সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

হাবিবুর রহমান বাপ্পা, সহকারী শিক্ষক, শহীদ বীর-উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট
ত্রয়োদশ অধ্যায় ৫. প্রাকৃতিক দুর্যোগ :খরা পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয় : শুষ্ক আবহাওয়া যুক্ত এলাকায় খরা দেখা যায়। তাই আফ্রিকা মহাদেশ সবথেকে বেশি খরা প্রবণ। এছাড়াও আফগানিস্তান, চীন, পাকিস্তান, ইরান, নেপাল, বাংলাদেশ, ভারতসহ আরো অনেক দেশ। যে কারণে দুর্যোগ সংঘটিত হয় বলে তোমাদের মনে হয়েছে : দীর্ঘদিন শুষ্ক আবহাওয়া থাকা এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া খরার প্রধান কারণ। অপর একটি কারণ গভীর নলকূপের সাহায্যে ভূগর্ভের পানির মাত্রাতিরিক্ত উত্তোলনের ফলে পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়া ৬. প্রাকৃতিক দুর্যোগ :ভূমিকম্প পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয় : প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, ভূমধ্যসাগরীয়-হিমালয় অংশ ও মধ্য আটলান্টিক অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পপ্রবণ শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- চীন, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, তুরস্ক, জাপান ইত্যাদি। যে কারণে দুর্যোগ সংঘটিত হয় বলে তোমাদের মনে হয়েছে : ভূ-অভ্যন্তরের টেকটোনিক পেস্নট স্থানান্তরিত হলে ভূমিকম্প হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ :অগ্নু্যৎপাত পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয় : আমেরিকা, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, চিলি, মেক্সিকো, আইসল্যান্ড, কানাডা, কেনিয়া ইত্যাদি দেশে দেখা যায়। যে কারণে দুর্যোগ সংঘটিত হয় বলে তোমাদের মনে হয়েছে : ভূ-অভ্যন্তরের টেকটোনিক পেস্নট যখন ভাসতে ভাসতে ধাক্কা খেয়ে একটি অপরটির ওপরে উঠে যায়, তখন খুব জোরে চাপ পড়ার ফলে ও তাপ সৃষ্টি হওয়ায় ভূ-অভ্যন্তরের তরল পদার্থ বের হয়ে আসে তখন তার নাম হয় লাভা, তারপর অনেক লাভা-উদগীরণ হওয়ার ফলে তৈরি হয় আগ্নেয়গিরির অগ্নু্যৎপাতের। ৭. প্রাকৃতিক দুর্যোগ : সুনামি পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয় : বিভিন্ন মহাসাগরে যেখানে ভূমিকম্প হয় সেসব মহাসাগরীয় অঞ্চলে সুনামি হয়। যেমন: জাপান, চিলি, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, ভারত ইত্যাদি। যে কারণে দুর্যোগ সংঘটিত হয় বলে তোমাদের মনে হয়েছে: সমুদ্র তলদেশে প্রবল ভূমিকম্পের ফলে সুনামি হয়। দুর্যোগের মোকাবিলায় করণীয় : ১. দুর্যোগের সময় কোন এলাকার লোক কোন আশয়কেন্দ্রে যাবে, গরু মহিষাদি কোথায় থাকবে আগে ঠিক করে এবং জায়গা চিনে রাখতে হবে। ২. বাড়িতে, গ্রামে, রাস্তায় ও বাঁধের উপর গাছ লাগাতে হবে। ৩. যথাসম্ভব উঁচু স্থানে শক্ত করে ঘর তৈরি করতে হবে। ৪. উঁচু জায়গার টিউবওয়েল স্থাপন করতে হবে। ৬. বাড়িতে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম (ব্যান্ডেজ, ডেটল প্রভৃতি) রাখতে হবে। ৭. আশ্রয়কেন্দ্রে বা অন্য আশ্রয়ে যাবার সময় কী কী জরুরি জিনিস সাথে নেওয়া যাবে এবং কী কী জিনিস মাটিতে পুঁতে রাখা হবে তা ঠিক করে সে অনুসারে প্রস্তুতি নিতে হবে। দুর্যোগের নাম এবং সজীব ও অজীব উপাদানের উপর প্রভাবসমূহ লিখ। উত্তর : ১. প্রাকৃতিক দুর্যোগ : অগ্নু্যৎপাত সজীব ও অজীব উপাদানের উপর প্রভাব ১. অনেক ক্ষেত্রে মাটির উর্বরতাশক্তি পরিবর্তিত হয়ে যায়, যার ফলে সেখানে নতুন ধরনের উদ্ভিদ কিংবা ফসল জন্মায়। ২. লাভার গতিপথে নদী থাকলে তার গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। ৩. আগ্নেয়গিরির সঙ্কো যেসব বিষান্ত গ্যাস বের হয়ে আসে, তা মানুষ এবং অন্যান্য জীব-জন্তুর জন্য ক্ষতিকর। ৪. প্রচন্ড উত্তাপে আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বন থাকলে তাতে আগুন লেগে যেতে পারে। ২. প্রাকৃতিক দুর্যোগ : ভূমিকম্প সজীব ও অজীব উপাদানের উপর প্রভাব ১. ভূমিকম্পের ফলে ভূমিধস হয়, এমনকি নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায়। ২. অনেক ক্ষেত্রে ভূমিকম্পের সময় কোনো স্থানের মাটি উঁচু হয়ে পাহাড়-টিলা গঠন করতে পারে। ৩. অনেক স্থানে মাটি ফেটে গিয়ে অথবা নিচের দিকে দেবে গিয়ে জলাভূমিও তৈরি করতে পারে। ৪. প্রবল মাত্রার ভূমিকম্পে মানুষসহ বিভিন্ন পশুপাখির প্রাণহানি ঘটে এবং সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। ৩. প্রাকৃতিক দুর্যোগ : সুনামি সজীব ও অজীব উপাদানের উপর প্রভাব ১. সুনামির ফলে ভবন, সেতু এবং অন্যান্য অবকাঠামোর উলেস্নখযোগ্য ক্ষতিসাধন হয়। এর ফলে মানুষ ২. বাস্তুচু্যত হয় এবং সম্পত্তির ক্ষতিসাধন হয়। ৩. নোনা পানির সাথে মিঠা পানির উৎসগুলোকে দূষিত করে ৪. সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতিসাধন ঘটায়। ৪. প্রাকৃতিক দুর্যোগ : ঘূর্ণিঝড় সজীব ও অজীব উপাদানের উপর প্রভাব ১. প্রবল বাতাস, ঝড়বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ২. ভবন, রাস্তা এবং অন্যান্য অবকাঠামো ধসে পড়ার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। ৩. বন্যার কারণে পানির উৎস দূষিত হয়, যা রোগের বিস্তার ঘটাতে পারে। ৪. ভারী বৃষ্টিপাত এবং শক্তিশালী বাতাসের কারণে ভূমিধস এবং মাটি ক্ষয় হয়। পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়