প্রশ্ন : চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্ররা চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তারা একটি স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র তৈরির চেষ্টা করে। শিক্ষক প্রচলিত প্রতীক-চিহ্ন ও মানচিত্রে তথ্য উপস্থাপনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তাদের শিখিয়ে দেন।
ক. সাংকেতিক চিহ্ন কাকে বলে?
খ. কোনো দেশের প্রমাণ সময় কীভাবে স্থির করা হয়?
গ. ছাত্রদের ব্যবহৃত প্রতীক-চিহ্নসমূহ অঙ্কন করে দেখাও।
ঘ. শিক্ষক ছাত্রদের তথ্য উপস্থাপনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে কী বললেন ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :
ক. যেসব নির্দিষ্ট বিশেষ চিত্র কোনো কিছুর প্রতিকৃতি হিসেবে মানচিত্র তৈরি করার সময় ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে সাংকেতিক চিহ্ন বলে।
খ. কোনো একটি দেশের মধ্যভাগের দ্রাঘিমারেখা অনুযায়ী যে সময় নির্ধারণ করা হয় সে সময়কে ঐ দেশের প্রমাণ সময় ধরা হয়। যেমন বাংলাদেশের ঠিক মাঝখান দিয়ে ৯০ক্ক দ্রাঘিমারেখা অতিক্রম করেছে। এজন্য ৯০ক্ক দ্রাঘিমার স্থানীয় সময়কে বাংলাদেশের প্রমাণ সময় ধরে কাজ করা হয়। আমাদের এখানে প্রমাণ সময় তাই গ্রিনিচ সময় থেকে ৬ ঘণ্টা এগিয়ে। দেশের আয়তনের ওপর ভিত্তি করে প্রমাণ সময় একাধিক হতে পারে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে ৪টি এবং কানাডাতে ৫টি প্রমাণ সময় রয়েছে।
ছাত্ররা মানচিত্র তৈরিতে প্রচলিত প্রতীক-চিহ্নসমূহ ব্যবহার করবে। চিত্র : মানচিত্রে প্রচলিত প্রতীক চি?হ্নসমূহ
ঘ. উদ্দীপকে শিক্ষক ছাত্রদের মানচিত্রে তথ্য উপস্থাপনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে বললেন। সুতরাং শিক্ষক তাদের শিরোনাম উত্তর দিক, স্কেল, সূচক ও তথ্য উপাত্ত সম্পর্কে বললেন।
১. শিরোনাম : প্রত্যেক মানচিত্রেরই একটি শিরোনাম থাকে। এটি কোনো দেশের বা কোনো অঞ্চলের কিসের মানচিত্র এতে তা উলেস্নখ থাকে। যেমন : বাংলাদেশের রাজনৈতিক মানচিত্র। প্রতিটি মানচিত্র তৈরির সময় এতে একটি শিরোনাম দিতে হবে।
২. স্কেল : কোনো অঞ্চলের মানচিত্র তৈরির সময় এর আয়তনকে কমিয়ে ক্ষুদ্র করে আঁকতে হয়। একে স্কেল অনুসারে আঁকা বলে। স্কেল থেকে বোঝা যায় কোন আয়তনকে কতটুকু কমানো হয়েছে। স্কেল যত ছোট হবে মানচিত্রে তত বেশি আয়তন দেখানো যাবে। মানচিত্রে যদি ১ : ১০০,০০০ লেখা থাকে তাহলে বুঝতে হবে মানচিত্রে ১ একক ভূমির ১০০,০০০ এককের সমান। আবার স্কেল এঁকে দেখানো হয় যেমন মানচিত্রে এক ইঞ্চি সমান ভূমিতে কত মাইল বা এক সেন্টিমিটার সমান কত কিলোমিটার।
৩. সূচক : মানচিত্রে কোন প্রতীক দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে সূচক তা নির্দেশ করে। প্রতিটি মানচিত্রেই প্রতীক ও এদের সূচক উলেস্নখ করতে হবে।
৪. তথ্য উপাত্ত : সব মানচিত্র তথ্য বা উপাত্তের ভিত্তিতে তৈরি হয়। এজন্য তথ্যের উৎস মার্জিন বা মার্জিনের বাইরে দেওয়া প্রয়োজন।
প্রশ্ন : একরাম সাহেব ৭০ক্ক৪৫্ভ দ্রাঘিমায় অবস্থিত একটি দেশের 'ক' শহর থেকে বিমানযোগ ১৫ক্ক১৫্ভ দ্রাঘিমায় অবস্থিত 'খ' শহরের উদ্দেশে রওনা দেন। 'খ' শহরের বিমানবন্দরের ঘড়িতে দেখল সন্ধ্যা ৭টা বাজে, যা একই দেশের 'গ' শহরের স্থানীয় সময় থেকে ভিন্ন।
ক. প্রতি ডিগ্রি দ্রাঘিমার জন্য সময়ের পার্থক্য কত?
খ. বাংলাদেশের পশ্চিমের দেশগুলোতে কেন পরে সকাল হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. 'ক' স্থানের সকাল ৭টা হলে 'খ' স্থানের স্থানীয় সময় কত?
ঘ. একরাম সাহেব বিমানবন্দরের ঘড়িতে যে সময় দেখেন তা 'খ' স্থানের কোন সময় থেকে ভিন্ন বর্ণনা কর।
উত্তর :
ক. প্রতি ডিগ্রি দ্রাঘিমার জন্য সময়ের পার্থক্য ৪ মিনিট।
খ. পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করে। এ কারণে বাংলাদেশের পশ্চিমের দেশগুলোতে পরে সকাল হয়। দ্রাঘিমা রেখার ওপর সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে সময় নির্ধারণ করা হয়। এজন্যই পূর্ব দিকের স্থানগুলোতে আগে দিন হয় এবং পশ্চিম দিকের স্থানগুলোতে পরে দিন হয়। তাই বাংলাদেশের পশ্চিমের দেশগুলোতে পরে সকাল হয়।
গ. উদ্দীপকের 'ক' ও 'খ' শহর দুটি দ্রাঘিমার পার্থক্য = ৭০ক্ক৪৫্ভ - ১৫ক্ক১৫্ভ = ৫৫ক্ক৩০্ভ
আমরা জানি,
প্রতি ১ক্ক দ্রাঘিমার জন্য সময়ের পার্থক্য ৪ মিনিট এবং প্রতি ১্ভ এর জন্য সময়ের পার্থক্য ৪ সেকেন্ড।
সুতরাং
৫৫ক্ক৩০্ভ এর জন্য সময়ের পার্থক্য হবে-
= (৫৫ ক্ম ৪) মিনিট + (৩০ ক্ম ৪) সেকেন্ড
= ২২০ মিনিট + ১২০ সেকেন্ড
= ২২০ মিনিট + ২ মিনিট
= ২২২ মিনিট
= ৩ ঘণ্টা ৪২ মিনিট
'ক' শহরের দ্রাঘিমা থেকে 'খ' শহরের দ্রাঘিমার মান কম। সেহেতু 'খ' শহরটি 'ক' শহরের পশ্চিমে অবস্থিত।
'খ' শহরের স্থানীয় সময় = সকাল ৭টা - ৩ ঘণ্টা ৪২ মিনিট
= ৩টা ১৮ মিনিট
= ভোর ৩টা ১৮ মিনিট
'ক' স্থানে সকাল ৭টায় 'খ' শহরের স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ১৮ মিনিট।
ঘ. একরাম সাহেব বিমানবন্দরের ঘড়িতে যে সময় দেখেন তা 'খ' শহরের প্রমাণ সময় অর্থাৎ উক্ত দেশের প্রমাণ সময় যা ঐ দেশের 'গ' শহরের স্থানীয় সময় থেকে ভিন্ন। দ্রাঘিমারেখার ওপর সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে স্থানীয় সময় নির্ধারণ করা হয়। মধ্যা?েহ্ন সূর্যের অবস্থানকে সেই স্থানের দুপুর ১২টা ধরে স্থানীয় সময় নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত একটি বড় দেশের মধ্যে সময়ের গণনার বিভ্রাট হয়। এই সময়ের বিভ্রাট থেকে বাঁচার জন্য প্রত্যেক দেশে একটি প্রমাণ সময় নির্ধারণ করা হয়। যা দেশের কোনো স্থানের স্থানীয় সময় থেকে ভিন্ন হতে পারে। যেমন উদ্দীপকে 'খ' ও 'গ' শহরের ক্ষেত্রে হয়েছে। সাধারণত কোনো একটি দেশের মধ্যভাগের দ্রাঘিমারেখা অনুযায়ী যে সময় নির্ধারণ করা হয় সে সময়কে ঐ দেশের প্রমাণ সময় ধরা হয়। দেশের আয়তনের ওপর ভিত্তি করে প্রমাণ সময় একাধিক হতে পারে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ৪টি এবং কানাডাতে ৫টি প্রমাণ সময় রয়েছে। এসব দেশ প্রশাসনিক ও অন্যান্য কাজের সুবিধার জন্য একাধিক প্রমাণ সময় ব্যবহার করে। একেকটা সেক্টরের কাজের সুবিধার জন্য তারা তাদের প্রমাণ সময় ঠিক করে থাকে।
প্রশ্ন : ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের রিপোর্টের কাজে একটি স্থানে গেল। তারা একটি যন্ত্র দিয়ে ভূউপগ্রহ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে ভিন্ন একটি ব্যবস্থার সাহায্যে তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে।
ক. প্রমাণ সময় কাকে বলে?
খ. কেন বিভিন্ন দেশ একাধিক প্রমাণ সময় ব্যবহার করে?
গ. ছাত্ররা যে যন্ত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তার কার্যনীতি, সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে লিখ।
ঘ. যে ব্যবস্থার সাহায্যে শিক্ষার্থীরা তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করেছে তা নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :
ক. সাধারণত কোনো একটি দেশের মধ্যভাগের দ্রাঘিমারেখা অনুযায়ী যে সময় নির্ধারণ করা হয় তাকে ঐ দেশের প্রমাণ সময় বলে।
খ. সময়ের বিভ্রাট থেকে বাঁচার জন্য প্রত্যেক দেশ একটি প্রমাণ সময় নির্ধারণ করে। সাধারণত কোনো একটি দেশের মধ্যভাগের দ্রাঘিমারেখা অনুযায়ী প্রমাণ সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পূর্ব-পশ্চিমে বিকৃত দেশের আয়তনের ওপর ভিত্তি করে প্রমাণ সময় একাধিক হতে পারে। দেশগুলো প্রশাসনিক ও অন্যান্য কাজের সুবিধার জন্য একাধিক প্রমাণ সময় ব্যবহার করছে।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়