বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র শিক্ষা ও সংস্কৃতিমূলক একটি প্রতিষ্ঠান। এই কেন্দ্রের সূচনা হয় ১৯৭৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর এবং এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ১৯৮০ সালের ৬ মার্চ। মানুষের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়েছে। এটি একটি জনকল্যাণমূলক ট্রাস্ট।
এখানকার মূল কার্যক্রম জাতীয়ভিত্তিক মানসিক উৎকর্ষ সাধন। এছাড়া বই পড়াকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রয়েছে পুরস্কারের ব্যবস্থা। বই পড়ার পাশাপাশি এখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, পঠিত গ্রন্থের ওপর আলোচনা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, অতিথি বক্তৃতা, সঙ্গীত শ্রবণ কর্মসূচি, মানুষ ও দেশ সম্বন্ধে জানার বিভিন্ন কর্মসূচি, পরিবেশ পরিচিতি, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ প্রভৃতি।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র গত ছেচলিস্নশ বছর ধরে সারাদেশের স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নানাবিধ উৎকর্ষ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। উৎকর্ষ কার্যক্রমের মধ্যে বইপড়া সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য কর্মসূচি। বর্তমানে সারাদেশে এই কর্মসূচির আওতায় প্রায় ১৭০০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২ লাখ ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী অন্তর্ভুক্ত আছে। বইপড়াকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে বিপুলসংখ্যক পুরস্কারের ব্যবস্থা।
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল মহানগরের ৩১৫টি স্কুলের প্রায় ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী বইপড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। এসব স্কুলের ১৮,৮২৬ জন ছাত্রছাত্রী মূল্যায়নপর্বে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। তাদের পুরস্কার প্রদানে গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় দেশের ৫টি মহানগরে বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল মহানগরের পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দুই দিনে ৮ পর্বে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তন থেকে ঢাকা মহানগরের ৬২টি স্কুলের ৫,১৩৭ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রতিটি স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। স্বাগত, শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও সেরা পাঠক এই শিরোনামে পুরস্কারগুলো প্রদান করা হয়।
ঢাকা মহানগরের ৬২টি স্কুলকে ৮টি পর্বে ভাগ করে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রথমদিন ২৫ অক্টোবর ৩২টি স্কুলের ২৫১৮ জন শিক্ষার্থীকে ৪টি পর্বে ভাগ করে পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাদের মধ্যে ২০৫৪ জন স্বাগত পুরস্কার, ৩৬৮ জন শুভেচ্ছা পুরস্কার, ৫৬ জন অভিনন্দন পুরস্কার ও ৪০ জন সেরা পাঠক পুরস্কার পেয়েছে।
দ্বিতীয়দিন ২৬ অক্টোবর ২৯টি স্কুলের ২৬১৯ জন শিক্ষার্থীকে ৪টি পর্বে ভাগ করে পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাদের মধ্যে ২১৭৭ জন স্বাগত পুরস্কার, ৩৯০ জন শুভেচ্ছা পুরস্কার, ২১ জন অভিনন্দন পুরস্কার ও ৩১ জন সেরা পাঠক পুরস্কার পেয়েছে।
প্রতি ১০ জন সেরা পাঠক বিজয়ীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ২০০০ টাকা সমমূল্যের বই পুরস্কার দেওয়া হয়। দু'দিনব্যাপী উৎসবের সার্বিক সহযোগিতা করেছে গ্রামীণফোন লিমিটেড।