পঞ্চম অধ্যায়
ঘ. বাংলাদেশের উক্ত বায়ু তথা মৌসুমি বায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ :
১. ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে এই বায়ুর দিক পরিবর্তিত হয়।
২. গ্রীষ্মকালে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ুতে প্রচুর জলীয়বাষ্প থাকে বিধায় এ সময় বায়ু প্রবাহিত পার্শ্ববর্তী স্থানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
৩. শীতকালে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ুতে প্রচুর জলীয়বাষ্প না থাকায় এ সময় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম।
৪. মৌসুমি জলবায়ুর কারণে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অত্যধিক হয়ে থাকে। মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবের ফলে নিম্ন অক্ষাংশে শীত ও গ্রীষ্মে তাপের তারতম্য পরিলক্ষিত হয় না।
৫. গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু প্রবাহের ফলে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষিকাজে প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। ফলে দেশটি ঘনবসতি এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে।
৬. শীত ও গ্রীষ্মকালে বায়ুপ্রবাহ বিপরীতমুখী হয়।
৭. শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ুর গুণাবলি ভিন্ন। কারণ, শীতকালীন মৌসুমি বায়ু জলীয়বাষ্প বহন করে না, কিন্তু গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু প্রচুর জলীয়বাষ্প বহন করে।
মৌসুমি বায়ু ঋতু পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হওয়ায় এর বেশ কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। উপরে আলোচিত বৈশিষ্ট্যসমূহ বাংলাদেশের মৌসুমি জলবায়ুকে স্বাতন্ত্র্য দান করেছে।
৪. শিল্পী দশম শ্রেণির ছাত্রী। তার পিতা শফিক বইমেলা থেকে একটি বই কিনে আনল। বইটি শিল্পীকে পড়তে দিল। বইটিতে লেখা রয়েছে, পৃথিবীর বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ গঠন, বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন স্তর ও স্তরের গুরুত্ব। কোন স্তরে মেঘ, বৃষ্টিপাত, কুয়াশা, ঝড়, শিশির, তুষারপাত এবং মানুষ ও প্রাণীর বসবাসের জন্য উপযোগী, তার বিস্তারিত বর্ণনা।
এছাড়া শিল্পীর পিতা শিল্পীকে বলল, বায়ুমন্ডলের সাথে বারিমন্ডলের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
ক. অউই-এর পূর্ণরূপ কী?
খ. ওচঈঈ-এর তথ্য অনুসারে ২০৩০ সালের পর এশিয়ার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত মন্ডলের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত মন্ডলের যে স্তরের কথা বলা হয়েছে, তার বৈশিষ্ট্য নিরূপণ কর।
উত্তর:
ক. অউই-এর পূর্ণরূপ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
খ. ওচঈঈ অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের তথ্য অনুসারে ২০৩০ সালের পর নদীর প্রবাহ নাটকীয়ভাবে কমে যাবে।
ফলে এশিয়ায় পানির স্বল্পতা দেখা দেবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাবে ঘন ঘন বন্যা, ঝড়, অনাবৃষ্টি এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। যা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে অনুভূত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।
গ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত মন্ডলটি হলো বায়ুমন্ডল। নিচে বায়ুমন্ডলের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলো :
১. বায়ুমন্ডল ছাড়া যেমন কোনো শব্দতরঙ্গ স্থানান্তরিত হয় না, তেমনি ভূপৃষ্ঠ থেকে পাঠানো বেতার তরঙ্গ আয়নমন্ডলে বাধা পেয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসে।
২. ট্রপোমন্ডল ছাড়া কোনো আবহাওয়ারও সৃষ্টি হতো না, বরফ জমত না; মেঘ, বৃষ্টি, কুয়াশা, শিশির, তুষার, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদির সৃষ্টি হতো না।
৩. ওজোন স্তর না থাকলে সূর্য থেকে মারাত্মক অতিবেগুনি রশ্মি বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে প্রাণিকুল বিনষ্ট করত।
৪. বায়ুমন্ডলের স্তর না থাকলে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব থাকত না।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত মন্ডলটির নাম হলো ট্রপোমন্ডল। নিচে ট্রপোমন্ডলের বৈশিষ্ট্যগুলো নিরূপণ করা হলো :
১. ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুর ঘনত্ব কমতে থাকে, সাথে সাথে কমতে থাকে উষ্ণতা। প্রতি ১,০০০ মিটার উচ্চতায় সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায়।
২. উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যায়।
৩. নিচের দিকে বাতাসের জলীয়বাষ্প বেশি থাকে।
৪. ধূলিকণার অবস্থানের ফলে সমগ্র বায়ুমন্ডলের ওজনের প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগ এই স্তর বহন করে।
৫. যে উচ্চতায় তাপমাত্রা বন্ধ হয়ে যায় তাকে ট্রপো বিরতি বলে।
এখানে তাপমাত্রা ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে হতে পারে।
৫. নিচের ছকটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. আয়নমন্ডল কাকে বলে?
খ. বায়ুমন্ডল কী কী উপাদান দ্বারা গঠিত?
গ. ই স্তরটি কীভাবে অতিবেগুনি রশ্মি, জেটবিমান এর সাথে জড়িত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ঈ ও উ স্তরের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
উত্তর:
ক. তাপমন্ডলের নিম্ন অংশকে আয়নমন্ডল বলে।
খ. বায়ুমন্ডল প্রধানত তিন প্রকার উপাদান দ্বারা গঠিত। যেমন : বিভিন্ন প্রকার গ্যাস, জলীয়বাষ্প এবং ধূলিকণা ও কণিকা। বায়ুমন্ডলের নানা প্রকার গ্যাসের মধ্যে আছে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, আরগন, কার্বন
ডাইঅক্সাইড এবং অন্যান্য গ্যাস (নিয়ন, হিলিয়াম, ক্রিপটন, জেনন, ওজোন ও নাইট্রাস অক্সাইড)। বায়ুমন্ডলে আয়তনের দিক থেকে নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন এ দুটি গ্যাস একত্রে শতকরা ৯৮.৭৩ ভাগ এবং
বাকি সবগুলো শতকরা ১.২৭ ভাগ।
পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়