দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

সুধীরবরণ মাঝি, শিক্ষক হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয় হাইমচর, চাঁদপুর
বাংলাদেশের ভৌগোলিক বিবরণ প্রশ্ন: দেশটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দেশটির অবস্থান। দেশটি দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর আর তিন দিক ভারতের বিভিন্ন রাজ্য দ্বারা বেষ্টিত। ক. বাংলাদেশের পূর্ব-পশ্চিমে অবস্থান লিখ। খ. বাংলাদেশের সর্বমোট সীমারেখা ৪,৭১১ কিলোমিটার। ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের দেশটির একটি পূর্ণপৃষ্ঠা মানচিত্র অঙ্কন করে তিনটি প্রধান নদী, দক্ষিণ-পশ্চিমের বন ও দুটি সামুদ্রিক বন্দর দেখাও। ঘ. দেশটির অবস্থান, সীমা সম্পর্কে আলোচনা কর। উত্তর: ক. বাংলাদেশের পূর্ব-পশ্চিমের অবস্থান ৮৮ক্ক০র্১ পূর্ব দ্রাঘিমারেখা থেকে ৯২ক্ক৪র্১ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে। খ. বাংলাদেশের সর্বমোট সীমারেখা ৪,৭১১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশের সীমারেখার দৈর্ঘ্য ৩,৭১৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমারেখার দৈর্ঘ্য ২৮০ কিলোমিটার। এছাড়া বাংলাদেশের উপকূল রেখা বা তটরেখার দৈর্ঘ্য ৭১৬ কিলোমিটার। গ. ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসম্বর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা দেশটি আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। নিচে বাংলাদেশের একটি মানচিত্র অঙ্কন করে তিনটি প্রধান নদী, দক্ষিণ-পশ্চিমের সুন্দরবন ও দুটি সামুদ্রিক বন্দর দেখাতে হবে : চিত্র : বাংলাদেশ ঘ. উক্ত দেশ তথা বাংলাদেশের অবস্থান, সীমা সম্পর্কে ভৌগোলিক বিবরণ তুলে ধরা হলো : অবস্থান : এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণাংশে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এদেশ ২০ক্ক৩র্৪ উত্তর অক্ষরেখা থেকে ২৬ক্ক৩র্৮ উত্তর অক্ষরেখার মধ্যে এবং ৮৮ক্ক০র্১ পূর্ব দ্রাঘিমারেখা থেকে ৯২ক্ক৪র্১ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে। সীমা : বাংলাদেশের একদিকে বঙ্গোপসাগর এবং অপর প্রায় তিনদিকেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্য দ্বারা বেষ্টিত। বাংলাদেশের উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় ও আসাম রাজ্য; পূর্বে আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্য ও মিয়ানমার; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অবস্থিত। প্রশ্ন: সমভূমির নাম জেলা অ রংপুর ও দিনাজপুর। ই ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর। ঈ নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজার। ক. বাংলাদেশের পস্নাবন সমভূমির আয়তন কত? খ. বাংলাদেশে কীভাবে পস্নাবণ সমভূমি গঠিত হয়েছে? গ. অ, ই ও ঈ নির্দেশিত জেলায় গঠিত সমভূমি চিত্রের সাহায্যে দেখাও। ঘ. বাংলাদেশের কুমিলস্না, চট্টগ্রাম, বরগুনা, জামালপুর জেলাগুলো অ, ই কিংবা ঈ দ্বারা নির্দেশিত সমভূমির ধরনের অন্তর্ভুক্ত কী? যুক্তিসহ যাচাই কর। উত্তর: ক. বাংলাদেশের পস্নাবণ সমভূমির আয়তন প্রায় ১,২৪,২৬৬ বর্গকিলোমিটার। খ. সমগ্র বাংলাদেশ নদীবিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। অসংখ্য ছোট-বড় নদী বাংলাদেশের সর্বত্র জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে। সমতল ভূমির ওপর দিয়ে এ নদীগুলো প্রবাহিত হওয়ার কারণে বর্ষাকালে বন্যার সৃষ্টি হয়। বছরের পর বছর এভাবে বন্যার সঙ্গে পলিমাটি সঞ্চিত হয়ে এ পস্নাবণ সমভূমি গঠিত হয়েছে। গ. অ, ই ও ঈ জেলায় তথা রংপুর ও দিনাজপুর; ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর এবং নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজারে গঠিত সমভূমি যথাক্রমে পাদদেশীয় সমভূমি, বদ্বীপ সমভূমি ও উপকূলীয় সমভূমি। এসব সমভূমির মানচিত্র এঁকে দেখাতে হবে : ঘ. বাংলাদেশের কুমিলস্না, চট্টগ্রাম, বরগুনা, জামালপুর জেলা অ দ্বারা নির্দেশিত সমভূমি তথা পাদদেশীয় সমভূমির অন্তর্ভুক্ত নয়। কিন্তু ই দ্বারা নির্দেশিত বদ্বীপ সমভূমি বরগুনায় এবং চট্টগ্রামে ঈ দ্বারা নির্দেশিত উপকূলীয় সমভূমি দেখা যায়। এ প্রেক্ষিতে প্রশ্নে উলিস্নখিত জেলাগুলোর ভূমিরূপ আলোচনায় আমরা দেখি- কুমিলস্না : পস্নাবণ সমভূমির অন্তর্গত। নদীবাহিত পলি, বালি, কাঁকর প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে এ সমভূমি গঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম : উপকূলীয় সমভূমির অন্তর্গত। সমুদ্র তীরের প্রান্তভাগে উপকূলীয় সমভূমি গঠিত হয় বলে চট্টগ্রাম উপকূলীয় সমভূমির অংশ। বরগুনা : এ জেলার কিয়দংশ স্রোতজ সমভূমির অন্তর্গত। স্রোতের টানে যে অংশ গঠিত হয়েছে তা স্রোতজ সমভূমির অংশ। আবার এ জেলাটি বদ্বীপ সমভূমিরও অন্তর্গত। জামালপুর : পস্নাবণ সমভূমির অন্তর্গত। নদীবাহিত পলি দ্বারা জামালপুর গঠিত হয়েছে বলে এ জেলাকে এ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে সুতরাং উলিস্নখিত জেলাগুলোর মধ্যে অ চিহ্নিত সমভূমি না থাকলেও ই ও ঈ নির্দেশিত সমভূমি দেখা যায়। প্রশ্ন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা ভূমি জরিপের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। তারা জরিপ করে দেখে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবং লালমাই পাহাড়ের ভূপ্রকৃতির বৈশিষ্ট্য একই রকম। ক. কত বছর পূর্বের সময়কে পস্নাইস্টোসিনকাল বলা হয়? খ. বাংলাদেশের সীমা লিখ। গ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত অঞ্চলসমূহ বাংলাদেশের একটি মানচিত্রে উপস্থাপন কর। ঘ. শিক্ষার্থীদের তিনটি ভিন্ন অঞ্চলে একইরূপ ভূপ্রকৃতি দেখার কারণ বিশ্লেষণ কর। উত্তর: ক. আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে পস্নাইস্টোসিনকাল বলা হয়। খ. বাংলাদেশের উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় ও আসাম রাজ্য; পূর্বে আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্য ও মায়ানমার; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত। বাংলাদেশের সর্বমোট সীমারেখা ৪,৭১১ কিলোমিটার। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়