বাংলাদেশের নদ-নদী
প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
ঢাকা বিভাগ
বালু নদী :বালু নদী বাংলাদেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের গাজীপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৪৪ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৭৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের উত্তর-পূর্ব এলাকা দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। এটি বেলাই বিল ও ঢাকার উত্তর-পূর্ব বিস্তীর্ণ জলাভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ডেমরার কাছে শীতলক্ষ্যা নদীতে গিয়ে পড়েছে। শীতলক্ষ্যার সাথে কাপাসিয়ার কাছে সুতি নদীর মাধ্যমেও এর একটা ক্ষীণ যোগাযোগ ছাড়াও টঙ্গী খালের মাধ্যমে তুরাগ নদীর এসে মিলিত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে বালু নদী শীতলক্ষ্যা ও তুরাগের পানি বহন করে। এই নদীর গুরুত্ব হচ্ছে, এটি স্থানীয় পানি নিষ্কাষন আর নৌ-পরিবহণ অব্যাহত রাখে। বালু নদীর অববাহিকায় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হলেও তীরবর্তী বা অববাহিকা এলাকা কয়েক ঘন্টার মধ্যে শুকিয়ে যায়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের সময়োচিত নদী ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের অভাবে বালু নদীটি বর্তমানে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। প্রচন্ড খরস্রোতা এই নদীটিতে প্রতি বছরের ৬/৭ মাসই পানিশূন্যতা বিরাজ করছে।
বংশী নদী :বংশী নদী বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে প্রবাহিত একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। নদীটি বাংলাদেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের জামালপুর, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৩৮ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৪৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বংশী নদী পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের শাখানদী। এর দৈর্ঘ্য মোট ২৩৮ কিলোমিটার। নদীটি জামালপুর জেলার শরীফপুর ইউনিয়ন অংশে প্রবাহিত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণে টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলা অতিক্রম করে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি সাভারের কর্ণপাড়া ও ব্যাংকটাউনের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আমিনবাজারে এসে তুরাগ নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। তুরাগ নদী আরো কিছুদূর প্রবাহিত হয়ে মিশেছে বুড়িগঙ্গায়। বংশী নদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৩৮ কিলোমিটার। এই নদী চারটি জেলা যথাক্রমে জামালপুর, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকা এবং ১১টি উপজেলা যথাক্রমে জামালপুর সদর, মধুপুর, ঘাটাইল, কালিহাতি, বাসাইল, মির্জাপুর, সখিপুর, কালিয়াকৈর, ধামরাই, সাভার ও মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলা এবং ৩২১টি মৌজার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এই নদীকে কেন্দ্র করে অনেক হাটবাজার, গঞ্জ, স্থাপনা গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী মসলিন কাপড় তৈরির ঢাকার ধামরাই এলাকা, টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়াঞ্চল ইত্যাদি। সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ এ নদীর তীরেই অবস্থিত। এখনো বর্ষা মৌসুমে ছোট ও মাঝারি নৌকায় মধুপুরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নৌপথে কলা, কাঁঠাল, আনারস ও নানা ধরনের তরকারি ভুয়াপুর, সরিষাবাড়ি, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় এ নদী পথ ব্যবহার পরিবহণ করে থাকে।