজের অভিমত জানালেন ভারতের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী আশা ভোঁসলে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যক্তিগত জীবনসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিষয়টি তিনি কথা বলেন। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বলতে গিয়ে ভোঁসলে জানান, বিবাহিত জীবনে একাধিক সমস্যা থাকলেও তিনি কখনই সেই বিয়ে ভাঙার কথা ভাবেননি।'
কিংবদন্তি এই শিল্পী বলেন, 'আমি একটা দীর্ঘসময় এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়েছি। কিন্তু আজকালকার প্রজন্মের মতো কাউকে এত দ্রম্নত সিদ্ধান্ত নিতে দেখিনি। ভালোবাসা থেকে ওরা দ্রম্নত বেরিয়ে আসতে পারে। ওরা নিজেদের কথাও ভাবে না। আমাদের সময় এসব ছিল না।'
প্রসঙ্গত, আশা ভোঁসলে দু'বার বিয়ে করেছিলেন। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গণপতরাও ভোঁসলেকে প্রথমে বিয়ে করেন। এই বিয়ে নিয়ে তার বড় বোন সারাজীবন অবিবাহিত থেকে যাওয়া কিংবদন্তি লতা মুঙ্গেশকরের সঙ্গে তীব্র মনোমালিন্য ঘটে। এই বিয়ের জন্য লতা মুঙ্গেশকর আশা ভোঁসলেকে 'স্বার্থপর'ও বলেন। এই বিয়ের ঘটনায় এমনও দিন গেছে তাদের যে, একবার একটি গানের রেকর্ডে দুই বোন উপস্থিত। কিন্তু লতা মুঙ্গেশকর আশার মুখ দেখবেন না বলে তিনি গানের খাতা হাতে নিয়ে তার মুখ ঢেকে রাখেন। এর জবাবে আশাও তার গানের খাতা হাতে নিয়ে তার মুখ ঢেকে রাখেন। কিন্তু তাদের সেই প্রেমের বিয়েও সুখের হয়নি। তিন সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি ছাড়তে হয় তাকে। তারপর তিনি সেই ভাঙার দীর্ঘদিন পর ১৯৮০ সালে প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক এবং গায়ক আর ডি বর্মণকে বিয়ে করেন।