দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ

প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
প্রশ্ন: সংকেত ভূত্বক গঠনকারী উপাদান ক শিলা খ খনিজ ক. সুনামি কী? খ. ভূমিরূপের পরিবর্তনে হিমবাহের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর। গ. 'ক' ও 'খ'-এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর। ঘ. 'ক'-এর যে ভাগটি পৃথিবীর প্রথম পর্যায়ে সৃষ্ট তার বর্ণনা দাও। উত্তর: ক. সুনামি হলো পানির এক মারাত্মক ঢেউ, যা সমুদ্রের মধ্যে বা বিশাল হ্রদে ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্নু্যৎপাতের কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে। খ. হিমবাহের দ্বারা ভূপৃষ্ঠের কোনো কোনো অঞ্চল ব্যাপকভাবে ক্ষয় হয়ে থাকে। হিমবাহের নিচে নামার সময় এর নিচের প্রস্তরখন্ড পর্বতগাত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অনেক দূরে গিয়ে পতিত হয়। পর্বতগাত্রের মধ্যে যদি ছিদ্র থাকে তাহলে তার ভিতর পানি প্রবেশ করে বরফে পরিণত হয়ে প্রস্তরগুলোকে আলগা করে দেয়। ফলে হিমবাহের চাপে এটি পর্বতগাত্র থেকে সহজেই পৃথক হয়ে যায়। এই হিমবাহ অনেকদিন ধরে ধীরে ধীরে ক্ষয় হয় বলে এটি ভূপৃষ্ঠের ধীর পরিবর্তনের একটি উদাহরণ। গ. 'ক' হলো শিলা ও 'খ' হলো খনিজ। নিচে শিলা ও খনিজের পার্থক্য নির্ণয় করা হলো : শিলা খনিজ ১. শিলা এক বা একাধিক খনিজ পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। ১. খনিজ এক বা একাধিক মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। ২. শিলা অসমসত্ত্ব পদার্থ। ২. খনিজ সমসত্ত্ব অজৈব পদার্থ। ৩. শিলা কঠিন হলেও স্ফটিকাকার হয় না। ৩. খনিজ কঠিন ও স্ফটিকাকার হয়। ৪. শিলার কোনো রাসায়নিক সংকেত নেই। ৪. খনিজের নির্দিষ্ট রাসায়নিক সংকেত আছে। ৫. শিলার ধর্ম এর গঠনকারী খনিজ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ৫. খনিজের ধর্ম এর গঠনকারী মৌলের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ঘ. 'ক' হলো শিলা। গঠনপ্রণালি অনুসারে শিলা তিন ভাগে বিভক্ত। যথা : আগ্নেয় শিলা, পাললিক শিলা ও রূপান্তরিত শিলা। এর মধ্যে আগ্নেয় শিলা পৃথিবীর প্রথম পর্যায়ে সৃষ্ট। নিচে আগ্নেয় শিলার বর্ণনা প্রদান করা হলো : জন্মের প্রথমে পৃথিবী একটি উত্তপ্ত গ্যাসপিন্ড ছিল। এই গ্যাসপিন্ড ক্রমান্বয়ে তাপ বিকিরণ করে তরল হয়। পরে আরও তাপ বিকিরণ করে এর উপরিভাগ শীতল ও কঠিন আকার ধারণ করে। এভাবে গলিত অবস্থা থেকে ঘনীভূত বা কঠিন হয়ে যে শিলা গঠিত হয় তাকে আগ্নেয় শিলা বলে। আগ্নেয় শিলা পৃথিবীর প্রথম পর্যায়ে সৃষ্টি হয়। তাই এই শিলাকে প্রাথমিক শিলাও বলা হয়। প্রশ্ন: নওশীন তার খালাতো বোন আনিলাকে সঙ্গে নিয়ে রূপসা ব্রিজ দেখতে এসে প্রশ্ন করে, 'আচ্ছা বলতো রূপসা ব্রিজ কী দিয়ে তৈরি? 'উত্তরে আনিলা বলল', 'সিমেন্ট দিয়ে তৈরি'। পাল্টা প্রশ্নে নওশীন বলল, 'সিমেন্ট কী দিয়ে তৈরি'? উত্তরে আনিলা বলল', চুনাপাথর থেকে তৈরি এবং এটি এক প্রকার শিলা। ক. চুনাপাথর কোন ধরনের শিলা? খ. ধীর পরিবর্তন ব্যাখ্যা কর। গ. আনিলার উলিস্নখিত শিলার সঙ্গে রূপান্তরিত শিলার পার্থক্য নিরূপণ কর। ঘ. উক্ত শিলার গঠন প্রক্রিয়া ভূপষ্ঠে সর্বদা চলমান-এর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর। উত্তর: ক. চুনাপাথর জৈবিক উপায়ে গঠিত পাললিক শিলা। খ. প্রাকৃতিক শক্তি যেমন-সূর্যতাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, নদী, হিমবাহ প্রভৃতির দ্বারা ভূপৃষ্ঠের যে পরিবর্তন ধীরে ধীরে সংঘটিত হয় তাকে ধীর পরিবর্তন বলে। ধীর পরিবর্তন বিশাল এলাকাজুড়ে হতে থাকে। ধীর পরিবর্তনের ফলে ভূত্বকের উপরিস্থিত শিলা ভেঙে বিচূর্ণ হয়। এই শিলা অপসারিত হয়, আবার নতুন করে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়। নগ্নীভবন ও অবক্ষেপণ প্রক্রিয়ায় ধীর পরিবর্তন ক্রমাগত চলতে থাকে। গ. সিমেন্ট কারখানাতে কাঁচামাল হিসেবে চুনাপাথর ব্যবহৃত হয়। উদ্দীপকে আনিলা চুনাপাথরের উলেস্নখ করে। এটি আসলে জৈবিক উপায়ে গঠিত পাললিক শিলা। জৈবিক পাললিক শিলা ও রূপান্তরিত শিলার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা হলো : জৈবিক পাললিক শিলা রূপান্তরিত শিলা এ ধরনের শিলা জৈব পলি থেকে উৎপন্ন হয়। এ শিলা আগ্নেয় ও পাললিক শিলা থেকে উৎপন্ন হয়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে ভূগর্ভের উত্তাপে ও উপরের শিলাস্তরের চাপে জমাট বেঁধে স্তরে স্তরে এ শিলা গঠিত হয়। এটি ভূগর্ভস্থ উত্তাপ এবং চাপ ও রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে পরিবির্তিত হয়ে শিলায় পরিণত হয়। এ শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায়। এ শিলার মধ্যে জীবাশ্ম দেখা যায় না। এ শিলা অস্ফটিক, নরম ও হালকা, সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এ শিলা স্ফটিকযুক্ত, খুব কঠিন হয়। ঘ. উদ্দীপকের আনিলার উলিস্নখিত শিলাটি হলো চুনাপাথর। এটি পলল বা তলানি থেকে তৈরি হয়। তাই এটি পাললিক শিলা। ভূপৃষ্ঠে প্রতিনিয়ত পাললিক শিলার গঠন প্রক্রিয়া বিদ্যমান। আমরা জানি, ভূপৃষ্ঠ পরিবর্তনশীল এবং ধীর পরিবর্তনের একটি প্রক্রিয়া হচ্ছে নগ্নীভবন। যেখানে প্রতিনিয়ত ক্ষয়ীভবন এবং অপসারণ চলতে থাকে। এ অপসারণের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাসায়নিক ও যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবন প্রক্রিয়ায় বিচূর্ণীভূত পলিসমূহ কোনো জলাশয়, সাগর, হ্রদ কিংবা নিম্নভূমিতে সঞ্চিত হয়। সঞ্চিত পলিসমূহ উপরের স্তরের চাপে জমাট বেঁধে পাললিক শিলা গঠন করে। ভূপৃষ্ঠে এ ধরনের কার্য প্রতিনিয়ত ক্রিয়াশীল। তাই পাললিক শিলার গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলতে থাকে। এভাবে ভূপৃষ্ঠে চুনাপাথর গঠিত হয়েছে এবং পাললিক শিলার গঠন সর্বদা চলমান। প্রশ্ন: মৃদুল ও তার বাবা-মা গতরাতে আতঙ্কে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। তারা দেখে তাদের বাসার সবকিছু কাঁপছে। মৃদুল লক্ষ করে তাদের আশপাশে সবাই জেগে উঠেছে এবং ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরের উন্মুক্ত প্রান্তরের দিকে যাচ্ছে। ক. সুনামি শব্দটি কোন ভাষা থেকে উদ্ভূত? খ. আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর। গ. উক্ত ঘটনার অপ্রধান কারণগুলো ব্যাখ্যা কর। ঘ. উক্ত ঘটনা ফলাফল বিশ্লেষণ কর। উত্তর: ক. 'সুনামি' শব্দটি জাপানি ভাষা থেকে উদ্ভূত। খ. পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে। এই শিলার বৈশিষ্ট্য হলো : ১. স্ফটিকার, ২. অস্তরীভূত, ৩. কঠিন ও কমভঙ্গুর, ৪. জীবাশ্ম দেখা যায় না এবং ৫. অপেক্ষাকৃত ভারী। \হপরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়