মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১

ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন

হাবিবুর রহমান বাপ্পা, সহকারী শিক্ষক, শহীদ বীর-উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট
  ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন

আকাশ কত বড়

প্রশ্ন : গ্রহ কী?

উত্তর : সৌরজগতের যেসব জ্যোতিষ্ক সূর্যের চারদিকে নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট পথে চলাচল করে তাকে গ্রহ বলে। সৌরজগতের মোট গ্রহ হচ্ছে ৮টি। যেমন : বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন।

প্রশ্ন : উপগ্রহ কী?

উত্তর : যেসব বস্তু গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘুরে তাদেরকে উপগ্রহ বলে। যেমন : চাঁদ। এর নিজস্ব কোনো আলো নেই। সূর্য থেকে এটি আলো পায়।

প্রশ্ন : নক্ষত্র কী?

উত্তর : যেসব জ্যোতিষ্কের নিজস্ব আলো আছে তাদেরকে নক্ষত্র বলে।যেমন: সূর্য, তারা।

প্রশ্ন : গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ কী?

উত্তর : কতগুলো গ্রহ-উপগ্রহ এবং নক্ষত্র নিয়ে যেমন একটি সৌরজগত গঠিত হয়ে থাকে তেমনি এরকম অসংখ্য সৌরজগত, ধূলিকনা, পস্নাসমা এবং প্রচুর পরিমাণে অদৃশ্য বস্তু নিয়ে ছায়াপথ বা গ্যালাক্সি গঠিত হয়।

প্রশ্ন : আকাশে কি কি দেখা যায়?

উত্তর : দিনের আকাশে আমরা যা যা দেখতে পাই তা হলো :-

আকাশ, সূর্য, মেঘ, বৃষ্টি, পাখি, রকেট ইত্যাদি।

রাতের আকাশে আমরা আকাশে যা দেখতে পাই :-

আকাশ, চাঁদ, তারা/নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, গ্রহ, উপগ্রহ ইত্যাদি।

প্রশ্ন : বিগ ব্যাং তত্ত্ব কি বৈজ্ঞানিক গবেষনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে? নাকি শুধু মানুষের কল্পনা?

উত্তর : বিগ ব্যাং তত্ত্ব বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

আজ থেকে ১৪ বিলিয়ন (এক হাজার চারশত কোটি) বছর আগে পুরো এই বিশাল বিশ্বব্রহ্মান্ড একটি বিন্দুতে ছিল। অবিশ্বাস্য একটি বিস্ফোরণের সেই বিন্দুটি প্রসারিত হয়ে বর্তমান বিশ্বব্রহ্মান্ডের রূপ নিয়েছে। সেই বিস্ফোরণটির নাম বিগ ব্যাং।

প্রশ্ন : মহাবিশ্বের সৃষ্টির পর নক্ষত্রের জন্ম কী করে হলো?

উত্তর : বিগ ব্যাংয়ের পর বিশ্বব্রহ্মান্ডে প্রথমে ছিল শক্তি এবং তারপর তৈরি হয়েছে হাইড্রোজেন। এই হাইড্রোজেন কোথাও কোথাও একত্রিত হয়ে একটা গ্যাস পিন্ডের আকার নেয়, এই গ্যাস পিন্ডকে বলে নেবুলা। সেই নেবুলাতে যথেষ্ট গ্যাস থাকে এবং একপর্যায়ে মহাকর্ষ বলের কারণে যখন সংকুচিত হতে থাকে তখন তার তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তখন হাইড্রোজেন একটি অন্যটার সাথে নিউক্লিয়ার ফিউসান নামে একটি বিক্রিয়া করে প্রচুর শক্তি জন্ম দিতে থাকে। এর ফলে নক্ষত্র থেকে আলো বের হতে থাকে এবং আমরা বলি নক্ষত্রের জন্ম হয়েছে।

প্রশ্ন : নক্ষত্রের জ্বালানিও কি এভাবে ফুরিয়ে যেতে পারে?

উত্তর : হ্যা, নক্ষত্রের মধ্যে থাকে হাইড্রোজেন গ্যাস। হাইড্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ কমে গেলে নক্ষত্রের জ্বালানিও ফুরিয়ে যাবে।

প্রশ্ন : নক্ষত্রের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে তার আসলে কী হয়?

উত্তর : যখন হাইড্রোজেন জ্বালানি শেষ হয়ে যায় তখন নক্ষত্র ফুলে ফেঁপে নিষ্প্রভ হয়ে মৃতু্যবরণ করে।

আমাদের জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

বিজ্ঞান অর্থ বিশেষ জ্ঞান। ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভান্ডারের নাম বিজ্ঞান। আর বিজ্ঞানের এই আবিষ্কারের আবিষ্কারকে মানুষের প্রায়োগিক কাজে লাগানোর উপায়কে প্রযুক্তি বলে।

প্রশ্ন : সত্যিকারের বিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন কোন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়?

উত্তর : অনুসন্ধানী মন, পরিশ্রমী, স্বার্থপর হয় না।

প্রশ্ন : চাইলেই কি যে কেউ বিজ্ঞানী হতে পারে?

উত্তর : হ্যা হতে পারবে। যদি বৈজ্ঞানিক মন থাকে।

প্রশ্ন : বৈজ্ঞানিক গবেষণা করতে আধুনিক ল্যাবরেটরি বা যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হয়?

উত্তর : বৈজ্ঞানিক গবেষণা করতে সবসময়ই অনেক আধুনিক ল্যবরেটরি বা যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না। যেমন : মাদাম কুরি পদার্থ বিজ্ঞান এবং রসায়নে দুইবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন কিন্তু তার ল্যাবরেটরিটা ছিল একেবারেই সাদামাটা। অরেকজন বিজ্ঞানী ছিলেন হরিপদ কাপালী। উন্নতমানের যন্ত্রপাতি না থাকা সত্ত্বেও ভালো জাতের ধান উদ্ভাবনে অবদান রাখেন।

প্রশ্ন : স্যার আইজাক নিউটন ও হরিপদ কাপালীর বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রক্রিয়ার মধ্যে মিল কী কী?

উত্তর : তারা প্রত্যেকেই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ধাপসমূহ মেনেছে। যেমন :

১. একটি সমস্যা বা প্রশ্ন ঠিক করা যার সমাধান বা উত্তর বের করতে হবে।

২. এ সম্পর্কে যা কিছু গবেষণা হয়েছে তা জেনে নেয়া।

৩. প্রশ্নটির একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দাঁড় করানো।

৪. সম্ভাব্য ব্যাখ্যাটি সত্যি কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখা।

৫. পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া।

৬. সবাইকে ধারণাটি জানিয়ে দেওয়া।

বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ধাপসমূহ

বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালী এই ধাপে যা করেছেন

১. একটি সমস্যা বা প্রশ্ন ঠিক করা যার সমাধান বা উত্তর বের করতে হবে।

ধান ক্ষেতের কিছু ধান গাছ তুলনামূলক ভাবে বড়। কেন বড় হয় এবং ফলন বেশি হয়?

২. এ সম্পর্কে যা কিছু গবেষণা হয়েছে তা জেনে নেয়া।

বিভিন্ন ধানের গবেষণা সম্পর্কে ধারণা রেখেছে।

৩. প্রশ্নটির একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দাঁড় করানো।

এই ধানটি বেশি বড় এবং ফলন বেশি দিবে।

৪. সম্ভাব্য ব্যাখ্যাটি সত্যি কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখা।

যে ধান গুলো ভালো সেগুলো অন্য ধানের সাথে না মিশিয়ে আলাদা করে ফেললেন। বীজগুলো আলাদা করে সেগুলো আবার নতুন করে লাগালেন। এর ফলে সেগুলো বেশ বড় এবং উচ্চ ফলনশীল।

৫. পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া।

আসলেই এই ধানের জাতটি উচ্চ ফলনশীল।

৬. সবাইকে ধারণাটি জানিয়ে দেওয়া।

বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালীর এই আবিষ্কারের কথা সবাই জানার পরি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধানগুলোকে নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছিল।

\হপরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে