বাংলাদেশের হাওড়

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
নিকলী হাওড়
নদীমাতৃক বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার জলাধার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্যতম হলো হাওড়। বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুসারে দেশে মোট ৪১৪টি হাওড় রয়েছে। তবে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবানুসারে হাওড়ের সংখ্যা ৪২৩টি। নিকলী হাওড় নিকলী হাওড় বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি হাওড়। এর নাম এসেছে নিকলী উপজেলা থেকে, যেখান থেকে হাওড়টির উৎপত্তি হয়েছে। নিকলী ছাড়াও এই হাওড়ের পরিধি পার্শ্ববর্তী মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি রাজধানী ঢাকা থেকে ১১০ কি.মি. দূরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ মিঠাপানির জলাভূমি ও জনপ্রিয় একটি পর্যটন কেন্দ্র। ঢাকার সঙ্গে সহজ সড়ক ও রেল যোগাযোগ এই হাওড়ের পর্যটন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। নিকলীতে একাধিক আবাসিক হোটেল গড়ে উঠায় পর্যটকরা এখন একাধিক দিন হাওড় ভ্রমণের সুবিধা পাচ্ছে। বর্ষায় এই হাওড় যখন পানি দ্বারা পূর্ণ হয় তখন ব্যাপক হারে পর্যটক বৃদ্ধি পায়। টাঙ্গুয়ার হাওড় টাঙ্গুয়ার হাওড় বাংলাদেশের সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি হাওড়। প্রায় ১২৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এ হাওড় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি। স্থানীয় লোকজনের কাছে হাওড়টি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার স্থান হিসেবে পরিচিত, প্রথমটি সুন্দরবন। টাঙ্গুয়ার হাওড় সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলার মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। মেঘালয় পাহাড় থেকে ৩০টিরও বেশি ঝরা (ঝরনা) এসে মিশেছে এই হাওড়ে। দুই উপজেলার ১৮টি মৌজায় ৫১টি হাওড়ের সমন্বয়ে ১২,৬৬৫ হেক্টর এলাকা নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওড় জেলার সবচেয়ে বড় জলাভূমি। পানিবহুল মূল হাওড় ২৮ বর্গকিলোমিটার এবং বাকি অংশ বসতি ও কৃষিজমি। হাওড় এলাকার ভেতরে ও তীরে ৮৮টি গ্রাম আছে। একসময় গাছ-মাছ-পাখি আর প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের আধার ছিল এই হাওড়। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে ২০ জানুয়ারি এই হাওড়কে 'রামসার স্থান' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আইসিইউএন এই হাওড়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করছে। টাঙ্গুয়ার হাওড় বর্তমানে পর্যটকদের একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন শত শত পর্যটক শতাধিক নৌকা নিয়ে হাওড়জুড়ে ভেসে বেড়ান। অনেকে নৌকা নিয়ে হাওড়েই রাতযাপন করেন। এটি একদিকে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা তৈরি করলেও এটিকে হাওড়ে জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন অনেকে। নানারকম দেশি ও পরিযায়ী পাখি দেখতে শীত মৌসুমে টাঙ্গুয়ার হাওড়ে ভ্রমণে যান পাখিপ্রেমীরা।