সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন

প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

হাবিবুর রহমান বাপ্পা, সহকারী শিক্ষক, শহীদ বীর-উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট
একাদশ অধ্যায় প্রশ্ন : বাংলাদেশে ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া সম্ভাবনা আছে কি? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি লিখ। উত্তর : বাংলাদেশে রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ। এ বদ্বীপ বঙ্গীয় অববাহিকার এক বিরাট অঞ্চলজুড়ে রয়েছে, যা সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় ৩৫%। এই বদ্বীপ বিকাশের ইতিহাস গন্ডোয়ানাল্যান্ডের বিভাজন, ভারতীয় পেস্নটের বিচলন, ভারতীয় পেস্নটের সাথে বার্মা ও ইউরেশিয় পেস্নটের সংঘর্ষ, বিশাল পর্বতশ্রেণী হিমালয়ের সৃষ্টি, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদীপ্রণালীর বিকাশ, বিভিন্ন সময়ে সমূদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন এবং কোটি কোটি বছর ধরে ভূ-গাঠনিক ক্রিয়াকর্মের সঙ্গে ওতপ্রোত হয়ে আছে। বদ্বীপটির বিকাশ ভারতীয় পেস্নটের নিষ্ক্রিয় ডান প্রান্তে শুরু হয় যখন অবক্ষেপের হার খুব মন্থর ছিল। ভারতীয় পেস্নটের উত্তরমুখী সম্বারক ও ইউরোপিয় পেস্নটের সঙ্গে এর সংঘর্ষের কারণে বদ্বীপীয় অঞ্চলে বিপুল অবক্ষেপ স্তূপীকৃত হয়ে তিন স্তরে বিবর্তিত হয়েছে। বদ্বীপ গড়ে তোলার প্রক্রিয়া সেনোযোয়ক যুগের টারশিয়ারি ও কোয়াটারনারি আমলে খুবই সক্রিয় ছিল। ১৭০ মিলিয়ন বছর পূর্বে জুরাসিক যুগ ছিল পৃথিবীতে ডাইনোসরের বিচরণক্ষেত্র। ১২৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে গঠিত আমাদের বদ্বীপে তাই ডাইনোসরের ফসিল না পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু জুরাসিক যুগে আমাদের এ অংশের গন্ডোয়ানাল্যান্ড সমগ্র পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠের সাথে যুক্ত ছিল। তাই ডাইনোসরের ফসিল পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই, বলা যাবে না। প্রশ্ন : ট্রাইলো বাইট প্রাণী কত বছর আগে পৃথিবীতে ছিল? উত্তর : আনুমানিক ২৫ কোটি বছর আগে। প্রশ্ন :গলিত ম্যাগমা ঠান্ডা হয়ে তৈরি হয় এমন শিলার নাম কী? উত্তর : আগ্নেয়। প্রশ্ন :বাংলাদেশের পাহাড়ি ভূমিরূপ কোন শিলায় গঠিত? উত্তর : পাললিক শিলা। প্রশ্ন : বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি কিরূপ লিখ। উত্তর : বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতির অধিকাংশ পস্নাবন সমভূমি। এ ধরনের ভূমিরূপ পাললিক শিলায় গঠিত। এ ধরনের ভূমিরূপ পলির স্তর পড়ে গঠিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। বাংলাদেশের পাহাড়ি ভূমিরূপও পাললিক শিলায় গঠিত। কেননা ভঙ্গিল পর্বত শ্রেণির সমগোত্রীয় পাহাড়গুলো পাললিক শিলায় ভাঁজ পড়েই গঠিত হয়েছে। তাই বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতিতে পাললিক শিলা ব্যতীত অন্যান্য শিলা পাওয়া যায় না। তবে খনিজ হিসেবে কিছু কঠিন শিলা বাংলাদেশে পাওয়া যায়, যা মূলত রূপান্তরিত শিলা। দ্বাদশ অধ্যায় হজমের কারখানা বিভিন্ন কারখানায় কীভাবে কাজ হয় কখনো দেখেছ? কারখানায় বিভিন্ন কর্মী বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করে ধাপে ধাপে গোটা কাজটা সম্পন্ন করে। আমাদের শরীরের খাবার হজম করার জন্য যে পরিপাকতন্ত্র, সেখানেও একইভাবে খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে হজম শেষে বর্জ্য বের করে দেয়ার পুরো প্রক্রিয়াটা পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে, ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রশ্ন : জুস কারখানায় কীভাবে জুস তৈরি হয় তা সম্পর্কে জেনে নেই। উত্তর : ক.গাছ থেকে পাকা আম সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয় কারখানায়, সেখানে সেগুলোকে ধুয়ে বাছাই করা হয়। খ.এই দুই কাজ শেষে সেগুলো পেষণ মেশিনে দিয়ে পাল্প তৈরি করা হয়। গ.পাল্পের মধ্যে বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হয় জুস। এরপর বোতলজাত করে, লেবেলিং করার পর প্যাকেজিং করে আরেক দল মানুষ। ঘ. সবশেষে আরেকদল মানুষ প্যাকেজিং করে জুসগুলোকে কারখানা থেকে বের করে পাঠিয়ে দেয় দোকানে দোকানে। প্রশ্ন : আমাদের খাবার কি সরাসরি আমাদের দেহের কোষ কাজে লাগাতে পারে? উত্তর : আমরা যে সকল খাবার গ্রহণ করি সেগুলো কোনোটিই আমাদের কোনো কোষই সরাসরি কাজে লাগাতে পারে না। আমাদের গ্রহণ করা খাবারগুলোকে আমাদের কোষের গ্রহণ উপযোগী করতে হলে পরিপাক প্রক্রিয়া দরকার হয়। প্রশ্ন : আমরা মলত্যাগ করি কেন? উত্তর : আমাদের গ্রহণ করা খাবারের যে অপাচ্য অংশ হজম হয় না বা দেহের কাজে লাগে না তা অপ্রয়োজনীয় মল হিসেবে সঞ্চিত হয়, তাই আমরা মলত্যাগ করি। প্রশ্ন : খাবার খাওয়ার সময় আমাদের মুখে লালা আসে কেন? উত্তর : লালা আমাদের মুখগহ্বরে খাদ্য গ্রহণ, গলাধঃকরণ ও পরিপাকে সাহায্য করে, তাই খাওয়ার সময় আমাদের মুখে লালা আসে। প্রশ্ন : ভাত ও মাছের মধ্যে মুখগহ্বরে কোনটির আংশিক পরিপাক হয়? উত্তর : মুখগহ্‌বরে ভাতের আংশিক পরিপাক হয়, কারণ ভাত শর্করাজাতীয় খাদ্য কিন্তু মাহু আমিষজাতীয় খাদ্য। প্রশ্ন : বেশি খাবার খেলে কিছু সময়ের জন্য আমাদের পেট ফুলে থাকে কেন? উত্তর : আমাদের পেট বরাবর পাকস্থলী অবস্থিত। পাকস্থলীতে খাবার পরিপাকের পাশপাশি সাময়িকভাবে খাদ্য জমা থাকে। এজন্য বেশি খাবার খেলে পাকস্থলীতে জমা হওয়া খাবারের জন্য পেট ফুলে থাকে। প্রশ্ন : আমাদের অন্তের ঝিলিস্নতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে কী রোগ হবে? উত্তর : আমাদের অন্ত্রের ঝিলিস্নতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে ব্যাসিলারি আমাশয় হবে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়