টিভি ও চলচ্চিত্রের জাঁদরেল অভিনেতা মাহফুজ আহমেদের জন্মদিন আজ। ১৯৬৭ সালের এই দিনে লক্ষ্ণীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার জগৎপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। টিভি নাটক, চলচ্চিত্রে অভিনয়, মডেলিং ও উপস্থাপনার পাশাপাশি নাটক নির্মাণেও তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন যথেষ্ট। শোবিজে মাহফুজ আহমেদের পথচলা শুরু হয়েছিল নব্বই দশকের দিকে। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। 'পূর্ণিমা' পত্রিকার বিনোদন বিভাগে লেখালেখি করতেন। লেখালেখির সুবাদে কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের পরামর্শে ১৯৮৯ সালে বিটিভির ধারাবাহিক নাটক 'কোন কাননের ফুল'-এ অভিনয় করার সুযোগ পান। চরিত্রটি ছোট হলেও সবার নজরে পড়েন মাহফুজ। এরপর হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত ধারাবাহিক 'কোথাও কেউ নেই' নাটকে বাকের ভাইয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়া মতি চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পান। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ছোট পর্দার রোমান্টিক হিরো হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত তিনি। একাগ্রতা ও দারুণ অভিনয়ে সবাইকে ছাপিয়ে নিজেকে নিয়ে যান টিভি নাটকের শীর্ষ অভিনেতার আসনে। চলচ্চিত্রেও সফল মাহফুজ। তার প্রথম চলচ্চিত্রের নাম 'প্রেমের কসম'। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায় 'শ্রাবণ মেঘের দিন', 'দুই দুয়ারী' চলচ্চিত্রের পর মহম্মদ হান্নানের 'ভালোবাসি তোমাকে', চাষী নজরুল ইসলামের 'মেঘের পরে মেঘ', নার্গিস আক্তারের 'চার সতীনের ঘর', শহীদুল ইসলাম খোকনের 'লাল সবুজ', তৌকীর আহমেদের 'জয়যাত্রা' ও 'জিরো ডিগ্রি' চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও বেশ সুপরিচিত এই অভিনেতা। অভিনয়, মডেলিংয়ের বাইরে পরিচালক হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। তার প্রথম পরিচালিত নাটক 'তাহারা'। এরপর 'আমাদের নুরুল হুদা' ধারাবাহিক নাটকটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন। এরপর আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, একজন মায়াবতীসহ অনেক নাটক পরিচালনা করেন তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত ধারাবাহিক ও খন্ডনাটক পরিচালনা করেছেন মাহফুজ। নাট্য প্রযোজক হিসেবেও রয়েছে তার সুখ্যাতি রয়েছে। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম নকশীকাঁথা? এই প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক নাটক নির্মাণ করেছেন মাহফুজ? তার পরিচালনার প্রায় নাটকই এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রযোজিত। 'জিরো ডিগ্রি' তারই প্রযোজিত চলচ্চিত্র। বর্ণিল ক্যারিয়ারে দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, অনেক বেসরকারি পুরস্কার পেয়েছেন। ২০০৫ সালে লাল সবুজ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্যে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। নাটক-চলচ্চিত্রে সুনাম থাকলেও আগের মতো অভিনয়ে নিয়মিত নন মাহফুজ। অভিনয় থেকে অনেকটা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন তিনি।