বাংলাদেশের নদীবন্দর
প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
আরিচা ঘাট
আরিচা ঘাট একটি নৌবন্দর। এটি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় অবস্থিত। নব্বই দশকের আগ পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাথে একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিল এই আরিচা ঘাট। ভারত-পাকিস্তান বিভাগের আগেই যমুনা নদীর পাড়ে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এই আরিচা ঘাট দেশের অন্যতম বড় নৌ-বন্দর। কলকাতা-আসাম রুটের জাহাজ-স্টিমার এই ঘাটে ভিড়ত। এখানে ছিল বড় বড় পাটের গুদাম এবং আরিচায় গড়ে উঠেছিল জমজমাট ব্যবসা কেন্দ্র। ১৯৬৪ সালে ঢাকা-আরিচা সড়ক চালু হওয়ার পর আরিচা থেকে যমুনা পাড় হয়ে নগরবাড়ী এবং আরিচা থেকে যমুনা-পদ্মা পাড় হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটের সঙ্গে চালু করা হয় ফেরি সার্ভিস। সেই সঙ্গে আরিচা-নগরবাড়ী হয়ে উঠে উত্তরবঙ্গ এবং আরিচা-দৌলতদিয়া হয়ে উঠে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম প্রধান প্রবেশ পথ। স্বাধীনতার পর আরিচা ঘাট দেশের অন্যতম গুরত্বপূর্ণ নৌযোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠে এবং নৌবন্দরের স্বীকৃতি পায়।
১৯৬৩ সালের ৩১ মার্চ, একটি মাত্র গাড়ি আরিচা ঘাট থেকে নগরবাড়ি পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে যাত্রা শুরু এবং ভাড়া ছিল ৭৫ পয়সা। চালু অবস্থায় এখানে দুইটি ট্রাক টার্মিনাল ছিল, যার ধারণক্ষমতা ছিল এক হাজার ট্রাক। ৪৫-৫০ হাজার মানুষের পারাপারের মাধ্যম ছিল এই আরিচা ঘাট, হকার এবং কুলির সংখ্যা ছিল আড়াই হাজারের উপরে। আরিচা ঘাটের বিলুপ্তি
১৯৯৭ সালে যমুনা সেতু উদ্বোধনের এবং একই সাথে যমুনা নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ার মাধ্যমে আরিচা ঘাটের ব্যস্ততা অনেকখানি কমে যায়। সর্বশেষ ২০০২-এর ১৫ নভেম্বর শেষ দুইটা পস্নাটুন টাগবোটের মাধ্যমে টেনে ৯ কিলোমিটার ভাটিতে পাটুরিয়া নৌঘাটে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আরিচা নৌঘাট-এর বাণিজ্যিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ইলিশের জন্যে প্রসিদ্ধ আরিচা ঘাট। এটা ইলিশ মাছ শিকারের জন্যে 'প্রাইম স্পট'।
আশুগঞ্জ বন্দর
আশুগঞ্জ বন্দর বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ শহরে মেঘনা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। এই বন্দরটি ভারত ও বাংলাদেশের 'নৌ-ট্রানজিট চুক্তি'র অধীনে পূর্ব ভারত থেকে আসা মাল খালাস করে উত্তর পূর্ব ভারত পৌঁছে দেয় আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে। বন্দরটির জলের গভীরতা ৪ মিটার ও বর্ষার সময় গভীরতা বাড়ে। ২০০৯ সালে আশুগঞ্জ বন্দরকে আধুনিক ও পূর্ণাঙ্গ বন্দরের উদ্যোগ গ্রহণ করে। একে আন্তর্জাতিক মানের অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বন্দরটিতে একটি জেটি রয়েছে যা নদীতে চলাচলকারী ছোট জাহাজ বা নৌকার ক্ষেত্রে উপযোগী হলেও সমুদ্রগামী বড় জাহাজগুলোর ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। ফলে বন্দরটি মাল খালাসে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়া এখানে জলের গভীরতা কম।